বলিউডে বিগ বি-র জার্নি, ৫২ বছর, To be Continued....
নিজস্ব প্রতিবেদন- শাহেনশার ৫২ বছরের জার্নি। 'আনন্দ' এ সহ অভিনেতা থেকে 'সিলসিলা'-র নায়ক, 'মহব্বতে' থেকে 'পিকু', ছবির ন্যারেটর থেকে ছবিতে প্লে-ব্যাক, ভার্সেটাইলিটি কথার সমার্থক বলিউডের একটি নাম, তিনি অমিতাভ বচ্চন। ১৯৬৯ সালে 'সাত হিন্দুস্তানি' ছবির মাধ্যমে বিগ বির আবির্ভাব হয় বলিউডে। এই ছবির জন্যই সেরা নিউকামার হিসেবে জিতে নেন জাতীয় পুরস্কার।
'ভুবন সোম' ছবিতে ন্যারেটর হিসাবে তাঁকে পান দর্শক। 'আনন্দ' ছবিতে তিনি ছিলেন সহ অভিনেতা। তবুও ডঃ ভাস্কর ব্যানার্জির চরিত্রে অমিতাভকে পছন্দ করেছিলেন দর্শক। যদি রাজেশ খান্নার কণ্ঠে 'বাবুমশাই' ডাক আজও দর্শকের মনের মণিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
'বাওয়ারচি' ছবিতে তিনিই ছিলেন মূল ন্যারেটর। তাঁর কণ্ঠের প্রশংসা তখন সর্বত্র। এই ছবির পাশাপাশি এই একই বছরে অর্থাৎ ১৯৭২ তে 'গরম মশালা', 'বম্বে টু গোয়া' ছবিতে অভিনয় করেন অমিতাভ। ছবিতে বিশেষ অতিথি হিসাবেও অ্যাপিয়ার হতে শুরু করেন।
১৯৭৩ সালে 'জঞ্জির' ছবির মাধ্যমে তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম সেরা অধ্যায় শুরু হয়। এরপর 'নমক হারাম', 'অভিমান', 'সওদাগর' একের পর এক ছবিতে তিনি নিজের ছাপ রেখে গিয়েছেন। এই ছবির জন্য ফিল্মফেয়ারে সেরা নায়কের নমিনেশনেও আসে তাঁর নাম।
১৯৭৪ এ 'রোটি কাপড়া অওর মাকান' ছবি বিজয়ের চরিত্রে তাঁকে পান দর্শক। একজন কলেজ পড়ুয়ার চরিত্রে বেশ মানিয়েছিল তাঁকে। অপরি পাওনা অবশ্যই মনোজ কুমার, শশী কাপুরের সঙ্গে একই ফ্রেমে অমিতাভ। এই বছরই 'মজবুর' ছবিটিও মুক্তি পায়।
১৯৭৫ এ 'দিওয়ার', অমিতাভ শশী কাপুরের বিখ্যাত দৃশ্য, অমিতাভ যখন বলছেন 'মেরে পাস বাংলা হ্যায়, গাড়ি হ্যায়, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স হ্যায়, কেয়া হ্যায় তুমারে পাস', প্রশ্নের উত্তরে শশী কাপুর বলে উঠছেন 'মেরে পাস মা হ্যায়'। আজও এই দৃশ্য দেখতে পেলে দাঁড়িয়ে যান সিনেমাপ্রেমীরা।
'কভি কভি' মিউজিক্যাল রোম্যান্টিক ড্রামাতে অমিতাভকে রোম্যান্টিক হিরো হিসাবে ভালবেসে ফেলেন দর্শক। রাখির সঙ্গে পর্দায় তাঁর অনস্ক্রিন কেমিষ্ট্রিও তখন জমে গেছে। এই বছরই 'দো অনজানে', 'বালিকা বধূ' ছবি মুক্তি পায়।
'অমর আকবর অ্যান্টনি', স্ক্রিনে বিনোদ খান্না, ঋষি কাপুর, অমিতাভ বচ্চন, মশালা ফিল্মেও যে মাত করতে পারেন তিনি তার অন্যতম সেরা ছবি এটি। ফিল্মফেরারে সেরা অভিনেতা হিসেবে তিনি স্বীকৃতি পান তিনি।
