দিল্লিতে ধূলিসাত্ বিজেপি, জেনে নিন আপের জয়ের পেছন ৫ ফ্যাক্টর
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পথে আম আদমি পার্টি। এখনও পর্যন্ত পাওয়া প্রবণতা অনুযায়ী আপ এগিয়ে রয়েছে ৬৩ আসনে। বিজেপি সামান্য উন্নতি করে এগিয়ে রয়েছে ৭ আসনে। তবে টানা ২০ বছর ধরে বিজেপির দিল্লি দখলের লড়াই এবারও শেষ হল না। আপের দাবি, কাজের জন্যই ভোট পেয়েছে তারা। কিন্তু দেখে নেওয়া যাক আপের এই সাফল্যের পেছনে ৫ ফ্যাক্টক।
সুশাসন: আপের এই সাফল্যের পেছনে প্রধান কারণ সুশাসন। এবার আপের প্রচারই ছিল, কাজ করলে ভোট দিন। তা নইলে নয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে কাজ করে মানুষের নজর কাড়তে পেরেছে আপ। ফ্রিতে বিদ্যুত, ঘরে ঘরে জল সরবারহ, মহল্লা ক্লিনিক মন জয় করেছে মানুষের।
প্রচারে সংযম: নির্বাচনের প্রচারে বিশাল বাহিনী নামিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। ২৫০ তাবড় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নেতাকে নামানো হয়েছিল ময়দানে। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশই যেভাবে আলপটকা মন্তব্য করে গিয়েছেন তা চোখে ঠেকেছে মানুষের। তা সে অনুরাগ ঠাকুরই হোক কিংবা আদিত্যনাথ। এমনই অমিত শাহ একের পর এক কুকথা বলেছেন। কখনও বলা হয়েছে দিল্লির নির্বাচন ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ। এমনকি, বিজেপি নেতা এটাও বলেছেন, শাহিনবাগের লোকজন ঘরে ঢুকে মহিলাদের সম্ভ্রম নষ্ট করবে। অন্যদিকে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিজেপি আক্রমণের মুখে রেগেছেন বটে তবে নিজের সবসময় ‘আপনাদের বেটা’ বলে তুলে ধরেছেন। এসব ছোট ছোট ব্যাপার নজর কেড়েছে।
হিন্দুত্ব ফেল!: গত কয়েক বছরে বিজেপির পক্ষে হিন্দুত্ব কাজ করলেও এবার তা হয়নি। অথছ হাতে ছিল এনআরসির মতো ইস্যু। কংগ্রেসও হালকা হিন্দুত্বের দিকে ঝুঁকেছিল। কিন্তু তারাও ব্যর্থ। এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সফল হয়েছেন কেজরী। গত বিধানসভা নির্বাচনে জামা মসজিদের শাহি ইমামের সমর্থন সরাসরি প্রত্যাক্ষান করেছিলেন কেজরি। এবারও তার কোনও ছোঁয়া রাখেননি। বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে কিছুটা হিন্দু বলেই তুলে ধরার চেষ্টা করেন কেজরী।
দিল্লির মধ্যবিত্ত : দিল্লির মধ্যবিত্ত ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ফেলতে পেরেছে আপ। বিভিন্ন রকম ফ্রি দিয়ে তাদের দরজায় পৌঁছতে পরেছিলেন আপ প্রধান। পাশাপাশি প্রকাশ্যে তিনি এমনও বলেছেন, কেন্দ্রে মোদী ও দিল্লিতে কেজরী-এমনটাই ঠিক করে ফেলেছে মানুষ। খুব কায়দা করেন কেজরী মানুষের মনে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন, অসুস্থ হলে বিজেপি চিকিত্সার ব্যবস্থা করবে না, বিদ্যুত ফ্রি দেবে না। এনআরসি নিয়ে কী হবে!
কংগ্রেস ফ্যাক্টর: গত নির্বাচনে বিজেপির খারাপ ফল করলেও কেজরীওয়াল সম্ভবত বোঝাতে পেরেছিলেন দিল্লিতে আপের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। আঞ্চলিক সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি সর্বভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি যে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে তা তার প্রচার করেছিল আপ। প্রচারে কংগ্রেসকে প্রায় মুছে ফেলেছিল কেজরীওয়ালের দল। এর ফলে কিছু ফ্লোটিং ভোটও এসেছে আপের বাক্সে।