অনির্বাণ সিনহা


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজনীতিতে প্রথম। দল থেকে সংসদে প্রথম বক্তব্য। কেবল বিরোধিতা নয়,বাবার রাজনৈতিক ক্ষতিই করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।


১৯৬৬-তে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রফুল্ল সেন-অতুল্য ঘোষ লবির চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়েন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মুখোপাধ্য়ায়, সুশীল ধাড়া, সতীশ সামন্তরা। দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর কাছে দরবার করেও বিশেষ সুবিধা হল না। সিন্ডিকেট লবির সমর্থন তখন নেহরু কন্যার বিশেষ প্রয়োজন।তাই অজয়বাবুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েও ইন্দিরা সক্রিয় কোনও সাহায্য করতে পারলেন না।


আরও পড়ুন-সংখ্যালঘু ইন্দিরার ‘ব্যাকবোন’! ৩ সাংসদ নিয়েও ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ প্রণব
 
দল ছেড়ে নতুন দল গড়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন অজয় মুখোপাধ্য়ায়,সুশীল ধাড়া,সতীশ সামন্তরা। স্বাধীনতা আন্দোলনে সাথী, কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে পেতে চাইলেন তাঁরা।
প্রফুল্ল-অতুল্য জুটির কাজকর্মের তুমুল বিরোধী হয়েও কামদাকিঙ্কর জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেস তিনি ছাড়তে পারবেন না। অপ্রত্যাশিত ভাবেই তাঁর পুত্রটিকে কিন্তু পেয়ে গেলেন অজয় মুখোপাধ্যায়রা।


বাবার উল্টো পথে হেঁটে প্রণব যোগ দিলেন বাংলা কংগ্রেসে। অচিরেই সুশীল ধাড়া,সতীশ সামন্তদের চোখের মণি হয়ে উঠলেন তাঁদের বন্ধু-পুত্র প্রণব। তিন বছরের মধ্যেই রাজ্যসভার সাংসদ হলেন প্রণব মুখোপাধ্য়ায়। তার আগে প্রণবেরই সক্রিয় উদ্যোগে বাংলা কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারে দু-দুবার (১৯৬৭ ও ১৯৬৯ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে) জায়গা পেল, ক্ষমতায় এলে রাজ্য বিধান পরিষদ অবলুপ্তির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতি পালনের কাজ শুরু হতেই বিতর্ক, রাজ্যের বিধানসভা ও দেশের সংসদে।


আরও পড়ুন-চার দশকে রেকর্ড! মাইনাস ২৩.৯ শতাংশ দেশের GDP


তখনও সংসদে নিজের মেইডেন স্পিচ বা প্রথম বক্তৃতাটি দেওয়া হয়নি প্রণব মুখোপাধ্য়ায়ের।মরিয়া প্রণব তখন সুযোগ খুঁজছেন, কী ভাবে,কোন বিষয়ে রাজ্যসভায় প্রথম মুখ খোলা যায়। ঠিক তখনই এসে গেল সুবর্ণ সুযোগ। দলীয় ইস্তেহারে নিজে যা লিখেছেন, সেই বিষয়েই সংসদে কথা বলার সুযোগ। প্রণব বললেন। রাজ্যসভায় তাঁর সেই প্রথম ভাষণ, রীতিমত নজর কাড়ল অভিজ্ঞ সাংসদদের। প্রণবের সেই ভাষণ, আর তাঁর সক্রিয়তার জেরে শেষ পর্যন্ত আইন পাস করে উঠেই গেল পশ্চিমবঙ্গের বিধান পরিষদ।


তখন পশ্চিমবঙ্গের বিধান পরিষদের সদস্য কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়। ফলে বিধায়ক পদ গেল তাঁর। বিধান পরিষদ অবলুপ্তিতে পুত্রের এ হেন সক্রিয়তা ও ভূমিকার কথা জানতে পেরে কামদাকিঙ্কর বলেছিলেন, 'আমি যে এমন কালিদাস পুত্রের জন্ম দিয়েছি তা তো জানতাম না!'