EXPLAINED | Most Haunted Railway Stations In India: রাতে কনস্টেবলের আত্মা... দেশের ৮ হাড়হিম স্টেশনের মধ্যে বাংলারই ২! যাওয়ার সাহস আছে?
২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর, নিউ দিল্লি-কেরালা ট্রেনে, হরি সিংয়ের উপর কয়েকজন আরপিএফ ও কিছু টিটি চড়াও হয়েছিলেন। তাঁকে বেধড়ক মারধর করে স্টেশনে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এরপর চেন্নাইয়ের এক হাসপাতালে তিনি মারা গিয়েছিলেন চোটের কারণে। চিতোরের মানুষ বিশ্বাস করেন যে আজও এই স্টেশনে সিআরপিএফ কনস্টেবল হরি সিংয়ের আত্মা রেলস্টেশনে ঘুরে বেড়ায় সুবিচারের আশায়। স্থানীয়রা রাতের দিকে ভুলেও এই স্টেশন মাড়ান না। কারণ অন্ধকারেই তাঁরা টের পেয়েছেন হরির উপস্থিতি।
হিমাচল প্রদেশের এক ছোট্ট শহর বরোগ। কালকা-সিমলা রেল রুটের দীর্ঘতম টানেলের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ভারতের সবচেয়ে ভুতুড়ে রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে একটি। ব্রিটিশ রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার কর্নেল বরোগকে ৩৩ নম্বর টানেল নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু ভুল গণনার কারণে তিনি ব্যর্থ হন। এরপরে তাঁকে তার সহকর্মীদের সরকার তিরস্কার করেছিল। এই অপমান সহ্য় করতে না পেরে বরোগ সাহেব তাঁর কুকুরের সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়ে এই সুড়ঙ্গেই গুলি করে নিজেকে শেষ করেছিলেন। সুড়ঙ্গের খুব কাছেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। আশ্চর্যজন বিষয় হল যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কেউ সেই কবরটি সনাক্ত করতে পারেননি। মৃত্যুর পরেও বরোগ সাহেব এই জায়গা ছেড়ে যাননি। জানা যায়, যাঁরা তাঁকে চেনেন না, বরোগ শাহেবের আত্মা তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান।
মহারাষ্ট্রের ডোম্বিভিলি রেলওয়ে স্টেশনে নাকি এক মহিলাকে কাঁদতে দেখা যায়, যে চেয়েও নিজের বাড়ি ফিরতে পারে না আর! জানা যায় সেই মহিলার এই স্টেশনেই কোনও এক রেল দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল। বহু মানুষ এখানে অদ্ভুত নেতিবাচক শক্তির উপস্থিতির টের পেয়েছেন। ভারতের এই ভুতুড়ে রেলস্টেশনেও মহিলার হাহাকার শোনা যায়।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের কাছে নৈনি জেলের খুব কাছে নৈনি রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। স্থানীয়রা বলেন, সেই কারাগারের নির্যাতিত রাজনৈতিক বিপ্লবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা তাঁরা স্টেশনে দেখেছেন। শান্তির সন্ধানে ঘুরে বেড়ানো সেই প্রেতাত্মা কখনও কারোর ক্ষতি না করেনি বলেই জানা যায়। তবে তাঁদের কষ্ট অনুভব করা যায়।
আপনি চাকরি ভালোবেসে কতদূর যেতে পারবেন? লুধিয়ানা জংশনের এক প্রাক্তন কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেম অফিসার, তাঁর কাজের প্রতি এতটাই দায়বদ্ধ ছিলেন যে, তিনি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও এখানেই রয়ে গিয়েছেন। স্থানীয়রা বলেন যে, ২০০৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পরেও, তাঁর আত্মাকে ওই অফিস ঘরে বসে থাকতে দেখেছেন। জানা যায় যে ওই ঘরে বসার চেষ্টা করেছে, তাঁর জীবনে হয়ে গিয়েছে বিরাট ক্ষতি।
এক মহিলার যন্ত্রণায় কান্নাকাটি করার আওয়াজ শোনা যায়। এই রেলস্টেশনের মধ্য দিয়ে যাওয়া মানুষকে সেই আত্মা অস্থির করে দেয়। শুধু তার কান্নাই শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বইয়ে দেয় না, অনেক মানুষ এই স্টেশনের চারপাশেও কিছু অস্থির করা শব্দ শুনতে পেয়েছেন।
পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশনের ভূতুড়ে গল্প বহুপ্রচলিত। পুরুলিয়া স্টেশন থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরে ঝালদা এবং কোটশীলার মাঝে এই বেগুনকোদর স্টেশন। প্রায় অর্ধশতক ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল স্টেশনটি। ট্রেন আসে যায় কিন্তু কোনও যাত্রীর দেখা মিলত না। দিনের বেলায় এই চত্বরে আসতে ভয় পেতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাতে তো কোনও প্রশ্নই ছিল না। কোয়ার্টার, টিকিট কাউন্টার সবই খাঁ খাঁ করত সেখানে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বহু বছর আগে স্টেশন মাস্টার এবং তাঁর স্ত্রী কুয়োতে ঝাঁপ মেরে আত্মহত্যা করেন। কেউ আবার বলেন, স্টেশন মাস্টারের মেয়েও আত্মহত্যা করেছিল। পরবর্তী সময়ে যাঁরাই এসেছেন বেশিদিন কাজ করতে পারেননি এখানে। দিনের বেলাতেই নাকি অশরীরী আত্মার আনাগোনা অনুভব করতেন তাঁরা। এই ভয়ের অজুহাত দেখিয়ে সবাই বদলি হয়ে চলে যেতেন। সে থেকেই ওই স্টেশনের নাম হয়ে গিয়েছিল 'ভূত স্টেশন'।
রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনকে ঘিরে রয়েছে প্রচুর ভুতুড়ে গল্প। শেষ ট্রেনের যাত্রীরা প্রায়ই কোনও ছায়া দেখতে পান। স্টেশনে মহিলাদের আর্তনাদ শোনা গিয়েছে বলেও অনেকের মত। ভয়ংকর ঘটনা এখানেই শেষ নয়, কেউ কেউ আবার নাকি মেট্রোর অপেক্ষায় তাঁদের শরীরে গরম নিঃশ্বাস অনুভব করেছেন। তবে পিছনে ফিরে কাউকে দেখতে পাননি তাঁরা। স্টাফ এবং চালকরাও ট্র্যাকের উপর শরীর ভাসতে দেখেছেন! দেশের সবচেয়ে ভুতুড়ে রেলস্টেশনগুলির মধ্যে৷