সৌমিত্র সেন: আজ মহাবীর জয়ন্তী (Mahavira Jayanti)। সারা ভারতে দিনটি বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে, বিশেষ করে উদযাপিত হচ্ছে জৈনধর্মাবলম্বী গোষ্ঠীর মধ্যে। মহাবীর (Mahavira) ছিলেন ২৪ তম তীর্থঙ্কর। বৈশালীর কুণ্ডগ্রামে জন্ম, যা এখনকার বিহারের (Bihar) পাটনার সন্নিহিত। প্রায় ৩০০০ বছর আগে, যিশুজন্মের (Jesus) ৬০০ বছরেরও আগে মহাবীরের জন্ম। কথিত আছে, মহাবীরের জন্মের আগে তাঁর মা ত্রিশলা ১৪টি স্বপ্ন দেখেছিলেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Indore Temple Tragedy: কোনও আপত্তি ধোপে টিকল না; অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে মন্দির চত্বরে ঢুকল বুলডোজার 


মহাবীরের জন্মের পরে তাঁর বাবা-মায়ের জীবনে বিশেষ সমৃদ্ধি এসেছিল বলে তাঁরা ছো়টবেলায় তাঁর নাম রেখেছিলেন 'বর্ধমান'। একদিন বাচ্চারা সকলে খেলছিল। এমন সময়ে একটা বিষধর সাপ চলে এল সেখানে। বর্ধমানের বন্ধুরা ভয় পেয়ে দৌড় দিল। বর্ধমান গেল না, শুধু তা-ই নয়, সে সাপটিকে ধরে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিল! এটা যেন প্রতীক। এতে যেন বোঝা গেল, এই বালকটি ভবিষ্যতে সমস্ত ভয়-বাধা-বিঘ্নকে জয় করে, সেগুলিকে পরিত্যাগ করে দূরে ছুঁড়ে ফেলে এগিয়ে যাবে।


আরও পড়ুন: Kuno National Park: আতঙ্ক! জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সটান গ্রামে হাজির আফ্রিকা থেকে নিয়ে আসা চিতা...


এগিয়ে অবশ্যই গিয়েছিলেন তিনি। সংসার ত্যাগ করেন ৩০ বছর বয়সে। তার আগে অবশ্য বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রী ছিলেন যশোদা। এক সন্তানও ছিল তাঁদের। কিন্তু সব ত্যাগ করে মহাবীর শ্রমণ হয়ে গেলেন। মহাবীর এক যুগ কঠোর তপস্যা করেছিলেন। পরে জ্ঞানলাভ করেছিলেন। এক মহাপণ্ডিত ইন্দ্রভূতি গৌতম প্রথম তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। 


অত বছর আগে মহবীর তাঁর ধর্মীয় অনুশাসনে মেয়েদের জায়গা করে দিয়েছিলেন। তাঁর সংঘে মেয়েদের আলাদা ব্যবস্থা ছিল! আজকে দাঁড়িয়ে এ তথ্য আমাদের খুবই আশ্চর্য করে এই জন্য যে, তখনও কী আধুনিক ছিল মহাবীরের মন!


মৃত্যুর আগে ৩০ বছর ধরে অক্লান্ত প্রচার করেছিলেন মহাবীর। নির্বাণই (nirvana) তাঁর অন্তিম উপজীব্য। তবে এর আগে তিনি কতগুলি ধাপের কথা বলেছিলেন; সত্য, অস্তেয় (চুরি না করা), ব্রহ্মচর্য, অপরিগ্রহ (অনাসক্তি) এবং অহিংসা। মহাবীর কর্মত্যাগের কথা বলেছেন। তারও আগে বলেছেন আসক্তি ত্যাগের কথা। বলছেন, কোনও জিনিস কাছে রাখলেই যে তার আসক্তিতে বুঁদ হয়ে রইল মানুষ তা সবসময় নয় কিন্তু, বরং যা কাছে নেই তার প্রতি টান অনুভব করাটাও আসক্তি, সেটাকেও দূর করতে হবে।


মহাবীর অবশ্য অহিংসাকেই (non-violence) সব কিছুর উপরে ঠাঁই দিয়েছিলেন। অন্যের যে কোনও ধরনের ক্ষতি করা থেকে নিজেকে বিরত রাখার কথা বলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি 'নির্গ্রন্থে'র কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিলেন-- তুমি যেমন অন্য কারও থেকে ব্যথা পেতে চাও না, তেমনই অন্যেরাও তোমার থেকে ব্যথা পেতে চায় না!


বলেছিলেন আরও এক আশ্চর্য কথা। বাইরের শত্রুর সঙ্গে লড়ে কী করবে? বরং নিজের 'আত্ম'র (self) সঙ্গে লড়ো, লড়ে  তাকে জয় করো! তার পর জ্ঞানলাভ-মুক্তি-নির্বাণের পথ! গৌতম বুদ্ধের (goutama buddha) সমসাময়িক মহাবীর, তবে বুদ্ধের চেয়ে সামান্য 'সিনিয়র' তিনি। বিহারের পাওয়াপুরীতে ৭২ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান। আজও ভারতের ইতিহাস ও ধর্মীয় সংস্কৃতিতে মহাবীরের গভীর প্রভাব।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)