জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আম আদমি পার্টির জন্য একটি বড় ধাক্কা। গুজরাতে তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ ইসুদান গাধভি গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে খাম্বালিয়া আসন থেকে তার বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বী আয়ার মুলুভাই হরদাসভাই বেরার কাছে ১৯০০০ ভোটে হেরেছেন। জানা গিয়েছে, খাম্বালিয়া আসনে গাধভির থেকে, বিজেপির হরদাসভাই বেরা দশ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন। আপ রাজ্যের ১৮২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে এগিয়ে ছিল। ৪০ বছর বয়সী সাংবাদিক-রাজনীতিবিদ গাধভি মাত্র এক বছর আগে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০২১ সালের জুনে আপে যোগদান করেন তিনি। রাজ্যে ২৭ বছরের নিরবচ্ছিন্ন বিজেপি শাসনকে পরিবর্তনের জন্য আপের যে আহ্বান তাতে সাড়া দিয়ে দলে যোগ দেন তিনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তিনি দলের জাতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত হন এবং এই বছরের নভেম্বরে দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাকে আপের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন। সোশ্যাল মিডিয়া, এসএমএস এবং ইমেলের মাধ্যমে দলের কাছে তাদের মতামত জমা দিতে সাধারণ মানুষকে আবেদন জানিয়েছিলেন আপ নেতা কেজরিওয়াল। ৭০ শতাংশেরও বেশি উত্তরদাতা গাধভিকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখার পক্ষে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন।


এই নির্বাচনী প্রচারের সময়, কেজরিওয়াল এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান-এর সঙ্গে গাধভি দলের তারকা প্রচারক ছিলেন। প্রচারের সময়, গাধভি তার নিজেকে একজন সাধারণ কৃষকের ছেলে হিসেবে তুলে ধরেন। পাশাপাশি কৃষিজীবী সম্প্রদায়ের সমর্থন জয়ের জন্য আপের ‘বিজলি, পানি ও দাম’ (বিদ্যুৎ, জল এবং উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত মূল্য)-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যদিও গুজরাতের ভোটাররা রাজনীতি অথবা প্রশাসনে অভিজ্ঞতা নেই এমন কাউকে বিশ্বাস করতে নারাজ তা নির্বাচনের ফলাফল থেকে পরিষ্কার।


আপ নির্বাচনে জয় না পেলেও বেশ কয়েকটি আসনে কংগ্রেসের ভোট ভাগাভাগি করেছে তারা। এর ফলে কঠিন আসনে বিজেপি প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে।


গাধভির জন্য, প্রাসঙ্গিক থাকা এবং একজন জননেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরাই হবে আসল চ্যালেঞ্জ। আগামিদিনে গাধভির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বুথ এবং ব্লক স্তরে দলের একটি শক্ত ক্যাডার বেস তৈরি করা যাতে রাজ্যে বিজেপি এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালি সংগঠন তৈরি করা যায়।


আরও পড়ুন: Upcoming cyclones in India: এক 'মান্দাসে' রক্ষে নেই, পর পর আসছে 'মোচা', 'বিপর্যয়', 'তেজ'!


একজন বিখ্যাত টেলিভিশন অ্যাঙ্কর এবং সাংবাদিক হিসাবে তাঁর পরিচয় ভোট প্রচারের সময় জনসাধারণের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে তাঁকে সাহায্য করেছিল। দেবভূমি দ্বারকা জেলার পিপলিয়া গ্রামের বাসিন্দা, গাধভি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী (ওবিসি) সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। এই শ্রেণী রাজ্যের জনসংখ্যার ৪৮ শতাংশ।


১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধী প্রতিষ্ঠিত আহমেদাবাদের একটি ডিমড বিশ্ববিদ্যালয় গুজরাট বিদ্যাপীঠ থেকে সাংবাদিকতায় ডিগ্রি অর্জনের পর প্রায় ১৭ বছর আগে গাধভি একটি স্থানীয় সংবাদ চ্যানেলের সাংবাদিক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।


আরও পড়ুন: Gujarat Assembly Election Result 2022: 'গেরুয়া' গুজরাতে মোদীই ভাঙলেন মোদীর রেকর্ড


পোরবন্দরের একটি চ্যানেলে কাজ শুরু করার আগে তিনি দূরদর্শনে সাংবাদিক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এই সময়, তিনি অবৈধভাবে জঙ্গল কাটার বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করেছিলেন। এই ঘটনা তাকে লাইমলাইটে নিয়ে আসে।


২০১৫ সালে, তিনি আহমেদাবাদে আরেকটি গুজরাটি নিউজ চ্যানেল 'ভিটিভি গুজরাটি'-র চ্যানেল প্রধানের চাকরি নেন। তিনি 'মহা-মন্থন' নামক একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপকও ছিলেন। এই অনুষ্ঠান গ্রামীণ জনসাধারণের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। গাধভি কৃষি এবং কৃষকদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলিকে তুলে ধরতেন এই অনুষ্ঠানে।


তিনি তার আক্রমণাত্মক অ্যাঙ্করিং-এর জন্যও পরিচিত ছিলেন। তার অন-স্ক্রিন ব্যক্তিত্ব তাকে মানুষের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেতে সাহায্য করেছিল। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিতর্ক এবং জবাবদিহি চাওয়ার সময় তিনি প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং সরকারের সমালোচনা করে মানুষের কাছে প্রশংসা অর্জন করেন।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)