ISL 2021-22: ATK Mohun Bagan না SC East Bengal ডার্বি যুদ্ধে কে এগিয়ে? দেখে নিন পরিসংখ্যান
ডার্বি যুদ্ধের ইতিহাস ও বর্তমান।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শনিবার চলতি আইএসএল-এর (ISL 2021-22) ফিরতি ডার্বি (Derby)। ফতোর্দা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গল (ATK Mohun Bagan vs SC East Bengal)। দুই দলের পারফরম্যান্স খারাপ হলেও, কিছু বঙ্গ সন্তানের মনে এখনও এই দ্বৈরথ ঘিরে চড়ছে উন্মদনা, উত্তেজনার পারদ। একদিকে এই ম্য়াচ নিজেদের প্রমাণ করার লড়াই মারিও রিভারার (Mario Rivera) লাল-হলুদ ব্রিগেডের। অন্য দিকে, চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই নিজেদের ভাল জায়গায় রাখতে হলে বড় ম্য়াচ থেকে জয় দরকার জুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferrando) সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের। প্রথম ডার্বিতে চিরপ্রতীদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে সহজ জয় পেয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। দ্বিতীয় ডার্বির আগে অনেকটা সাবধানী এসসি ইস্টবেঙ্গল। রক্ষণ মজবুত করে আক্রমণে যাওয়াই লক্ষ্য পেরোসেভিচ, হাওকিপ, রিবেইরাদের। অপরদিকে, প্রতিপক্ষকে সমীহ করলেও জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী প্রীতম কোটাল, লিস্টন কোলাসো, হুগো বুমোসরা।
আইএসএল ডার্বির পরিসংখ্যান-
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান লড়াই মানে শুধু ফুটবল নয়, আবেগের লড়াই। বিশেষ করে বাঙালি ফুটবলারদের কাছে এই ম্য়াচের গুরুত্বটা যে এখনও আলাদ, সেটা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রাক্তন ফুটবলার থেকে বিশেষজ্ঞরা বারবার বলেছেন বড় ম্য়াচের আগে গত ম্য়াচের ফলাফল, বিগত পরিসংখ্যান কোনও কিছুই খুব একটা প্রভাব ফেলে না। ওই দিন ৯০ মিনিট যেই দল ভাল ফুটবল খেলবে তারাই বাজিমাত করবে। তারপর পরিসংখ্যানের একটা মনস্তাত্ত্বিক ফ্যাক্টর থেকেই যায়। কারণ যেমন আইএসএল-এ এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এখনও একটিও ম্য়াচ জিততে পারেনি এসসি ইস্টবেঙ্গল। গত মরশুমে প্রথম বার আইএসএল-এ অংশ নিয়েছিল কলকাতার দুই প্রধান। আর প্রথম বার আইএসএল-এর দুটি ডার্বিতেই হারতে হয় লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। এই মরশুমেও প্রথম ডার্বিতে জয়ের মুখ দেখেছিল সবুজ-মেরুন। ফলে এ বার যেমন চারে-চার করতে মরিয়া এটিকে মোহনবাগান, অপরদিকে আইএসএল ডার্বিতে প্রথম জয়ের খোঁজে লাল-হলুদ।
ডার্বির সামগ্রিক পরিসংখ্যান-
আইএসএল-এ এসসি ইস্টবেঙ্গল এখনও খাতা খুলতে না পারলেও, দুই দলের সামগ্রিক পরিসংখ্যানের ইতিহাস কিন্তু কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে লাল-হলুদকে। মোট ৩৮০টি ডার্বি ম্যাচ খেলা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এর মধ্যে মোহনবাগান জিতেছে ১২৩টি ম্যাচ। সেখানে ইস্টবেঙ্গল জয় পেয়েছে ১৩২টি ম্যাচে। ড্র হয়েছে ১২৫টি ম্যাচ। অর্থাৎ সবুজ-মেরুন বাহিনীর চেয়ে ৯টি ডার্বি বেশি জিতেছে লাল-হলুদ। যদিও বর্তমান সময়ে একেবারে সেরা ফর্মের ধারেকাছে নেই মারিও রিভারের দল।
আরও পড়ুন: ISL 2021-22: ডার্বি যুদ্ধের আগে কীভাবে হুঙ্কার দিলেন Hugo Boumous?
