Khudiram Bose Death Anniversary: `একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি`

Soumitra Sen Wed, 11 Aug 2021-7:59 pm,

ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যাঁরা জীবনের জয়গান তাঁদের মধ্যে সম্ভবত সব চেয়ে আলোচিত সদ্যতরুণ ক্ষুদিরাম বসু। যাঁর ফাঁসি গোটা ভারতকে আলোড়িত করেছিল। আজ তাঁর ১১৩তম মৃত্যুদিন। সমাপতনও বটে যে, আর ক'দিন পরেই যে-স্বাধীনতা দিবস আসছে এ বছর তা পা দিচ্ছে ৭৫ বছরে। 

ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কে হেমচন্দ্র কানুনগো লিখেছেন, ক্ষুদিরামের সহজ প্রবৃত্তি ছিল মৃত্যুর আশঙ্কা তুচ্ছ করে দুঃসাধ্য কাজ করা। তাঁর স্বভাবে নেশার মতো অত্যন্ত প্রবল ছিল সাহস। সত্যিই তাই। এই সাহসের জোরেই তিনি ভয়ঙ্কর সব কাজ অবলীলায় করতেন। 

ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ত্রৈলোক্যনাথ বসু, মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। ক্ষুদিরামের বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তিনি তাঁর মাকে হারান। এক বছর পর তাঁর বাবারও মৃত্যু হয়। তিনি তাঁর বড়দিদি অপরূপার কাছে মানুষ হন।  

ছোট থেকেই ক্ষুদিরাম ব্যতিক্রমী। বয়সের চেয়ে যেন বেশি পরিণত। দুর্জয় তাঁর সাহস। দেশের প্রতি তীব্র ভালবাসা এবং ব্রিটিশের প্রতি তীব্র ঘৃণা তাঁর মধ্যে একসঙ্গে জেগে উঠেছিল। তিনি বিবেকানন্দের রচনার দ্বারা দারুণ প্রভাবিত ছিলেন। ১৯০২-১৯০৩ সালে অরবিন্দ এবং সিস্টার নিবেদিতা মেদিনীপুর ভ্রমণ করেন। তাঁরা সেখানে জনসমক্ষে বক্তব্যও রাখেন। বিপ্লবী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে অধিবেশনও করেন। তখন কিশোর ছাত্র ক্ষুদিরাম এই সব বিপ্লবী আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন বলে জানা যায়।

ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যার দায়িত্ব পড়েছিল ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকীর উপরে। এই কিংসফোর্ডের হাতেই ছিল ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত এবং 'যুগান্তর' মামলা। এই মামলার বিরুদ্ধে প্রচারে অংশ নেওয়ায় সুশীল সেনকে চাবুক মারার সাজা দিয়েছিলেন কিংসফোর্ড। জাতীয়তাবাদীদের কাছে কুখ্যাতি ছিল কিংসফোর্ডর। রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতি কঠোর বাক্য প্রয়োগ করতেন। তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতনও চালাতেন।

কিন্তু কিংসফোর্ডকে গুপ্তহত্যার কাজে সফল হলেন না ক্ষুদিরাম। মুজফফরপুর থেকে ২৫ মাইল হেঁটে ওয়াইনি নামের এক স্টেশনে পৌঁছন ক্ষুদিরাম। এক চায়ের দোকানে তিনি এক গ্লাস জল চান। তখনই দু'জন কনস্টেবল তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। বিপদ বুঝে ক্ষুদিরাম নিজের কাছে থাকা রিভলভার দিয়ে লড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত পেরে ওঠেন না। ধরা পড়েন।

 বিচার শুরু হয় ক্ষুদিরামের। বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। কারাগারে তিনি সব সময় গীতা পড়তেন। ফাঁসির দিনেও এতটুকু ভেঙে পড়েননি। আক্ষরিক অর্থেই হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এই আত্মদান দেশের পরবর্তী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে তীব্র ভাবে প্রভাবিত করেছিল।  

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link