নিজস্ব প্রতিবেদন: বাবা ফোন করে ডেকেছিল সদ্য বিবাহিত মেয়ে-জামাইকে। এরপর তাঁরা আসতেই আচমকা কাটারি নিয়ে তেড়ে গিয়ে মেয়ে-জামাইকে কোপাতে শুরু করে মত্ত বেলাগাম বাবা। গুরুতর আঘাত পেয়ে এই মুহূর্তে হাসপাতালে মেয়ে, জামাইয়ের ক্ষতও রীতিমতো গভীর। বুধবার হায়দরাবাদের এই ঘটনার বিবরণ জেনে শিউড়ে উঠছে সারা দেশ। অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বানজারা হিলস পুলিসের কথায়, ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ৪২ বছরের মনোহর চারিকে তার ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, মেয়ে মাধবী চারি (২০) দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত বি সন্দীপকে (২২) বিয়ে করাতে বেশ কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিল মনোহর চারি। আর সেই ক্রোধেই মেয়ে-জামাইয়ের উপর এমন প্রাণঘাতী আক্রমণ।


সূত্রের খবর, মেয়ের বাড়ির শত আপত্তি থাকলেও ১২ সেপ্টেম্বর বোলারুমের এক মন্দিরে বিয়ে করেন মাধবী ও বি সন্দীপ। এই খবর জানার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন পেশায় সোনার দোকানের কর্মী মনোহর চারি। সেই থেকে নিয়মিত বি সন্দীপের বাড়িতে গিয়ে মেয়ে-জামাইকে দেখা করতে বলে মনোহর। কিন্তু এতে তেমন কাজ হয়নি। এরপর বুধবার বিকালের দিকে হঠাত্ মেয়েকে ফোন করে মনোহর। মাধবীকে সে বলে, তারা যেন একবার তার সঙ্গে দেখা করে এবং সে এই বিয়ে মেনে নেবে। বাবার মুখ থেকে এমন কথা শুনে তত্ক্ষণাত্ একটি স্কুটিতে করে এরাগাড্ডা এলাকার গোকুল থিয়েটার চত্বরে হাজির হয় মাধবী-সন্দীপ।


নব দম্পতি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর বিকাল ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ বাউকে চড়ে হাজির হয় মনোহর। বাইক থেকে নেমেই ব্যাগ থেকে একটা কাটারি বের করে জামাইয়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শ্বশুরমশাই। জামাই কোনও রকমে সামলে নেয় এবং মেয়ে বাবাকে বাধা দিতে যায়। এরপর মেয়েকে কোপাতে থাকে মত্ত মনোহর। আহত মেয়ে এই সময় আর্তনাদ করতে থাকে এবং বাবাকে আনুরোধ করে যাতে তাকে রেহাই দেয়। এই সময় আরেক ব্যক্তি পিছন থেকে মনোহরকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। তখনই এলাকা ছাড়ে মনোহর চারি। গোটা ঘটনার প্রমাণ মিলেছে সিসিটিভি ফুটেজে।


বানজারা হিলস-এর এসিপি বিজয় কুমার জানিয়েছেন, "আক্রান্তদের কাটারি দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে। এক নারকেল বিক্রেতার কাছ থেকে সে এটি ধার নিয়েছিল। অতীতেও বহুবার এমনভাবে কাটারি নিয়ে এসেছে সে। ছেলেটির মাথায় আঘাত লেগেছে এবং মেয়েটির কপালে ও গলার বাঁ দিকে গভীর ক্ষত হয়েছে"। ইতিমধ্যে মনোহর চারির বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় (খুনের চেষ্টা) এবং এসসি এসটি আইনে মামলা রজু হয়েছে। উল্লেখ্য, ধৃতের রক্তের নমুনায় অতিমাত্রায় (৩৭০মিলিগ্রা/১০০মিলি) অ্যালকোহলের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।


পুলিস আরও জানিয়েছে, মাধবী ও বি সন্দীপ বিয়ের পরই এসআর নগর থানায় যোগাযোগ করে। তত্ক্ষণাত্ থানার তরফে তাদের বাবা-মাকে ডেকে পাঠিয়ে ব্যাপারটি মিটিয়ে নিতে বলা হয়। মাধবীর বাবা মনোহর সে সময় দাবি করে, সে এই সম্পর্কের বিষয়ে আগে কিছুই জানত না।