Exclusive, Jaydev Unadkat: খেলা মাঠে হয়, মুখে নয়! বাংলাকে দু`বার রঞ্জি ফাইনালে হারিয়ে মনোজকে খোঁচা দিলেন উনাদকাট
এই মাঠেই তো বছরের পর বছর ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) হয়ে খেলেছেন ওয়াসিম আক্রমের (Wasim Akram) যোগ্য শিষ্য। বাংলাকে চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগেই লজ্জার হার `উপহার` দিয়ে মাঠের ধারেই শুরু হয়ে গেল সৌরাষ্ট্রের (Saurashtra) সেলিব্রেশন।
সব্যসাচী বাগচী
রাজকোট (Rajkot) হোক কিংবা ইডেন গার্ডেন্স (Eden Gardens), ২০১৯-২০ সালের ফাইনাল হোক কিংবা এবারের রঞ্জি ট্রফি(Ranji Trophy Final 2023) জয়। দুটি বড় ম্যাচেই বল হাতে দাপট দেখালেন। একেবারে যাকে বলে অধিনায়কোচিত পারফরম্যান্স। অবশ্য জয়দেব উনাদকাট (Jaydev Unadkat) যে ইডেনেও নিজেকে মেলে ধরবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক। কারণ, এই মাঠেই তো বছরের পর বছর ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) হয়ে খেলেছেন ওয়াসিম আক্রমের (Wasim Akram) যোগ্য শিষ্য। বাংলাকে চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগেই লজ্জার হার 'উপহার' দিয়ে মাঠের ধারেই শুরু হয়ে গেল সৌরাষ্ট্রের (Saurashtra) সেলিব্রেশন। স্ত্রী রিনি কান্তারিয়াকে (Rinny Kantaria) সঙ্গে চললো ফটোসেশনের পালা। এরপর ক্লাব হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে জি ২৪ ঘন্টাকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন দু'বার রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক। অবশ্য সাক্ষাৎকার লিখলে ভুল হবে, তাই লিখলাম 'বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার'।
প্রশ্ন: অনেক শুভেচ্ছা। তাহলে শেষ পর্যন্ত এবার ফাইনাল খেলতে আসা আপনার সফল হল। রাহুল দ্রাবিড়কে ধন্যবাদ জানাবেন তো?
জয়দেব: অবশ্যই। রাহুল ভাই ও বিসিসিআই কর্তারা আমাকে রিলিজ না করলে তো ফাইনাল খেলতেই পারতাম না। তাই সবার আগে রাহুল ভাইকেই ধন্যবাদ জানাব। তবে আমিও কিন্তু ম্যাচটা খেলতে চেয়েছিলাম। সেই তাগিদ টিম ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পেরেছিল বলেই, আমাকে খেলার অনুমতি দিয়েছিল।
প্রশ্ন: বিপক্ষে বাংলা, ভেন্যু ইডেন গার্ডেন্স ছিল বলেই কি কলকাতায় আসার তাগিদ আরও বেশি ছিল?
জয়দেব: আমাদের প্রথম রঞ্জি জয় বাংলার বিরুদ্ধেই ছিল। এবার সেই একই প্রতিপক্ষ। এরমধ্যে আবার ভেন্যু ইডেন। তাই এবারের ফাইনাল অন্য তাগিদ নিয়ে মাঠে নেমছিলাম। এবং একই বিপক্ষকে দু'বার হারিয়ে আলাদা তৃপ্তি পেয়েছি।
প্রশ্ন: আচ্ছা কোন সময় ভেবেছিলেন যে ম্যাচটা জিততে চলেছেন?
জয়দেব: প্রথম দিনের প্রথম সেশনের সকাল ৯:৩৫ মিনিটেই বুঝে গিয়েছিলাম যে এবারও আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। কারণ খেলাটা মাঠে হয়। মুখে হয় না। সেটা মনোজ ভাইয়ের বোঝা উচিত ছিল।
প্রশ্ন: নিজের বোলিং পারফরম্যান্স নিয়ে কিছু বলুন।
জয়দেব: অধিনায়ক হিসেবে পারফর্ম করার তাগিদ ছিল। তাছাড়া ইডেনের এমন 'গ্রিন টপ' তো জোরে বোলারদের স্বর্গরাজ্য। এমন পিচে তো আগুনে বোলিং করতেই হবে। তবে শুধু আমি নই। পুরো রঞ্জি মরসুম জুড়ে আমাদের বোলিং দারুণ পারফর্ম করেছে। এখনও পর্যন্ত কোনও দল আমাদের বিরুদ্ধে ৩৬০ রান তুলতে পারেনি। আর এখান থেকেই বোঝা যায় যে আমাদের বোলিং কতটা শক্তিশালী।
আরও পড়ুন: MS Dhoni Last Match: ক্রোড়পতি লিগে কবে শেষ ম্যাচ খেলবেন এম এস ধোনি? চলে এল বড় আপডেট
প্রশ্ন: এতটা আত্মবিশ্বাস পেলেন কোথা থেকে?
