KKR vs CSK | IPL 2023: কলকাতার বিপুল `হলুদ` সমর্থন! রোমহর্ষক রাহানের ব্যাটে রেকর্ড জয় চেন্নাইয়ের
Chennai Super Kings beats Kolkata Knight Riders by 49 runs: ইডেন গার্ডেন্সে চলতি আইপিএলের সর্বোচ্চ রান করে রেকর্ড করল চেন্নাই সুপার কিংস। জয়ের হ্যাটট্রিক করে ধোনি অ্যান্ড কোং এখন পয়েন্ট টেবলে সবার ওপরে চলে এল। অন্যদিকে কলকাতা ব্যাক-টু-ব্যাক চার ম্যাচ হারল।
চেন্নাই সুপার কিংস ২৩৫/৪
কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৮৬/৮
চেন্নাই জয়ী ৪৯ রানে
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens, Kolkata) রবিবাসরীয় ডাবল হেডারের দ্বিতীয় ম্যাচ, মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স ও চেন্নাই সুপার কিংস (Kolkata Knight Riders vs Chennai Super Kings, KKR vs CSK)। আর এদিন একবারের জন্যও ইডেন গার্ডেন্সকে মনে হল না ইডেন বলে। মনে হল এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে (M. A. Chidambaram Stadium) হল ম্যাচ। কারণ এদিন কার্যত কেকেআরের ফ্যানদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। গ্যালারির রং ছি্ল পুরোটাই হলুদ, হলুদ পতাকা, হলুদ জার্সি! এক অভাবনীয় দৃশ্য়।
প্রতিটি মুহূর্তে শুধু উঠেছে এমএস ধোনি (MS Dhoni) ও সিএসকে-র (CSK) নামে জয়ধ্বনি। এরকম একটা পরিবেশে নাইটরা হোম অ্যাডভান্টেজ শব্দটাই ভুলে গেলেন নীতীশ রানারা (Nitish Rana)। শুধু ধোনির নামেই কলকাতা হয়ে গেল চেন্নাই। আর এই ম্যাচেই হয়ে গেল ইডেনের তথা চলতি আইপিএলের সর্বোচ্চ স্কোর! ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল কেকেআর ২৩২/৪ করেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচ দীনেশ কার্তিকের কলকাতা জিতেছিল ৩৪ রানে। ২০২৩-এর ২৩ এপ্রিল ইডেনে করা কলকাতার সর্বাধিক রানের রেকর্ড ভেঙে গেল চেন্নাই এক্সপ্রেসে! ধোনি অ্যান্ড কোং এদিন ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান করল! এ রান তাড়া করে জেতার রসদ এই কেকেআরের নেই! আর কেকেআর পারেওনি। হারতে হল ৪৯ রানে। টানা চার ম্যাচ হেরে বসল কলকাতা। ধোনি বাহিনী করল জয়ের হ্যাটট্রিক। ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সিএসকে চলে এল পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে।
আরও পড়ুন: MS Dhoni | KKR vs CSK: 'ভালোবাসার' কলকাতায় আবেগি ধোনি! ফিরলেন খড়গপুরে চাকরির দিনে
এদিন টসের সময়ে চেনা কলকাতায় এসে আবেগি হয়ে যান ধোনি। ম্যাচের আগে বলেন, 'আমি কলকাতায় অনেক ক্রিকেট খেলেছি। তবে বলব না যে, প্রচুর খেলেছি। কারণ আমি অনূর্ধ্ব ১৬ বা অনূর্ধ্ব ১৯ খেলিনি। ফলে ম্যাচের সংখ্যা এমনিই কমেছে। তবে আপনি জানেন যে, আমি খড়গপুরে চাকরি করতাম। কলকাতা থেকে দু' ঘণ্টার দূরত্ব। আমি কলকাতায় প্রচুর সময় কাটিয়েছি। অনেক ক্রিকেট-ফুটবল খেলেছি। মনে হয় যে, ভালোবাসা ওখান থেকেই এসেছে।' আজ সারা পৃথিবী জানে যে, খড়গপুরের টিটি-র চাকরি করা রাঁচির রাজপুত্রই লিখেছেন ইতিহাস। কিংবদন্তি ভারতীয় ক্রিকেটার ট্রফির বিচারে ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক।
এদিন টস জিতে নীতীশ ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ধোনিদের। নীতীশের সিদ্ধান্তকে প্রতি পদে পদে ভুল প্রমাণ করে দিলেন চেন্নাইয়ের ব্যাটাররা। উমেশ যাদব, ডেভিড উইজা, বরুণ চক্রবর্তী ও কুলবন্ত খেজরোলিয়াদের ক্লাবস্তরের বোলারে পরিণত করল চেন্নাই। একটা সময়ে মনে হচ্ছিল খেলায় একটাই রান হয়, সেটা ছক্কা। রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডেভিড কনওয়ের ওপেনিং জুটিতে চেন্নাই ৮ ওভারের মধ্যে ৭৩ রান তুলে ফেলে। ২০ বলে ৩৫ করে ফেরেন রুতুরাজ। ৪০ বলে ৫৬ করে ফেরেন কনওয়ে। তবে অজিঙ্কা রাহানে ইডেনের দর্শকদের বার্তা দিতে নেমেছিলেন যে, সুপার সানডে শো হবে তাঁর নামে। এই আইপিএলে নবজন্ম হওয়া রাহানে খেললেন ২৯ বলে অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংস। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। ২৪৪.৮৩-এর স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করলেন ভারতীয় দলের ব্রাত্য ব্য়াটার। যা সব শট তিনি নিলেন, তা দেখে বিশ্বাস করতে সমস্যা হচ্ছিল যে তিনি রাহানে। ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কা হাঁকালেন রাহানে। চারে নেমে শিবম দুবে করে দিলেন ২১ বলে ৫০। জোড়া চার ও পাঁচটি ছক্কায় দুবে ব্যাট করলেন ২৩৮.১০-এর স্ট্রাইক রেটে। ছয়ে নেমে রবীন্দ্র জাদেজা ৮ বলে করলেন ১৮। কলকাতা যে মহামানবের ব্যাটিং দেখার অপেক্ষায় বারবার 'উই ওয়ান্ট ধোনি, উই ওয়ান্ট ধোনি' রব উঠেছিল, সেই মাহি মাত্র তিনটি বলই খেলার সুযোগ পেলেন। তিন বলে ধোনি করলেন দুই।
এই রান তাড়া করতে নেমে কলকাতা প্রথমেই যেন নার্ভটা হারিয়ে ফেলেছিল। ৮.২ ওভারের মধ্যে ৭০ রান তুলতে গিয়ে কলকাতার চলে যায় চার উইকেট। ২ রানের মধ্যে ফেরেন দুই ওপেনার নারায়ণ জগদিশন (১) ও সুনীল নারিন (০)। তিনে নেমে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ২০ ও চারে এসে নীতীশ ২৭ রান করে ফেরেন। পাঁচে নেমে জেসন রয় কিছুটা হলেও নাইট সমর্থকদের আনন্দ দিয়েছিলেন। ২৬ বলে ঝোড়ো ৬১ রানের ইনিংস খেললেন বিশ্বকাপ জয়ী ব্রিটিশ ব্যাটার। পাঁচটি চার ও পাঁচটি ছয় হাঁকান তিনি। এই ম্যাচ জেতা সম্ভব না জেনেও, রিঙ্কু সিং একটা প্রান্ত ধরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। উইজা, রাসেল, উমেশ ও বরুণদের স্কোর বলার মতো নয়। রিঙ্কু শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৩৩ বলে ৫৩ রানে।