নিজস্ব প্রতিবেদন: তাত্ক্ষণিক তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করতে অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) পাশ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মুসলিম মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে বিরাট পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এই অধ্যাদেশের বলে তিন বার 'তালাক' শব্দটি উচ্চারণ করে বিবাহ বিচ্ছেদের চেষ্টা করা হলে স্বামীর তিন বছর পর্যন্ত কারাবাসের সাজা ও জরিমানা হতে পারে। এছাড়া, স্ত্রী খোরপোশের আবেদনও করতে পারবেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবার এই অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করলেই তাত্ক্ষণিক তিন তালাক শাস্তিযোগ্য অপারধে পরিণত হবে।  উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের অগস্টে তাত্ক্ষণিক তিন তালাককে বেআইনি ও অসাংবিধানিক হিসাবে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সরকারকে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের নির্দেশেও দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত।


তালাক-ই-বিদ্দত বা তাত্ক্ষণিক তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার পর আদালতের নির্দেশেই কেন্দ্রীয় সরকার "দ্য মুসলিম ওম্যান (প্রোটেকশন অফ রাইটস অন ম্যারেজ) বিল ২০১৭" পাশ করিয়েছিল লোকসভায়। কিন্তু, রাজ্যসভায় বিলটিকে পাশ করাতে পারেনি সংখ্যালঘু সরকার। ফলে, তা আর আইন হয়ে উঠতে পারেনি। বিলটির সব দিক খতিয়ে দেখতে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি করা হয়। বাদল অধিবেশনের শেষ দিন এই বিলে তিনটি প্রধান সংশোধনী নিয়ে আসা হয়।


তিন তালাক বিলের সংশোধিত সংস্করণে কেবল তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বা তাঁর নিকটাত্মীয়রাই
অভিযোগ দায়ের করতে পারবে। এর ফলে, প্রতিবেশী বা যে কেউ অভিযোগ করেই কোনও মুসলিম বিবাহিত পুরুষকে বেকায়দায় ফেলতে পারবে না। এর পাশপাশি, ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগও থাকছে যা বিলের প্রাথমিক খসড়ায় ছিল না। অর্থাত্, ইচ্ছা হলে কোনও মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়ে ফের একসঙ্গে সংসার করতে পারেন। এছাড়া সংশোধিত বিলে, পুলিসের হাতে জামিন দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়নি। কেবল মাত্র বিচারক বা বিচারপতিই মহিলার বক্তব্য শোনার পর অভিযুক্ত স্বামীকে জামিন মঞ্জুর করতে পারবেন।


তিন তালাক বিলকে সংসদের উভয় কক্ষে সর্বসম্মতভাবে পাশ না করিয়ে সরাসরি অধ্যাদেশের রাস্তায় হাঁটার যে পদক্ষেপ মোদী সরকার গ্রহণ করল, তাতে বিশেষ রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। বিজেপি মুসলিম মহিলাদের পাশে রয়েছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে এই অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে তেমন বার্তাই দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এদিন অর্ডিন্যান্স জারি করার পরেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এই বিলে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, সংঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যেই কংগ্রেস এই বিলকে রাজ্যসভায় সমর্থন করেনি। অন্যদিকে, বিজেপি-র এমন অতিসক্রিয় ভূমিকাকে সামনে রেখে যে বিরোধীরাও পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে ময়দানে নামবে, সে বিষয়ে সংশয়হীন রাজনৈতিক মহল।