`সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা` থেকে অমিতের সঙ্গে অসমের NRC ইস্যুতেই বৈঠক মমতার
“এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে।অসমের এনআরসিতে যে সব বৈধ ভোটার ভোটাধিকার হারিয়েছেন তাঁদের নথিভুক্ত করতে আবেদন জানিয়েছি।”
নিজস্ব প্রতিবেদন: আধ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক। আর আজ সেই হাইভোল্টেজ বৈঠকের দিকেই নজর ছিল রাজ্যসহ গোটা দেশের। অমিত শাহের সঙ্গে প্রথমবার বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী নিয়ে হতে পারে আলোচনা, তা নিয়েই জল্পনা ছিল তুঙ্গে। দুপুর ২টো নর্থ ব্লকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বাইরে বেরিয়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে।অসমের এনআরসিতে যে সব বৈধ ভোটার ভোটাধিকার হারিয়েছেন তাঁদের নথিভুক্ত করতে আবেদন জানিয়েছি।”
কলকাতায় হন্যে হয়ে রাজীব কুমারকে খুঁজছে সিবিআই। ওদিকে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! কী হতে এই বৈঠকের নির্যাস? দুপুর দেড়টায় নর্থ ব্লকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢোকার পর থেকে বাংলার পাশাপাশি সরগরম ছিল দিল্লির রাজনৈতিক মহলও। বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজীব কুমার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলেই উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, একেবারেই সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকে আজকের এই বৈঠক।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছি। অসমে এনআরসি-তে অনেক বাঙালির নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। এই বিষয়টি দেখতে বলেছি। অনেক প্রকৃত ভোটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে তালিকা থেকে।”
রাজীবের খোঁজে আইপিএস কোয়ার্টার, হোটেল, বিমানবন্দরে CBI-এর তল্লাশি! ফের নোটিস বাড়িতেও
তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আতঙ্কে ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের লাইনে লাখ লাখ মানুষ দাঁড়িয়েছেন। সেকথাও জানিয়ে এসেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।''
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার পরই সোচ্চার হন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, বাংলায় এনআরসি চালু করা নিয়ে হুমকি দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কেন বলতে পারলেন না যে বাংলায় এনআরসি চালু করতে দেবেন না তিনি? তাঁর কটাক্ষ, বাংলায় বড় বড় কথা বলে গিয়েছেন মমতা, অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে বসে ভাইপো, রাজীব কুমারের মুখ কি সামনে ভেসে উঠেছিল? তাই বাংলার নয়, অসমের এনআরসি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন তিনি! বাংলার মানুষের হয়ে কথা বললেন না কেন? প্রশ্ন তোলেন সুজন চক্রবর্তী।
সাংবাদিক বৈঠকের একেবারে শেষলগ্নে রাজীব কুমার সম্পর্কে আরও একবার প্রশ্ন করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। অর্থাত্ এদিন মমতা-অমিতের বৈঠকের সারবত্তা ছিল অসমের এনআরসি ইস্যুই। বাংলায় এনআরসি চালু হবে কিনা, তা নিয়ে কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি এই বৈঠকে।