এগারো বছর বয়স থেকে পাহাড়-মাটির জন্য লড়ছেন কুনি সিকাকা
ওড়িশার আদিবাসী তরুণী কুনি সিকাকা। লড়ছেন পরিবেশের জন্য। বাইরে থেকে কোনও তথাকথিত 'অ্যাক্টিভিস্ট'কে আসতে হয়নি এক্ষেত্রে। যেমন সাধারণত হয়ে থাকে। আদিম প্রকৃতিকে রক্ষার জন্য এখানে এগিয়ে এসেছেন এক আদিম কন্যাই। মাটির কন্যা তিনি।
কুনি মাত্র ১১ বছর বয়স থেকে পরিবেশ-প্রকৃতির জন্য লড়ছেন। ডোংরিয়া কন্ধ উপজাতির মেয়ে কুনি তাঁর জনাপাঁচেক সঙ্গীকে নিয়ে এই আন্দোলনে নেমেছেন। 'নিয়মগিরি সুরক্ষা সমিতি'র মাধ্যমে তাঁরা কাজ করেন।
তিনি নিয়মগিরি বনাঞ্চলকে বক্সাইট মাইনিং থেকে রক্ষা করতে সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু সভ্য জগৎ কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই সন্ত্রাসের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে। গায়ে তাঁর দেগে দিয়েছে 'মাওয়িস্ট' তকমাও।
পুলিসের দাবি, নিয়মগিরির উপরে গর্তা নামক গ্রাম থেকে 'মাওবাদী' তালিকায় থাকা কুনি ও তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতার করা হয়। শুধু কুনিকেই নয়, পুলিস কুনির শ্বশুর, স্বামী-সহ আরও জনাতিনেক আত্মীয়স্বজনকে মাওবাদী প্রমাণ করে ছাড়ে। বলা হয়েছে, কুনি ও তাঁর সহযোগীরা নাকি মাওবাদী কাজকর্ম পরিত্যাগ করে জীবনের মূলস্রোতে ফিরতে চেয়ে পুলিসের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন!
আসলে রায়গাদা এবং কালাহান্ডি জেলা বক্সাইটে ভরা। অ্যালুমিনিয়ামের র-মেটেরিয়াল। এখানে মাইনিং করে বক্সাইট নিষ্কাশন করা হবে। কিন্তু এই নিয়মগিরিতে ডোংরিয়া কন্ধ উপজাতির দশহাজার সদস্যের বসবাস। এঁরা দেবতাজ্ঞানে পাহাড়কে পুজো করেন। পাহাড় ফাটাতে তাঁরা দেন কোন প্রাণে? ফলে সেই ২০০৪ সাল থেকে তাঁরা ভূমিরক্ষায় নেমে পড়েছেন।
কিন্তু পুলিস 'মাওবাদী' দাগিয়ে তাঁদের ধরে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের 'অসামাজিক' কাজকর্মে জড়িয়ে না পড়ার পরামর্শ দেয়। প্রলোভনও থাকে। বলা হয়, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা সাধারণত যেসব সুযোগ-সুবিধা রাষ্ট্রের কাছ থেকে পেয়ে থাকে, তাঁরা তা পাবেন।