১৯৭৫ এর পর ফের ১৯৮১ তে 'ইয়ারানা'য় আমজাদ খান ও অমিতাভ বচ্চনের কেমিষ্ট্রি দেখেছিল সিনেমাপ্রেমীরা। বন্ধুত্বের এই ছবির গল্প এখনও উদাহরণ হিসেবে উঠে আসে।
'সিলসিলা' ছবিতে অমিতাভ-রেখার প্রেম দেখে দর্শক মুগ্ধ। এই ছবিতে প্রথম দর্শক একসঙ্গে পেয়েছিলেন অমিতাভ-রেখা ও জয়া বচ্চনকে। এ এক অন্য অভিজ্ঞতা। শোনা যায় রিয়েল লাইফেও এমন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল অমিতাভকে।
সারা দুনিয়াকা বোঝ হাম উঠাতে হ্যায় ...কুলির সাজে অমিতাভ বচ্চন, মাথায় প্রচুর ব্যাগ নিয়ে চলেছেন, গাইছেন গান। ১৯৮৩-র এই ছবি সুপারহিট হয়। সেই সময় ১৮ কোটির ব্যবসা দিয়েছিল।
অগ্নিপথ ছবির বিজয় দিননাথ চৌহানকে কি কেউ ভুলতে পেরেছ, ওই লুক ওই চেহারা..লাজবাব
ঠাকুর ভানু প্রতাপ সিংয়ের চরিত্রে দাগ কেটে গিয়েছিলেন শাহেনশা, তাঁর কণ্ঠে এই ছবির গান শোনা যায় চোরি সে।
২০০০ সালে 'মহাব্বতে' ছবিতে নারায়ণ শঙ্করের চরিত্রে অনবদ্য তাঁর অভিনয়। এক জেদি বাবা, কঠোর গুরু যিনি শেষ পর্যন্ত মেয়ের জন্য হার স্বীকার করেন, শাহরুখ অমিতাভ জোড়িকেও বেশ পছন্দ করেছিলেন দর্শক।
'বাগবান' ছবির মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের কাছে বাবা মায়েরা যখন বোঝা হয়ে যান, কীভাবে সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, কী করা উচিৎ, সমাজের কাছে যেন প্রশ্ন তুলে দিয়ে যান।
'ব্ল্যাক' ছবিতে তিনি মাস্টার, তিনি দেবরাজ সাহানি। জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন বিগ বি। তিনি তখন ক্লাউড নাইনে।
'পা' ছবির মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। প্রস্থেটিক মেকআপে কী করা যায় তারই দৃষ্টান্ত এই ছবি। ছেলের ছেলে হয়ে চিনিয়ে দেন তিনি কোন জাতের অভিনেতা।
'পিকু' ছবিতে দীপিকার বাবা ভাস্কর ব্যানার্জি, যাঁর পেটের সমস্যা আছে। নিষ্পাপ একটি চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন কলকাতার বুকে। ইরফান এবং দীপিকার সঙ্গে তাঁর দৃশ্য চিরকালীন হয়ে থাকবে সকলের কাছে।
'পিঙ্ক' ছবির পর 'বদলা'-য় তাপসী পান্নোর সঙ্গে আবারও তাঁর টক্কর। যেন মনে হল তিনি ময়দানে নেমেছেন গোল হাঁকাতে।
'গুলাব সিতাবো' ছবিতে মিরজা নবাব, এই বয়সেও ওই পরিমাণ ভারি মেকআপ করা এবং তোলা, কোনওটাতেই অধৈর্য হন নি বর্যীয়ান এই অভিনেতা। ৫২ বছরের জার্নি চলছে, অ্যান্ড টু বি কন্টিনিউড....