জয়দেব: দেখুন আত্মবিশ্বাস চলতি মরসুমের প্রথম থেকেই ছিল। আমরা কিন্তু 'টিম' হিসেবে এবার ঘরের পাশাপাশি বাইরেও ম্যাচ জিতেছি। মুম্বই, কর্নাটক, পঞ্জাবের মত দলকে হারিয়েছি। আত্মবিশ্বাস না থাকলে রঞ্জি ট্রফির মঞ্চে পারফর্ম করা একেবারেই সম্ভব নয়। আর তাছাড়া মনোজ ম্যাচের আগে অহেতুক মন্তব্য করে আমাদের জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল।
প্রশ্ন: মনোজ কথা রাখতে না পারলেও, আপনি কিন্তু কথা রাখলেন।
জয়দেব: কোন কথা?
প্রশ্ন: সাংবাদিক বৈঠকে আপনি বলেছিলেন যে, ট্রফি জিতে ভারতীয় দলে ফিরে যাবেন।
জয়দেব: হ্যাঁ, সেটাই আমার লক্ষ্য ছিল। আর সেই লক্ষ্য ও স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। আসলে ভারতীয় ক্রিকেটে এখন সৌরাষ্ট্রের সময় চলছে।
প্রশ্ন: রাজকোটের পর এবারও আপনি একেবারে তেতে ছিলেন। অনুষ্টুপকে আউট করতেই সেটা ফের বোঝা গিয়েছিল। সেই সেলিব্রেশনের বিশেষ কারণ?
জয়দেব: অবশ্যই। ম্যাচ আগাগোড়া আমাদের হাতে থাকলেও, তৃতীয় দিন মনোজ ও অনুষ্টুপ কিছুটা লড়াই করছিল। ওদের জুটি বড় হলে, আমাদের উপর চাপ বাড়তে পারত। আর তাছাড়া অনুষ্টুপ ওদের তারকা ব্যাটার। তাই ওকে আউট করে বাংলা ড্রেসিংরুমের দিকে বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলাম।
প্রশ্ন: রাজকোট না ইডেন, কোন রঞ্জি জয় আপনার কাছে স্পেশাল?
জয়দেব: দুটি রঞ্জি জয় আমার কাছে একইরকম স্পেশাল। কারণ তিন বছর আগে প্রথমবার রঞ্জি জয়ের স্বাদ পেয়েছিলাম। আর এবার সেই একই বিপক্ষকে হারিয়ে ট্রফি জিতলাম। তাই দুটি জয়ের মধ্যে কোনও তফাৎ করতে চাই না।
প্রশ্ন: তাহলে এই ট্রফি চেতেশ্বর পূজারাকেই উৎসর্গ করছেন?
জয়দেব: অবশ্যই আমরা এবারের রঞ্জি জয় চেতেশ্বর পূজারাকেই উৎসর্গ করছি। ১০০তম টেস্ট খেলতে নামলেও, চিন্টু সবসময় সৌরাষ্ট্রের খবরাখবর রাখত। তবে শুধু চিন্টু নয়, রবীন্দ্রও আমাদের পাশে সবসময় থেকেছে।
প্রশ্ন: শেষ তিন বছরে তিনটি ট্রফি। আপনাদের সাফল্যের রহস্য?
জয়দেব: আমরা একজোট হয়ে খেলেছি। আমাদের দলে কেউ সেলিব্রেটি নেই। আমরা সবাই একে অন্যের সাফল্য উপভোগ করি। তাছাড়া আমাদের বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় খুব ভালো পারফর্ম করছি। আর সেটাই আমাদের সাফল্যের রহস্য।