ভারতসেরা! ৩১ রাজ্যের ৮০০ আবেদনের সঙ্গে লড়ে `বেস্ট ট্যুরিজম ভিলেজ অফ ইন্ডিয়া` বাংলার কোন গ্রাম?

Soumitra Sen Thu, 21 Sep 2023-4:32 pm,

কিরীটেশ্বরী শক্তিপীঠগুলির অন্যতম। মুর্শিদাবাদের 'কিরীটকণা' বা 'কিরীটকোণা' গ্রামে অবস্থিত এটি। বর্তমান মন্দিরটি বেশি পুরানো নয়। লালগোলার রাজা ভগবান রায় আকবরের থেকে এই মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। প্রাচীন মন্দিরটি ভেঙে পড়লে ১৯ শতক নাগাদ লালগোলার সেই সময়কার রাজা দর্পনারায়ণ রায় নতুন মন্দির নির্মাণ করান। দর্পনারায়ণ ছিলেন ভগবান রায়েরই বংশধর।

এখানে সতীর 'কিরীট' অর্থাৎ মুকুটের কণা পড়েছিল। তাই দেবীকে 'মুকুটেশ্বরী' বলেও ডাকা হয় এখানে। যেহেতু এখানে দেবীর কোনও অঙ্গ পতিত হয়নি, তাই এই স্থানটিকে অনেকে 'পূর্ণ পীঠস্থান' না বলে 'উপপীঠ' বলেন। তবে তাঁরা যা-ই বলুন না কেন, সাধারণ ভক্তের মনে এই পীঠের গুরুত্বে কোনও টোল পড়েনি। জানা যায়, রাজা রামকৃষ্ণ রায়ের মতো সিদ্ধতান্ত্রিক এখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন। 

নিয়মমতো এখানে যথারীতি দেবীর ভৈরবও আছেন। এখানে ভৈরবের নাম 'সংবর্ত'। তবে 'সংবর্ত' বলে যে মূর্তিটি পূজা করা হয়, বলা হয় সেটি আসলে একটি বুদ্ধমূর্তি। যা রাঢ়ের এই অঞ্চলের সঙ্গে বৌদ্ধসংস্কৃতির প্রাচীন সম্পর্কের পরিচয় দেয়।

মন্দিরে অবশ্য দেবীর কোনও প্রতিমূর্তি নেই, একটি উঁচু পাথরের উপর বেদী আছে; এই বেদীর উপর বেদীর মতোই একটি ছোট প্রস্তরখণ্ড আছে, যা দেবীর কিরীট বলে পুজো করা হয়। 

কিরীটেশ্বরী মন্দিরের চারিদিকে অনেক ছোট-ছোট মন্দির আছে; এর মধ্যে একটি চারচালা মন্দিরকে সপ্তদশ শতকের তৈরি বলে মনে করা হয়। 

কথিত আছে, মুর্শিদাবাদের নবাব মিরজাফর আলি খান কুষ্ঠরোগগ্রস্ত হলে শেষজীবনে তাঁর হিন্দু দেওয়ানের পরামর্শে কিরীটেশ্বরী দেবীর চরণামৃত পান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। এই মন্দির বাংলার আবহমান হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ও সহাবস্থানের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত। পৌষ মাসের প্রতি মঙ্গলবার দেবী কিরীটেশ্বরীর মেলা বসে এখানে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কিরীটেশ্বরী মন্দির যেখানে অবস্থিত সেই গ্রামকে 'বেস্ট ট্যুরিজম ভিলেজ অফ ইন্ডিয়া' হিসেবে ঘোষণা করেছে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক! ৩১টি রাজ্য থেকে আসা ৭৯৫টি আবেদনের মধ্যে নির্বাচিত হয়েছে কিরীটেশ্বরী। ২৭ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে রাজ্যের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link