Nithyananda: নিজের `তৈরি` দেশেই নিগৃহীত নিত্যানন্দ! অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রসংঘে কৈলাসের প্রতিনিধি
যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত পলাতক গুরুর প্রতিষ্ঠিত কাল্পনিক `দেশ`র এক প্রতিনিধি জাতিসংঘের সভায় বক্তব্য রাখেন, `হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু`র সুরক্ষার দাবিতে। তিনি দাবি করেন, তাঁকে অত্যাচার করা হচ্ছে। এই কাল্পনিক দেশটি হল `ইউনাইটেড স্টেটস অব কৈলাস`, যা প্রতিষ্ঠিত করেছেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু নিত্যানন্দ।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কূটনৈতিক কার্যক্রম, শিশু নিগ্রহ, যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত পলাতক গুরুর প্রতিষ্ঠিত কাল্পনিক 'দেশ'র এক প্রতিনিধি জাতিসংঘের সভায় বক্তব্য রাখেন, 'হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু'র সুরক্ষার দাবিতে। তিনি দাবি করেন, তাঁকে অত্যাচার করা হচ্ছে। এই কাল্পনিক দেশটি হল 'ইউনাইটেড স্টেটস অব কৈলাস', যা প্রতিষ্ঠিত করেছেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু নিত্যানন্দ। যিনি ভারতের থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দেশে একাধিক আশ্রম পরিচালনা করা এই নিত্যানন্দের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহ ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন, National Science Day: আলোর একটু অন্যরকম বিচ্ছুরণই সেদিন বিজ্ঞানের ইতিহাসে সূচনা করল এক নতুন যুগের...
২০১৯ সালের নভেম্বরে গুজরাত পুলিস ভারত থেকে তাঁর পালিয়ে যাওয়ার খবর দেয়। তার বিরুদ্ধে আশ্রমে শিশু অপহরণের অভিযোগ তদন্ত করা হয়। এর পরপরই এক অজ্ঞাত স্থানে কৈলাস জাতির 'প্রতিষ্ঠা' করার দাবি জানায় এই গুরু। এই 'জাতি' রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃত কি না, এবং যদি হয়, তাহলে নিত্যানন্দকে একটি কাল্পনিক দেশের রাজা ঘোষণা করার জন্য কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক কমিটির (সিইএসআর) ১৯ তম সভায় মা বিজয়প্রিয়া নিত্যানন্দকে 'ইউনাইটেড স্টেটস অব কৈলাস'-এর প্রতিনিধিত্বকারী বলে অভিহিত করা হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি ওয়েবসাইটে আপলোড করা ভিডিও অনুযায়ী, বিজয়প্রিয় 'কৈলাসের স্থায়ী দূত'। সভায় সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (এসডিজি) নিয়ে আলোচনা হয়। বিজয়প্রিয়া এসডিজি এবং হিন্দুধর্মের মধ্যে একটি অস্পষ্ট যোগসূত্র তৈরি করেছিলেন। আর তারপরই দাবি করতে থাকেন তাঁর 'জাতি'র প্রতিষ্ঠাতা নিত্যানন্দকে, তাঁর জন্মভূমি ভারত তাঁকে 'নিপীড়ন' করছিল।
কৈলাসকে হিন্দুধর্মের প্রথম সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করে বিজয়প্রিয়া বলেন,, কৈলাসের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু নিত্যানন্দ পরমশিবম। যিনি হিন্দু সভ্যতাকে পুনরুজ্জীবিত ও আলোকিত করছেন এবং তার হিন্দুধর্মের ১০ হাজার ঐতিহ্য, আদি শৈব আদিবাসী কৃষি উপজাতি-সহ তিনি আরও বলেন যে, নিথিয়ানাদা ছিলেন এই উপজাতিগুলির নেতা। কৈলাসের সময় পরীক্ষিত হিন্দু নীতির সঙ্গে প্রাচীন হিন্দু নীতি ও সমাধানের মিল রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, হিন্দুধর্মের ঐতিহ্য ও জীবনধারাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু এবং কৈলাসার প্রতিষ্ঠাতা তীব্র নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে গেছে। এমনকি তার প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং তার জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের কাছে অনুরোধ নিত্যানন্দ ও কৈলাসে বসবাসকারী ২০ লক্ষ হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 'হিন্দুধর্মের মূলনীতি, সমাধান ও নীতি' আন্তর্জাতিক মঞ্চে শোনার অনুমতি দেওয়ার জন্য তিনি সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও দাবি করেন, কৈলাস ইতিমধ্যেই ১৫০ টি দেশে দূতাবাস ও এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছে।
প্রসঙ্গত, নিত্যানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করে কর্ণাটকের দায়রা আদালত। তাঁর প্রাক্তন ড্রাইভার লেনিনের অভিযোগের ভিত্তিতে নিত্যানন্দকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে ২০২০ সালে নিত্যানন্দ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে লেনিনের আবেদনে উল্লেখ করে জামিন বাতিল করা হয়। এমনকী গুজরাতের আশ্রমেও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন, Delhi Liquor Scam: গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ মণীশ সিসোদিয়া