ওয়েব ডেস্ক: একটা জেহাদে জেরবার গোটা দেশ। গৌহত্যা! 'ধর্মের জেহাদ'। একথা আর লুকিয়ে রাখার কোনও প্রয়োজন নেই যে, উগ্র হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডাধারীরা 'গৌ নিধন' কাণ্ডের বিরুদ্ধে পথে নেমে শুরু করেছেন 'মানবতার নিধন যজ্ঞ'। যে জাতি গরুকে কেবল গবাদি পশু মনে করে না, গরুর মাংস যাদের নিত্য দিনের খাবার, সেই জাতির ওপর অকথ্য আক্রমণ নেমে আসছে, কখনও তা মহারাষ্ট্রে কখনও তা গুজরাটে। মুম্বই তে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় বিফ। যার কারণে সমস্যায় পড়েন মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ। গুজরাটে উগ্র হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডাধারীদের রক্তচক্ষু থেকে নিস্তার পায়নি দলিতরা। গোটা দেশ এই ঘটনাগুলোতে উত্তাল হয়েছে। লোকসভা থেকে রাজ্যসভা বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে দলিতদের ওপর বর্বরতা। মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে অবস্থার বিশেষ বদল হয়নি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই সামাজিক সমস্যায় গভীরভাবে নজর রাখলে দেখা যাবে 'গৌ মাতা'র স্লোগান যে কেবল ভাতৃত্ববোধে কুঠারাঘাত করছে তাই নয়, মানুষের রুটি রুজির প্রশ্নেও গভীর সংকট তৈরি করছে। সত্যিই তো, যারা গরুকে 'মা' মনে করেন তাঁদের কাছে 'গৌহত্যা' আসলে 'মাতৃহত্যার' মত 'মহাপাপ'। আবার উল্টোদিকে 'গৌ' নিয়েই যাদের কারোবার, যাদের রুটিরুজি গরুর মাংসের বিক্রি কিংবা গরুর চামড়াই যাদের 'ইন্ডাস্ট্রি' টিকিয়ে রেখেছে তাঁদের কথাটাও ভেবে দেখার দরকার। 


দলিত সম্প্রদায়ের কাছে গরুর মাংস খাওয়া কোনও পাপ নয়। এমনকি দলিতদের 'চামার' (পদবি) গোষ্ঠী জীবিকা নির্বাহ করে গরুর চামড়ার কারোবার করেই। প্রত্যেক দলিত পরিবারের কেউ না কেউ এই ব্যবসায় জড়িত। মাসিক ১২ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা তাঁদের রোজগারও আছে এখান থেকে। চর্ম শিল্পের বেশির ভাগটাই নির্ভরশীল গরুর চামরার ওপর। সারা বছরের হিসেব করলে এই চর্ম শিল্প থেকে আয় হয় প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। গুজরাটে দলিতদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণের কারণে অনেকেই সরে আসছেন চর্মশিল্প থেকে। এই বিষয় চিন্তায় ফেলেছে গোটা দেশের চর্ম শিল্পকে।