Modi`s India Comment: মণিপুরের কথা বলছি আমরা, উনি বলছেন ইন্ডিয়া মানে ইস্ট ইন্ডিয়া! সংসদে তোলপাড় কংগ্রেসের
Modi`s India Comment: সংসদের বাইরে এনিয়ে সুর চড়াল তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিরোধী এই জোটের জন্য নরেন্দ্র মোদী ভয় পেয়ে গিয়েছে। এই জোট এবার কাজ করতে শুরু করেছে। উনি বুঝে গিয়েছেন ওঁর যাবার সময় হয়ে গিয়েছে। তাই একজন প্রধানমন্ত্রী এরকম কথা বলছেন
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিরোধীদের দাবি সত্বেও মণিপুরে ঘটে চলা হিংসা নিয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে এখনও একটা কথাও বলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চার দিন হয়ে গিয়েছে বাদল অধিবেশনের। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে যা কিছু বলেছেন তা সংসদের বাইরে। তার উপরে আজ বিরোধী জোটকে ইস্ট ইন্ডিয়া কেম্পানি ও ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গে তুলনা করায় একযোগে মোদীর দিতে আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয় বলে মন্তব্য করেছ সিপিএম। সংসদে দাঁড়িয়ে মোদীকে তাঁর ওই ইন্ডিয়া মন্তব্যকে বিঁধলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
আরও পড়ুন-মাকে ধরতে মধ্যরাতে ঘরে তোলপাড় পুলিসের; গোলমালের মধ্যেই রহস্যমৃত্যু মেয়ের, তুলকালাম এলাকা
রাজ্যসভায় এদিন খাড়গে বলেন, গত ৪ দিন ধরে সংসদে এতগুলো দলের প্রতিনিধি ২৭৬ ধরায় নোটিস দিয়ে আসছেন মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য। আজ মণিপুর জ্বলছে, ধর্ষণ হচ্ছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এখানে মণিপুরের কথা বলছি আর উনি ইস্ট ইন্ডিয়া কেম্পানির কথা বলছেন! ইন্ডিয়া মানে ইস্ট ইন্ডিয়া বলছেন!
বিরোধী ইন্ডিয়া জোট নিয়ে কী বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদr? প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, ইন্ডিয়া-র নাম কেউ ব্যবহার করলেই সবকিছু হয় না। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নামেও ইন্ডিয়া ছিল। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নামেও ইন্ডিয়া আছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এমনটাই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি দিশাহীন। এমন বিরোধীপক্ষ কখনও দেখিনি। ২০২৪ সালে ফের ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।
প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে সমর্থন করতে গিয়ে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ২০২৪ সালেও আমরা ফিরে আসব। বিরোধীরাও একথা জানে। কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন এক ইংরেজ, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও ইংরেজরা বানিয়েছিল। এখন লোক ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামও রাখে,ইন্ডিয়ান পিপিলস ফ্রন্ট নামও রাখে। চেহারা যা-ই সত্যিটা আসলে অন্য। ২৪ এর ফল আসতে দিন। দেখবেন, হতাশদের সংখ্যা আরও কমে যাবে। অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইতিহাসের উদাহরণ টেনে কথা বলেছেন। হিউম যখন কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন তখন তিনি তার নাম দিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান ন্য়াশনাল কংগ্রেস। ইন্ডিয়ান মুজিহিদিনের নামেও ইন্ডিয়া আছে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নামেও ইন্ডিয়া আছে। ইন্ডিয়া শব্দটা থাকলেই সে ভারতের হিতাকাঙ্খী হয় না।
প্রধানমন্ত্রীর 'ইন্ডিয়া' মন্তব্য নিয়ে এবার মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীও। অধীরবাবু বলেন, নরেন্দ্র মোদী যতবারই ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া করে ততবার ভারতের কোনও নেতা ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া করেছে বলে মনে হয় না। সবকিছুতেই প্রধানমন্ত্রীর একটাই কথা ইন্ডিয়া। নিউ ইন্ডিয়া, মেক ইন ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, কোরাপশন ফ্রি ইন্ডিয়া কত কী। এখন তিনি সেই ইন্ডিয়াকে পিএফআই, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন। উনি ভারতকে অপমান করতে চাইছেন। প্রধানমন্ত্রীজি, আপনি যদি ভারতের মানুষ হন তাহলে তো আপনার গর্ব হওয়া উচিত।
বিরোধী জোটকে আক্রমণ করতে গিয়ে মোদীর মন্তব্য নিয়ে সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ইতিহাস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বোধ যে কম সেটাই প্রমাণ হল। প্রকৃতপক্ষে তিনি ইন্ডিয়াকেই কটাক্ষ করলেন। ভারতবর্ষকে অপমান করলেন। পাশাপাশি তিনি কিছু অনৈতিহাসিক কথা বলেছেন। ইন্ডিয়া নামের সঙ্গে তিনি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে জুড়ে দিয়েছেন। এর থেকে প্রমাণ হয় মোদী ও বিজেপি আতঙ্কগ্রস্থ। আতঙ্কের রাজনৈতিক চিন্তা তাঁর মাথায় ঘুরছে। ইন্ডিয়া শব্দটা বহু জায়গায় যুক্ত আছে। তাতে কি এমন কিছু দাঁড়ায় যে যারা রাজনৈতিক দল তৈরি করেছেন তারা ভারত বিরোধী? আসলে মোদী তাঁর ইতিহাস সম্পর্কে অনভিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। এসব কথা গোটা পৃথিবীতে প্রচার হবে। এটা অত্যন্ত লজ্জার। পৃথিবীর মানুষ দেখবে একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী কতটা নিম্নরুচির হতে পারে।
সংসদের বাইরে এনিয়ে সুর চড়াল তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিরোধী এই জোটের জন্য নরেন্দ্র মোদী ভয় পেয়ে গিয়েছে। এই জোট এবার কাজ করতে শুরু করেছে। উনি বুঝে গিয়েছেন ওঁর যাবার সময় হয়ে গিয়েছে। তাই একজন প্রধানমন্ত্রী এরকম কথা বলছেন। একজন প্রধানমন্ত্রী লোকসভাতে এসে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না। নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতা হবে না ইন্ডিয়া-কে স্তব্ধ করার।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে ভয় পেয়েছেন তা তার কথায় প্রমাণ হয়। মেক ইন ইন্ডিয়া তো প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব কর্মসূচি। বিজেপির তো দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে কোনও ভূমিকা ছিল না। তখন তো ওরা জনসংঘ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেই দিয়েছেন ইন্ডিয়া জিতেগা, ভারত জিতেগা। খুব সহজেই বোঝা যায় ইন্ডিয়া-র কাজ খুব ভালোভাবেই হচ্ছে। আগামী দিনে ইন্ডিয়া-র হাতে এনডিএর পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।
ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, নামটা শুনেই মোদী ও বিজেপিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এখন এসব কথা বলছেন। মোদীর মুখে এখন কথা নেই। আমরা বলছি, ৪ দিন অপেক্ষা করছি। সংসদে আসুন। মণিপুর সম্পর্কে কিছু বলুন! আমরা জানি পাটনা বৈঠকের পর আপনি ব্যাকফুটে।