লোকসভায় পদ্ম ফোটানোর দায়িত্বে বাবা, অভিষেকের ঘনিষ্ঠ ছেলে শুভ্রাংশু
কমলিকা সেনগুপ্ত: বাবা বঙ্গ বিজেপির লোকসভা কমিটির প্রধান। লোকসভার রণকৌশল স্থির করবেন তিনিই। অথচ ছেলে তৃণমূলের বিধায়ক। রাজ্য রাজনীতিতে এমন বাবা-ছেলেকে নিয়ে জল্পনা চলছে মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই। শনিবার তা আরও একধাপ এগোল।
এদিন কালীঘাটে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজয় দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করে গেলেন শুভ্রাংশু রায়।
বিজয় দশমীর পরের দিন কালীঘাটে নিজের অফিসে বাইরে বসে দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন তৃণমূলের বিধায়ক তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক যখন জনসংযোগ ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই আসলেন বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। তারপর নেতার সঙ্গে দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর বসলেন পাশের চেয়ারে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দশমীর শুভেচ্ছা জানানোর পর সকলেই চলে গিয়েছেন। তবে অভিষেক যতক্ষণ বসে থাকলেন, তাঁর পাশেই ছিলেন শুভ্রাংশু রায়। অনেকেই বলছেন, সুস্থ হওয়ার পর জনসমক্ষে এসেই স্পষ্ট বার্তা দিলেন শুভ্রাংশ রায়।
গতবছর নভেম্বরে দিল্লিতে গিয়ে মুকুল রায় গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর পর থেকেই তৃণমূলে ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে উঠে গিয়েছিল প্রশ্ন।
শুভ্রাংশু রায় অবশ্য স্পষ্ট করেছিলেন, তৃণমূলেই থাকছেন তিনি। সূত্রের খবর, মুকুলের দলবদলের পর থেকে তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন শুভ্রাংশু রায়।
সম্প্রতি শুভ্রাংশু রায় অসুস্থ হওয়ার পর বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে দেখে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, শনিবার মুকুলপুত্রকে পাশে বসিয়ে আরও একবার তৃণমূল বুঝিয়ে দিল, শুভ্রাংশু এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন। একইসঙ্গে লোকসভা ভোটের প্রচারে যে তাঁকে ব্যবহার করা হতে পারে তারও ইঙ্গিত মিলল বলে মত অনেকের।
বলে রাখি, লোকসভা ভোটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে বড় ভূমিকা পালন করবেন, তা দিন কয়েক আগে কোর কমিটির বৈঠকে বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কারণে অভিষেকের সঙ্গে শুভ্রাংশুর সাক্ষাত্ আরও তাত্পর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে।
তৃণমূল একাধিকবার খোঁচা দিয়েছে, নিজের ছেলেকেই দলে টানতে পারেননি মুকুল রায়। বাবার উপরে ভরসা নেই ছেলের। ঘটনা হল, তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে শুভ্রাংশু বেশি প্রচারে আসলে অস্বস্তি বাড়বে মুকুল রায়ের। ছেলে আড়ালে এই অস্বস্তি ঢাকতে পারতেন বাবা।
রাজ্যে লোকসভা ভোটে বিজেপির দায়িত্বে মুকুল রায়। আর বিজেপির লোকসভা কমিটির প্রধানের মোকাবিলায় শুভ্রাংশুই বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে বলে মত অনেকের।