সব্যসাচী বাগচী: ঋদ্ধিমান সাহা-কে নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় ভারতীয় ক্রিকেট। তাঁকে ভারতের টেস্ট দল থেকে ছেঁটে ফেলার পর থেকে বিতর্ক থামার নাম নেই। বরং একনাগাড়ে বেড়েই চলেছে। তাই তো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একদিনের সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে চুনকাম করে দেওয়ার পরেও, সবাই 'পাপালি'কে নিয়েই রয়েছেন। আর সেইজন্য রবিবাসরীয় ইডেন গার্ডেন্সে সিরিজ জেতার পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে সদ্য প্রাক্তন বানিয়ে দেওয়া উইকেটকিপারকে নিয়ে প্রশ্নের বাউন্সার হজম করতে হল। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলন শুরু হতেই হেড কোচের দিকে ঋদ্ধিকে ছেঁটে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাব যেন রাহুলের কাছে তৈরি করাই ছিল। তিনি টানা বলে বলেন, "আমাদের আলোচনা ও প্রচারমাধ্যমকে জানানোয় আমি আহত নই। ভারতীয় দলে ঋদ্ধির অবদান, ওর পারফরম্যান্সের জন্য আজীবন সম্মান জানিয়ে যাব। তবে আমি কিন্তু দলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ঋদ্ধিকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। কারণ আমার মনে হয় ঋদ্ধি সততা ও স্বচ্ছতা প্রত্যাশা করে। ওর সত্যিটা জানা দরকার। তবে ঋদ্ধি নয়, আমি সব ক্রিকেটারদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করি। এটাই আমার নীতি। কিন্তু আমার সব কথা যে একজন ক্রিকেটারের ভাল লাগবে এর কোনও কারণ নেই। কিন্তু কথা তো বলতেই হবে। কঠিন সত্য হলেও আলোচনা প্রয়োজন। কার্পেটের তলায় সত্য লুকিয়ে রাখা যায় না।" 


আরও পড়ুন: Exclusive: ‘দাদি ভরসা দেওয়ার পরেও বাদ পড়লাম!’ ফের বিস্ফোরক Wriddhiman Saha


জি ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছিল সেটা জানিয়ে ছিলেন ঋদ্ধি। পাপালি তখন বলেছিলেন, "দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ হারের পর রাহুল ভাই আমাকে আলাদা ভাবে একটা ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। সেই সময় আমি ভেবেছিলাম সেই সিরিজে খেলাতে পারেনি বলে কিছু হয়তো বলবে। কিন্তু ওঁর কথা শোনার পর আমি তো আকাশ থেকে পড়েছিলাম! রাহুল ভাই আরও বলেছিল, ‘কীভাবে তোমাকে কথাটা বলব বুঝতে পারছি না। জাতীয় নির্বাচকরা অনেকদিন ধরেই নতুন উইকেটকিপারকে দলে নেওয়ার চিন্তা করছিল। তোমার অভিজ্ঞতা রয়েছে, বয়স কিংবা ফিটনেস কোনও ইস্যু নয়। ৪০টি টেস্ট খেলার পরেও তোমাকে বসে থাকতে হচ্ছে। এটা দেখে খারাপ লাগে। টিম ম্যানেজমেন্ট এখন নতুন রক্ত চাইছে। তাই শ্রীলঙ্কা সিরিজে তুমি দলে না থাকলে প্লিজ মন খারাপ করো না। বরং চাইলে অন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতেই পারো!"  


ঋদ্ধির কথাকে সিলমোহর দিয়ে রাতের দিকে রাহুল ফের যোগ করলেন, "আমি সবসময় আলোচনায় বিশ্বাসী। সেইজন্য প্রতি ম্যাচের প্রথম একাদশ বেছে নেওয়ার আগে সবার সঙ্গে আলোচনা করি। অনেকে প্রথম একাদশে সুযোগ না পেলে হতাশ হয়। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটাও তো বুঝতে হবে যে ঋষভ পন্থ ইতিমধ্যেই নিজেকে তৈরি করে ফেলেছে। ও এই মুহূর্তে দলের এক নম্বর উইকেটকিপার-ব্যাটার। কিন্তু এতে ঋদ্ধির প্রতি আমার ভালবাসা কিংবা সম্মান একফোঁটাও কমেনি। মাঝেমধ্যে মনে হয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করব না। কিন্তু দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে, সেই ক্রিকেটারের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আলোচনা তো করতেই হবে।" 


আরও পড়ুন: Wriddhiman Saha বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন CAB-র সচিব Snehasish Ganguly


রাহুল দ্রাবিড় আক্ষরিক অর্থে ভদ্রলোক। তাই তো ঋদ্ধির জন্য চিরতরে জাতীয় দলের টেস্ট দলের দরজা বন্ধ হয়ে গেলেও, সেটা বেশ গুছিয়ে বলে দিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হারের পর যে কথাগুলো তিনি ঋদ্ধিকে আকারে ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েছিলেন, সেটাই পুনরায় বলে গেলেন। তাও আবার ঋদ্ধির শহরে। ঋদ্ধির ইডেন গার্ডেন্সে দাঁড়িয়ে।


তবে রাহুল তাঁর মতামত জানালেও বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এই ইস্যু নিয়ে একেবারে মাথাঘামাতে রাজি নন। তাই তো রাতের দিকে ইডেন ছাড়ার সময় তাঁকে প্রশ্ন করতেই অল্প কথায় বলে দিলেন, "আমি কী বলব! যা বলার নির্বাচকরা বলবেন।"


ঋদ্ধির জন্য ভারতীয় টেস্ট দলের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেটা শনিবার বোঝা গিয়েছিল। রবিবার কলকাতায় দাঁড়িয়ে একেবারে সিলমোহর দিয়ে দিলেন সৌরভের প্রাক্তন সতীর্থ ও টিম ইন্ডিয়ার বর্তমান হেড কোচ। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)