USA | T20 World Cup 2024: অবিশ্বাস্য ঘটনা! আমেরিকার অর্ধেক দখল নিল ভারত...
জো বাইডেনের দেশে রমরমিয়ে চলছে টি-২০ বিশ্বকাপ। কাপযুদ্ধে ব্য়াক-টু-ব্য়াক জয় পেয়েছে অন্য়তম আয়োজক দেশ আমেরিকা। প্রথম ম্য়াচে কানাডাকে হারিয়ে মোনানক প্য়াটেলের দেশ। দ্বিতীয় ম্য়াচে তারা বাবর আজমের পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে। এখন টেবলের শীর্ষে আমেরিকা। জানেন কি এই আমেরিকা দলে এক-দু'জন নয়, আটজন ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা 'ভারতীয়'! বলতে গেলে অবিশ্বাস্য ঘটনা! আমেরিকার অর্ধেক দখল নিয়েছে ভারত। এই প্রতিবেদনে রইল সেসব ক্রিকেটারদের নাম।
১৯৮৩ সালের ১ মে গুজরাতের আনন্দে মোনাঙ্ক প্য়াটেলের জন্ম এক ব্যবসায়ী পরিবারে। তাঁর পরিবার আমেরিকা চলে আসে। এখানেই তাঁর ক্রিকেট যাত্রা শুরু হয়। তিনি ২০১৮ সাল থেকে জো বাইডেনের দেশের হয়েই পেশাদার ক্রিকেট খেলছেন। একজন টপ-অর্ডার ব্যাটারের পাশাপাশি উইকেটকিপার তিনি। মোনাঙ্ক গুজরাতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৮ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেছেন।
হরমীত সিং ১৯৯২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মুম্বইতে জন্মগ্রহণ করেন। দেখতে গেলে ভারতের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের হাত ধরেই তাঁর পথচলা। মুম্বইয়ের পাশাপাশি ত্রিপুরাতেও খেলেছেন তিনি। ২০১২ সালে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন। এমনকী ২০১৩ সালে রাজস্থান রয়্য়ালসের হয়ে আইপিএলও খেলছেন। ২০২১ সালে আমেরিকায় পাড়ি দিয়ে হরমীত স্থানীয় ক্লাব ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। চলতি বছর মার্চে আমেরিকার হয়ে করেন আন্তর্জাতিক অভিষেক।
মিলিন্দ কুমার ভারতীয় বংশোদ্ভূত আরেক খেলোয়াড়। ১৯৯১ সালে দিল্লিতে জন্মাম তিনি। দিল্লি এবং সিকিমের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (অধুনা দিল্লি ক্য়াপিটালস) এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলেছেন। ২০২১ সালে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। মিলিন্দ মেজর লিগ ক্রিকেটও খেলেছেন।
৩১ বছর বয়সী পেসার জেসি সিংও ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার। যিনি ১৯৯৩ সালে নিউ ইয়র্কে জন্মান। ২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আত্মপ্রকাশ করেন এবং তারপর থেকে তিনি দেশের হয়ে পেশাদার ক্রিকেট খেলেছেন। ইতিমধ্যে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে আমেরিকার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও এমএলসি, সিপিএল এবং জিটি২০ লিগেও অংশ নিয়েছেন।
গুজরাতের আহমেদাবাদে জন্মান নিসর্গ প্যাটেল। তিনি একজন স্পিন-বোলিং অলরাউন্ডার। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে তাঁর লিস্ট এ ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ২০১৯ সালে ইউএসএ-র হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলেন। এখনও পর্যন্ত নিসর্গ তাঁর কেরিয়ারে ৪১টি ওডিআই এবং ২০ টি টি-টোয়েন্টিআই ম্য়াচে খেলেছেন।
নীতীশ কুমারের গল্পটা বেশ অন্য়রকম। তিনি ১৯৯৪ সালে ওন্টারিয়োতে ইন্ডিয়ান-কানাডিয়ান পরিবারে জন্মান। জানলে অবাক হবেন যে, তিনি কানাডার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন। ২০১৬ সালে অধিনায়ক হন। ২০১১ সালে কানাডার হয়ে বিশ্বকাপও খেলেছেন। ২০২১ সালে তিনি এমএলসি খেলেন। এরপর দেশে বদলে হয়ে যান আমেরিকার।
নোসথুসা প্রদীপ কেনিজি আমেরিকার আলবামায় ১৯৯১ সালে জন্মান। এরপর ২০১৫ সালে তাঁর পরিবার চলে আসে বেঙ্গালুরুতে। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্য়ালয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেছেন। এরপর আবার নোসথুসার আমেরিকায় ফেরেন। তিনি ল্য়াব টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ শুরু করেন। স্পিনিং অলরাউন্ডার ৪০টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ও ৪টি টি-২০ আই খেলেছেন।
১৯৯১ সালের ১৬ অক্টোবর মুম্বইতে জন্মান সৌরভ। জন্মসূত্রে তিনি ভারতীয়। এমনকী ২০১০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তিনি ভারতের জার্সিতেই খেলেছেন। যে কোনও পিচে সৌরভের পেস ও বাউন্স আলাদাই কথা বলে। সৌরভ রঞ্জিও খেলেছেন মুম্বইয়ের হয়ে। কেএল রাহুল, ময়াঙ্ক আগরওয়াল, হর্ষল প্য়াটেল, জয়দেব উনাদকাট ও সন্দীপ শর্মা তাঁর সতীর্থ ছিলেন। বোঝাই যাচ্ছে সৌরভের সঙ্গে ভারত এবং ভারতীয় ক্রিকেটারদের কানেকশন ঠিক কেমন! একটা সময়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটে নিজের ভবিষ্য়ৎ দেখতে না পেয়ে সৌরভ চলে যান আমেরিকায়। বেছে নেন পড়াশোনা। কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স করেন। এমএ ডিগ্রি হাতে নিয়েই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দুরন্ত চাকরি বাগিয়ে নেন 'ওরাকল'-এ! বিশ্বের প্রথম সারির টেক ফার্মের মধ্য়েই পড়ে ওরাকল। একডাকেই চেনেন সকলে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি ক্রিকেটার হিসেবেও পাল্লা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন সৌরভ।