বাইবেলেও লেখা আছে পঙ্গপাল খাওয়ার কথা! চাষীদের শত্রু পোকা নাকি খেতে দারুন
ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল। ফসল নষ্ট করায় এই পোকার জুড়ি মেলা ভার। ভারতের একাধিক রাজ্য এখন পঙ্গপালের আতঙ্কে কাঁপছে। পাকিস্তানের সীমানা পেরিয়ে লাখ লাখ পঙ্গপাল ঢুকেছে ভারতে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের চাষীদের মাথায় হাত। বহু টাকার ফসল নষ্ট করে দিতে পারে পঙ্গপালের দল।
বিশ্বের বহু দেশ পঙ্গপালের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তবে পঙ্গপাল নাকি খেতে দারুণ। চাষীদের এই শত্রু পোকা প্রোটিনের আধার। ভেজে খেলে খেতেও নাকি অসাধারণ। বাইবেলেও মধু দিয়ে পঙ্গপাল খাওয়ার কথা লেখা রয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে এখনও পঙ্গপাল খাবার হিসাবে গ্রহণ করা হয় না। ভারতে তো প্রায় হয় না বললেই চলে। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশ পঙ্গপালের রেসিপি তৈরি করে। মধ্য প্রাচ্য, আফ্রিকার অনেক দেশেই পঙ্গপাল খাওয়ার রীতি রয়েছে।
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্ব দিকে উত্তর কিভুর রাজধানী গোমায় পঙ্গপাল খাবার হিসাবে দারুন জনপ্রিয়। রুক্ষ এই অঞ্চলে বহু মানুশ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। তাঁদের খাদ্যাভাসে তাই বিভিন্ন পোকা জায়গা পেয়েছে। ঝিঝি পোকা, গঙ্গাফড়িং, মথের লার্ভা, পঙ্গপাল বাজারে বিক্রি হয়। পঙ্গপালের রেসিপি সেখানে সব থেকে বেশি জনপ্রিয়। মুচমুচে করে ভেজে বা সেদ্ধ করে অথবা ভাপা। পঙ্গপাল অনেকভাবেই নাকি রান্না করা যায়।
অমেরুদণ্ডি সন্ধিপদ পঙ্গপালের আবার অনেক প্রজাতি রয়েছে। তবে মূলত ডেজার্ট লোকাস্ট দেশে দেশে ঘুরে বেড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম পঙ্গপালে প্রায় ১৩-২৮ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যাবে। ডেসার্ট পঙ্গপালের প্রতি ১০০ গ্রামে ফ্যাট রয়েছে ১১.৫ গ্রাম। কোলেস্টেরল ২৮৬ মিলিগ্রাম। ফ্যাটি অ্যাসিডও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। শরীরে থাকা ক্ষতিকর ব্যকটেরিয়াকে মারতে সাহায্য করে পঙ্গপাল। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
পোকা খাওয়ার অভ্যাসকে বলা হয় এন্টোমোফ্যাগি। বিশ্বের বহু দেশে পোকা খাওয়ার চল রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির পোকার মধ্যে চিটিন জাতীয় একপ্রকার ফাইবার রয়েছে। এই ফাইবার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজারেরও বেশি প্রজাতির পোকা খেয়ে থাকে মানুষ।