Russia-Ukraine War: প্রাণ হাতে নিয়ে পাক ছাত্রীকে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছে দিলেন ভারতীয় তরুণ
অঙ্কিত যাদব জানিয়েছেন ২৮ ফেব্রুয়ারি কার্ফু তুলে নেওয়া হয়। ওই সময়েই পাক দূতাবাস থেকে ওই পাক ছাত্রীর মোবাইলে একটি ফোন এল
নিজস্ব প্রতিবেদন: রুশ গোলাগুলিতে বিধ্বস্ত ইউক্রেন। সেদেশ থেকে কোনওক্রমে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসছেন হাজার হাজার ভারতীয় পড়ুয়া। অনেকেই কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পৌঁছচ্ছেন হাঙ্গেরি বা রোমনিয়া সীমান্তে। সবাই যখন নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত সেই সময় প্রাণ বাজি রেখে এক পাক তরুণীকে কিয়েভ থেকে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছে দিলেন ভারতীয় তরুণ অঙ্কিত যাদব। সেখান থেকেই পাকিস্তানের বিমান ধরে বাড়ি ফিরলেন ওই তরুণী।
সংবাদসংস্থাকে অঙ্কিত জানিয়েছেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বাঙ্কারে ওর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ওই বাঙ্কারে আমি ছিলাম ওই একমাত্র ভারতীয়। আর ওই তরুণী ছিল একমাত্র পাক নাগরিক। বাকীরা সবাই ছিলেন ইউক্রেনের বাসিন্দা। কী ভেবে দেশে ফিরব তা নিয়ে আমরা দুজনই তখন দিশেহারা। ভাষার সমস্যার কারণে আমরা দুজনই বাকীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলাম না। এদিকে দিন দিন আতঙ্ক বাড়ছে। ঠিক করলাম কিয়েভ ছাড়তে হবে আমাদের। ২৬ ফেব্রুয়ারি একবার কিয়েভ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কার্ফু থাকার জন্য আমাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
দিল্লি বিমানবন্দরে সেইসব দিনের আতঙ্কের কথা জানাচ্ছিলেন অঙ্কিত। রুশ বাহিনীর টানা বোমা বর্ষণের জন্য আমাদের কাউকেই বাঙ্কার ছাড়র অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল না। এদিকে খাবারের সমস্য়াও হচ্ছিল। ইউক্রেনের নাগরিকরা সবাই আমিষ খাবার খাচ্ছিল। আমরা তা খেতে পারছিলাম না। এর মধ্য়েই গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেজাল স্প্রে কেনার জন্য আমাকে বাঙ্কার ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হল। সেই সুযোগে আমি হোস্টেলে ফিরে আমাদের ২ জনের জন্য খাবার রান্না করে নিয়ে এলাম। খাবারে টানা পড়ে যাচ্ছিল। ২৭ তারিখ রাতে শুধুমাত্রা ভাত খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম।
অঙ্কিত যাদব জানিয়েছেন ২৮ ফেব্রুয়ারি কার্ফু তুলে নেওয়া হয়। ওই সময়েই পাক দূতাবাস থেকে ওই পাক ছাত্রীর মোবাইলে একটি ফোন এল। ওই তরুণী দূতাবাস অফিসারকে জানায় তার সঙ্গে পাকিস্তানের কেউ নেই। সেইসময় পাক দূতাবাসের অফিসার আমাকে অনুরোধ করলেন আমি যেন ওই পাক তরুণীকে সীমান্তে পৌঁছে দিই। ওই কথা শুনে ওই পাক ছাত্রীকে নিয়ে ৫ কিলোমিটার হেঁটে এক ট্রেন স্টেশনে পৌঁছই। কিন্তু ট্রেনে এত ভিড় ছিল যে উঠতেই পারিনি। সৌভাগ্যবশত একটা ট্রেনে শেষপর্যন্ত জায়গা পেয়ে যাই। কিন্তু তাতে কোনও সিটই খালি ছিল না। বাধ্য হয়েই আমার মেঝেতেই বসে পড়ি। ওইভাবেই আমরা রোমানিয়ার দিকে যাত্রা করি।
এদিকে ট্রেনে উঠে ওই পাক তরুণী পাকিস্তানি দূতাবাসে ফোন করেন। তারই একটি একটি ট্যাক্সি ও বাসের ব্যবস্থা করে ওই তরুণীকে রোমানিয়া সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। সেখান থেকেই পাক বিমান ধরেন ওই তরুণী।
আরও পড়ুন-আগামি দিনে পৃথিবী কি তীব্র খাদ্যসঙ্কটে আক্রান্ত হতে চলেছে? উপমহাদেশে দুর্ভিক্ষ!