নিজস্ব প্রতিবেদন: দেওয়া হয়েছিল পর্যটন ভিসা। সেই ভিসার বিধি লঙ্ঘন করে তবিলিঘি জামাতের অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৮০০ নাগরিক। তাঁদের কালো তালিকাভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরই সঙ্গে আরও ২৫০ জন বিদেশিকে কালো তালিকায় ফেলে রদ করে দেওয়া হয়েছে ভিসা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গত ২৮ মার্চ রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে পর্যটক ভিসায় এদেশে এসেছেন তবলিঘি জামাতের সদস্যরা। তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করা হোক। দরকার হলে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। পর্যটক ভিসায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার কথা জানাননি বিদেশিরা। এর পাশাপাশি ধর্মপ্রচারও করা যায় না। সেই বিধি লঙ্ঘন করেছিলেন বিদেশিরা। দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিলেন দেশের ৫টি রাজ্যের বাসিন্দারা।  


দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের ধর্মীয় সম্মেলন থেকে দেশজুড়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। জামাতের সদর দফতর থেকে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে
বের করে আনা হয়েছে। সাড়ে চারশো জন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ। বাকিদের কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। ধর্মীয় সম্মেলন থেকে ফেরার পর দশ জন ইতিমধ্যেই করোনায় মারা গেছেন। তেলেঙ্গানায় মারা গেছেন ৬ জন। আন্দামান-সহ দেশের নানা প্রান্তে আরও প্রায় কুড়ি জন আক্রান্ত। 


নিজামুদ্দিন। দিল্লির এই এলাকাই এখন করোনা সংক্রমণের হটস্পট। অবস্থা সামাল দিতে ঘাম ছুটছে প্রশাসনের। চিন্তা গোটা দেশেই। করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় দিল্লি সরকার মার্চের গোড়াতেই ৫ জনের বেশি লোকেরপ্রকাশ্যে বেরনো নিষিদ্ধ করে। ধর্মীয় সংগঠন তবলিঘি জামাত, তার মধ্যেই নিজামুদ্দিনের সদর দফতরে জমায়েতের আয়োজন করে। 


১৩-১৫ মার্চ নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের সমাবেশ হয়। যোগ দেন প্রায় ২০০০ জন। এঁদের মধ্যে প্রায় ২৫০ জন বিদেশি। নিজামুদ্দিনের সমাবেশে যোগ দেওয়ার পর করোনা আক্রান্ত হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ফেরার পর তেলেঙ্গানা-আন্দামান-সহ একাধিক রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হন অনেকে। ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দেন বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স-সহ প্রায় ১৪টি দেশের প্রতিনিধিরা। এই বিদেশিদের সংস্পর্শে আসার ফলেই করোনা ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে।সমাবেশের পর ২৫টি বাসে দেশের নানা জায়গায় ফিরে যান এমন ৭০০ জনকে ঘরবন্দি রাখা হয়েছে।


নিজামুদ্দিন থেকে বাংলায় ফিরেছেন অনেকে। নবান্ন জানিয়েছে, দিল্লিতে তবলিঘি জামাতের সমাবেশ থেকে যাঁরা রাজ্যে ফিরেছেন তাঁদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সবার করোনা পরীক্ষা করা হবে এবং ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিন করা হবে। ২৪ মার্চ রাত বারোটা থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। প্রশাসন সূত্রে খবর, লকডাউনের পরও নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের সদর দফতরে রয়ে যান দেশ-বিদেশ থেকে আসা দেড় হাজারের বেশি মানুষ। করোনা লক্ষণ থাকায় এঁদের মধ্যে প্রায় ৪৫০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকেরই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। অন্যদের দিল্লির নেহরু স্টেডিয়ামে কোয়ারেন্টিন করা হচ্ছে।   3


তবলিঘি জামাতের সদর দফতরে তালা পড়েছে। প্রধান উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে দিল্লি পুলিস। এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিস এবং আধাসেনা। উড়ছে ড্রোন। ধর্মীয় সমাবেশ সংলগ্ন এলাকায় ক্যাম্প তৈরি করে সব স্থানীয় বাসিন্দার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।নিজামুদ্দিন ও পাশের লোধি রোড এলাকার কুড়ি হাজার বাসিন্দাকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। তিরিশ হাজার লিটার জীবাণুনাশকে এলাকা স্যানিটাইজ করছেন নয়াদিল্লি পুরনিগমের পঞ্চাশের বেশি কর্মী। 


আরও পড়ুন- নিজামুদ্দিনে দায়িত্বজ্ঞানহীন তবলিঘি জামাত, প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকাও