পুজোর আর ১০০ দিন! কুমারটুলি কিন্তু মনমরাই
পুজোর আর ১০০ দিন। কিন্তু স্বস্তিতে নেই কুমারটুলি। থাকবে কী করে? বায়না নেই যে! ফলে অ্যাডভান্সের কোনও বালাই নেই। অতএব হাতে টাকা নেই। আর সংসার চলার উপায়ও নেই। তাই করোনার চোখ রাঙানির মধ্যেও এক অংশের বাঙালি পুজোর কাউন্টডাউন শুরু করলেও কুমারটুলি কিন্তু ভুগছে অনিশ্চয়তাতেই।
জানা গিয়েছে, এ শহরের ১৪৫৬টি বারোয়ারি পুজো। এবং প্রায় সাড়ে ৫০০টি বাড়ির পুজো। এই মিলিত পুজোর বরাত নিয়ে অন্যান্যবার পুজোর ১০০ দিনের কাউন্টডাউন যথেষ্ট জমিয়েই শুরু হয় কুমারটুলিতে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে যায় গোটা মহল্লা।
অথচ, আজ ৩ জুলাই হয়ে গেল, আর ক'দিন পরেই রথযাত্রা, এদিকে এখনও সুনসান শিল্পীদের কাজের ঘর। খ্যাতনামা মোহনবাঁশি রুদ্রপালের স্টুডিওতে এখনও কাঠামোর গায়ে মাটির প্রলেপই পড়েনি! যা সত্যিই বিরল ব্যাপার!
আসলে এই আধা-লকডাউনে এবং করোনা-পর্বে সমস্যা তো আর একটা নয়। প্রধান সমস্যা, লোকাল ট্রেন বন্ধ। শিল্পীরা গালে হাত দিয়ে বসে আছেন। শ্রমিক নেই। ঘরে সেই পরিমাণ টাকাও নেই, যা দিয়ে লকডাউনের দুর্মূল্য বাজারে নিজেরাই প্রতিমা তৈরির সরঞ্জাম কিনে, শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি মিটিয়ে, প্রতিমা রেডি করে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা বসে থাকা যাবে।
শেষ পর্যন্ত বিধিনিষেধের বেড়াজালে যদি সেভাবে পুজোই না আয়োজিত হয়? সে ক্ষেত্রে তো ডাকসাইটে পুজো কমিটিগুলিও নমো-নমো করে ছোট প্রতিমায় পুজো সারবে। তখন এত কষ্ট করে তৈরি করা বড় প্রতিমার ভবিষ্যত্ কী হবে? ভেবেই শঙ্কিত গোটা কুমোরপাড়া।
জানা গিয়েছে, কুমারটুলিতে এই মুহূর্তে মোট ২৩৫ জন মৃৎশিল্পী আছেন। অনুসারী শিল্প, যেমন জরির কাজ, শোলার কাজ, মাটি বাহক, মাটি মিশ্রণকারী মিলিয়ে এই শিল্প থেকে অন্তত ১২০০টি সংসার চলে। কিন্তু সব ক'টি সংসারেই এবারে শঙ্কার ছায়া, ভয়ের ভবিষ্যত্, শুকনো মুখ।