আরও পড়ুন: ISL 2021-22: ডার্বি যুদ্ধের আগে বিস্ফোরণ ঘটালেন SC East Bengal-এর প্রাক্তন কোচ Manuel Manolo Diaz
আইএসএল ২০২১-২২ মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বি দুই দলের কাছেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুই দলই বর্তমানে তাদের সেরা ছন্দে নেই। এর উপর দুই দলেই থাবা বসিয়েছিল কোভিড। সেই ধাক্কা কাটিয়ে মাঠে ফিরেছে দুই দল। ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত লিগ টেবলের আট নম্বরে রয়েছে সবুজ-মেরুন। আগের ম্যাচে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করেছে তারা। এ দিকে ১৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার একেবারে শেষে এসসি ইস্টবেঙ্গল। এখনও পর্যন্ত একটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এসেছিল জয়। ফলে ফিরতি ডার্বিতে এক দিকে প্রেস্টিজ ফাইট, অপরদিকে চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই। তাই তিন পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী।
এই মরশুমে দুই দলের পরিসংখ্যান:
গোল: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ২০ গোল
(সর্বোচ্চ স্কোরার - হুগো বৌমাস ৫, লিস্টন কোলাসো ৫, রয় কৃষ্ণা ৪, ডেভিড উইলিয়ামস ২)
গোল: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ১৩ গোল
(সর্বোচ্চ স্কোরার – আন্তোনিও পেরোসেভিচ ২, সেম্বয় হাওকিপ ২, আমির দার্ভিসেভিচ ২, নাওরেম মহেশ ২)
ক্লিন শিট: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ২ বার (অমরিন্দর সিং ২)
ক্লিন শিট: এসসি ইসস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ২ বার (শুভম সেন ২)
সেভ: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ২৬ (অমরিন্দর ২৬/১০)
সেভ: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ৩৬ (অরিন্দম ৮/২৩, শুভম ৭/৪, শঙ্কর ১/১)
পাস: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ৩৫১১ (সর্বোচ্চ- প্রীতম ৪০০/১০, ম্যাকহিউ ৩৩৬/৮, বুমৌস ৩২৯/৯)
পাস: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ৩৪১৪ (সর্বোচ্চ – দার্ভিসেভিচ ২৬০/৮, হীরা ২৬০/১০, রফিক ২৩১/৯, সৌরভ ২২২/১০)
ক্রস: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ৯৫ (সর্বোচ্চ - বুমৌস ২০, মনবীর ১৬, আশুতোষ ১৩, শুভাশিস বোস ১৩)
ক্রস: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ১০১ (সর্বোচ্চ – বিকাশ জায়রু ১৮, পেরোসেভিচ ১৫, মহেশ ১০, হীরা মণ্ডল ১০)
টাচ: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ৫৩৬১
(সর্বোচ্চ- প্রীতম ৫৫৩/১০, শুভাশিস ৪৬৮/১০, বুমৌস ৪৪০/৯, ম্যাকহিউ ৪৩০/৮, মনবীর ৪০৯/১০)
টাচ: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ৫৮৩৮
(সর্বোচ্চ – হীরা ৫২৮/১০, রফিক ৩৬৪/৯, সৌরভ ৩৩৫/১০, দার্ভিসেভিচ ৩১৫/৮, অমরজিৎ ৩০০/১১)
ট্যাকল: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ৩২৮
(সর্বোচ্চ- শুভাশিস বোস ৩৫/১০, জনি কাউকো ৩৪/৯, প্রীতম ৩৪/১০, ম্যাকহিউ ৩৩/৮, কোলাসো ৩২/১০)
ট্যাকল: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ৪২৫
(সর্বোচ্চ- মহেশ ৪৭/১০, অমরজিৎ ৩৭/১১, রফিক ৩৪/৯, সৌরভ ৩৪/১০, হীরা ৩৩/১০)
ফাউল: এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে ১৩৩
(সর্বোচ্চ- দীপক টাঙরি ১৭, কোলাসো ১৫, কার্ল ম্যাকহিউ ১৪, রয় কৃষ্ণা ১৪, প্রীতম কোটাল ১৩)
ফাউল: এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ১৬৩
(সর্বোচ্চ – ড্যানিয়েল চিমা ১৯, সৌরভ দাস ১৭, সেম্বয় হাওকিপ ১১, মহম্মদ রফিক ১১, পেরোসেভিচ ১০)