নিজস্ব প্রতিনিধি : ক্রিকেট। এই একটা শব্দ উচ্চারিত হলে তাঁর শরীরের ভিতরে যেন একটা শিহরণ জেগে ওঠে। ক্রিকেটের কথা শুনলে তিনি আর কিছুই শুনতে চান না। মনে মনে চান, সারা দিন সারা রাত যেন তাঁর আশেপাশে ক্রিকেটের কথা উচ্চারিত হতে থাকে। এমন একজন ক্রিকেট অন্ত প্রাণ মানুষ ভারতে ক'জন পাবেন বলুন তো! হলফ করে বলা যায়, সুধীর কুমার চউধরির মতো কাউকে পাবেন না। কারণ, ভারতীয় দলের এরকম একনিষ্ঠ সমর্থক একমাত্র তিনিই। যিনি নিজের জীবন, যৌবন, পরিবার, ধন, সম্পত্তি সব কিছু ত্যাগ করতে পারেন ক্রিকেটের জন্য। ভারতীয় দলের জন্য।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-  অশ্বিন, ইশান্তের ফিটনেস পরীক্ষা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের টেস্ট দল নির্বাচন স্থগিত!


টিম ইন্ডিয়ার খেলা দেখতে গিয়ে অনেকেই হয়তো দেখেছেন সুধীরকে। অনেকেরই চোখে পড়েছে, গ্যালারির কোনও এক জায়গায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে দেশের পতাকা নাড়িয়ে চলেছেন তিনি। সারা গায়ে গেরুয়া-সাদা-সবুজ রঙ করা। শরীরে বড় বড় করে লেখা, মিস ইউ তেণ্ডুলকর। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে সুধীর চেনা-জানা নাম। কিন্তু অনেকেই হয়তো সেই সুধীরের জীবন সংগ্রামের গল্পটা জানেন না। সবাই দেখেন, গায়ে রঙ মেখে সুধীর ভারতীয় দলের প্রতিটা ম্যাচে গ্যালারিতে হাজির থাকেন। কিন্তু সেই গ্যালারি পর্যন্ত পৌঁছতে তাঁকে কতটা কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে তা অনেকের অজানা। সুধীরের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতা তাঁকে ক্রিকেট থেকে দূরে রাখতে পারেনি। একের পর এক কাজ করেছে সুধীর। কিন্তু ক্রিকেটের টানে তার কোনওটাতেই শেষমেশ মন বসেনি। 


আরও পড়ুন-  Asia Cup 2018 : পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ


সুধীর কুমারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কী এবার বিয়ে-টিয়ে করার কথা ভাবছেন? তাতে বেশ লাজুক স্বরে ভারতীয় ক্রিকেটের এই ফ্যান বলেন, ''আমার তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ক্রিকেটের সঙ্গে। ক্রিকেটই আমার স্ত্রী, সন্তান, পরিবার। বাড়ির বড়রা অনেকবার আমাকে ধরে-বেঁধে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যতবারই ব্যাপারটা চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত গড়িয়েছে আমি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছি। আমি এমনিতেও বাড়িতে থেকেছি কম মাঠে থেকেছি বেশি। ক্রিকেটের জন্য আমি একের পর এক কাজ ছেড়ে দিয়েছি। সেখানে বিয়ে করে ক্রিকেটকে ছাড়তে পারতাম না। তাই ক্রিকেটকেই বিয়ে করে নিয়েছি।''


আরও পড়ুন-  ভারতের ড্রয়ে কেঁদে ভাসাল খুদে ফ্যান, ভুবির ফোনে ফিরল মুখে হাসি


এশিয়া কাপে তাঁর যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। কারণ, দুবাই যাওয়ার জন্য টাকা জোগার করতে পারেননি সুধীর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাসিহার মতো উদয় হন আরেক ক্রিকেটপ্রেমী পাকিস্তানের মহম্মদ বশির। তিনিই শেষমেশ সুধীরের দুবাইয়ে থাকা-খাওয়ার টাকা জোগান। দুই পড়শি দেশ পরস্পরের বিরুদ্ধে যতই লড়াই করুক না কেন, এই দুজন কিন্তু পরস্পরের ভাল বন্ধু। আসলে ক্রিকেটই যেন এক করে দিয়েছে ভারতের সুধীর আর পাকিস্তানের বশিরকে।