Manipur Violence: ফের জ্বলল স্কুল, প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন মেইতেইরা! মণিপুর ইস্যুতে উত্তাল সংসদ
শুরু হয়েছে মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের `দেশত্যাগ`। এদিন অধিবেশেনর শুরুতেই মণিপুরের ইস্যুতে উত্তাল হল সংসদ। মণিপুর ইস্যুতে তপ্ত লোকসভা-রাজ্যসভা, সংসদের উভয় কক্ষ-ই।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের হিংসা মণিপুরে। চুরাচাঁদপুরে জ্বালানো হল স্কুল। ওদিকে জঙ্গি হুমকি পরিপ্রেক্ষিতে মণিপুরের পড়শি রাজ্য মিজোরাম থেকেও শুরু হয়েছে মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের 'দেশত্যাগ'। এই পরিস্থিতিতে মিজোরাম সরকার মেইতেইদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছে। প্রায় হাজার থেকে দু' হাজার মেইতেই মিজোরামের আইজল সহ বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করেন। বহু বছর ধরেই তাঁরা মিজোরামে আছেন। এখন মণিপুরে হিংসা ছড়াতেই সেই আঁচ এসে লেগেছে মিজোরামে বসবাসকারী মেইতেইদের গায়েও।
এদিকে, এদিন সংসদের অধিবেশন শুরু। অধিবেশেনর শুরুতেই মণিপুরের ইস্যুতে উত্তাল হল সংসদ। মণিপুর ইস্যুতে তপ্ত লোকসভা-রাজ্যসভা, সংসদের উভয় কক্ষ-ই। ওদিকে, এদিন অধিবেশন শুরুর আগে মণিপুর ইস্যুতে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি দাবি করে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। উল্লেখ্য, মণিপুর ইস্যুতে এদিন I.N.D.I.A জোটের বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। প্রসঙ্গত, হিংসাদীর্ণ মণিপুরে একের পর এক বিভীষিকার ছবি সামনে আসছে। স্বাধীনতা সংগ্রামীর আশি বছরের বৃদ্ধা স্ত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে। এটি মণিপুরের কাকচিং জেলার সেরউ গ্রামের ঘটনা। ওদিকে পূর্ব ইম্ফলে ২১ জুলাই একটি এফআইআর হয়েছে। সেখানে এক ১৮ বছরের তরুণী অভিযোগ করেছেন, তাঁকে গণধর্ষণ করেছে কালো পোশাক পরিহিত অস্ত্রধারী ৪ যুবক। কিন্তু তাঁর পরের কথাগুলি আরও মারাত্মক। ওই তরুণী পুলিসকে জানিয়েছেন, তাঁকে অপহরণ করে মহিলাদের একটি দল। তারপর তাঁকে তুলে দেওয়া হয় অস্ত্রধারী ওই ৪ যুবকের হাতে।
এর পাশাপাশি ঘরে ঢুকে ২ বোনকে গণঘর্ষণের পর খুনের অভিযোগ সামনে এসেছে ইম্ফলে। নির্যাতিতাদের বাবার অভিযোগ, ৪ মে ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত, ঘটনার ৮০ দিন পরেও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিস। ওদিকে, মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার এক লোকালয়ে একটি বাড়ির বাঁশের বেড়ার মাথায় উদ্ধার হয়েছে একটি কাটা মুণ্ডু। বাঁশের বেড়ার মাথায় টাঙানো ছিল কাটা মুণ্ডুটি। ঘটনার বীভত্সতা ও নৃশংসতা চমকে দিয়েছে সবাইকে। এই ভিডিয়োটিও ভাইরাল। এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠছে সবাই। যে-ব্যক্তির কাটা মুণ্ড পাওয়া গিয়েছে, তাঁকে শনাক্তও করা গিয়েছে। তিনি কুকি সম্প্রদায়-ভুক্ত।
প্রসঙ্গত, মণিপুরের ২ মহিলাকে গণধর্ষণ ও তাঁদের নগ্ন হাঁটানোর ভিডিয়ো সামনে আসতেই তোলপাড় হয় দেশ। ৪ মে মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটে। ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি ওঠে। বিরোধীদের ক্রমাগত দাবির মুখে শেষপর্যন্ত মণিপুর ইস্যুতে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী। ভাইরাল ভিডিয়োকাণ্ডে কড়া বিবৃতি দেন। দোষীদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না। আইন আইনের পথে চলবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, এতদিনে সেই ন্যক্কারজনক ঘটনায় ৫ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। তাও ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর। ওই দুই নির্যাতিতার মধ্যে একজন কার্গিল যোদ্ধার স্ত্রী বলেও জানা গিয়েছে।
সংরক্ষণের দাবিতে আজকে প্রায় ৩ মাস ধরে মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে জাতি হিংসার কারণে উত্তপ্ত মণিপুর। সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন মেইতেইরা। এই মেইতেইরা মণিপুরের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী। মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতেই। মূলত ইম্ফল উপত্যকায় বাস মেইতেইদের। ওদিকে কুকি ও জো সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষরা থাকেন পাহাড়ি অঞ্চলে। মেইতেইদের সংরক্ষণের অধিকার দাবির বিরোধিতা করেছে কুকিরা। কারণ, মেইতেইরা সংরক্ষণের আওতায় এলে তাঁরা বনে প্রবেশে অগ্রাধিকার পেয়ে যাবে। এই নিয়ে গত ৩ মে প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই অশান্তির আগুনে পুড়ছে মণিপুর।
আরও পড়ুন, Madhya Pradesh: 'এত সেজেছ কেন?', স্ত্রী পারফিউম লাগানোয় স্বামী ঘটালেন ভয়ংকর কাণ্ড!