Jalpaiguri: গাছেদের বিয়ে! গায়ে হলুদ-কন্যাদান, এ এক আশ্চর্য বিবাহ অভিযান...
অরূপ বসাক: কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়...! বাংলা চলচ্চিত্রে হীরক রাজার দেশে এই বিখ্যাত গানটি আজও অমলিন। সত্যি সত্যিই কতইনা রঙ্গ দেখা যায় সমগ্র বিশ্বজুড়ে।
এবারে বিয়ের আসরে আস্ত দুই গাছ। বট ও পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজন করল এলাকাবাসী। মালবাজার শহরের পাল পাড়ায় অবস্থিত কৃষিবিভাগের ব্লক বীজ খামারের ভেতরে থাকা বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী। বিয়ে দেখতে ভিড় জমালেন এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে অনেকেই। একেবারে হিন্দু শাস্ত্রমতে অনুষ্ঠিত হয় বট ও পাকুর গাছের বিয়ে। শাস্ত্রে বর্ণিত আছে ধর্মবৃক্ষ বট ও পাকুড়ের বিবাহ দর্শন মাত্রই মঙ্গল'- এজন্য তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
মাল ব্লক বীজ খামার চত্বরে পাশাপাশি অবস্থান করছে বট ও পাকুড়গাছ। হিন্দু রীতি আচার মেনে এদিন বিয়ের আয়োজন করা হয়। রীতিমতো কলসে করে জল এনে গায়ে হলুদ মেখে প্রথমে বট ও পাকুড় গাছকে স্নান করানো হয়। তারপর টোপর পরিয়ে বিয়ের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বিয়েকে কেন্দ্র করে ভিড় জমান এলাকার বাসিন্দারা। বট ও পাকুড়ের বিয়ে দেখতে মহিলা পুরুষ সকলেই উপস্থিত হয়েছিলেন। শুধুমাত্র বিয়ের মন্ত্রচারণাই নয় বিয়েকে কেন্দ্র করে যাবতীয় রীতি আচার মেনে এদিনের বট ও পাকুড়ের বিয়ে দেন সকলে।
শুধুমাত্র বিয়ে নামই নয়। রীতিমত মানুষের বিয়ের মতোই করা হয়েছে যাবতীয় আয়োজন। হিন্দু সমাজের ব্রাহ্মণ এবং পূজারী দিয়ে সারা হয় বিয়ের মূল অনুষ্ঠান। শহরের পুরোহিত কৃষ্ণ কমল চক্রবর্তী ও সম্রাট ভট্টাচার্য বিয়ের মূল দায়িত্বে ছিলেন।
কনে গাছের পক্ষে (পাকুড় ) কন্যাদান করেন মায়া বারুই। অপরদিকে বট গাছের পক্ষে ছিলেন সীমা বিশ্বাস। প্রসঙ্গত উভয়ই জানালেন, মনস্কামনা পূরণের লক্ষ্যে আজকের এই বট ও পাকুড়ের বিয়ের আয়োজন। .এদিনের এই বিয়ের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বরযাত্রী ও কন্যা যাত্রীর আগমন ঘটেছিল। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে শংকরী বণিক, ছবি বণিক,ছায়া পাল, রুমি অধিকারী বণিক, কমল দত্ত প্রমুখ উপস্থিত হয়েছিলেন।
বিয়েকে কেন্দ্র করে এলাকায় দারুন সারা পড়ে। বিয়ে প্রসঙ্গে পুরোহিত কৃষ্ণ কমল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বহুদিন থেকেই বট ও পাকুড়ের বিয়ের রীতি রয়েছে। সাধারণ মানুষ তাদের মনস্কামনা পূরণের লক্ষ্যে বট পাকুরের বিয়ে দিয়ে থাকেন। প্রসঙ্গত জানা গেছে বিগত দিনেও এই অঞ্চলে বট ও পাকুরের বিয়ের আয়োজন হয়েছিল।