১২ মাসে আট সোনা! বন্দুক হাতে বিশ্বজয় `বিস্ময়` কন্যার
হরিয়ানার এই বিস্ময় মেয়েকে দেখে অবাক হচ্ছেন বাংলার শুটার জয়দীপ কর্মকার।
সুমন মজুমদার
মেয়ে নয়, রাজকন্যা। কন্যা ভ্রুণ হত্যায় হাত পাকানো দেশে এ মেয়ে রূপকথার গল্প লিখতে বসেছে যেন। মানু ভাকের। বন্দুক হাতে দেশ-বিদেশ জয় করতে বেরিয়েছে সে।
১২ মাসে আটটা সোনার পদক জয়। সব ক'টাই আন্তর্জাতিক স্তরে। তাও মাত্র ১৬ বছর বয়সে। এই তিনটে লাইন শুনতে নিশ্চয়ই অবিশ্বাস্য লাগছে? কিন্তু তিনটে লাইনই একেবারে সত্যি। ১০ মিটার পিস্তল শুটিংয়ে দেশের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখছে মানু। গত এক বছরে আটটা সোনা জিতে দেশিয় ক্রীড়ামহলে হরিয়ানার এই মেয়ে বিস্ময় ছড়িয়েছে। দেশের হয়ে আইএসএসএফ জুনিয়র বিশ্বকাপে দুটো সোনা জিতেছে মানু। এর আগে কমনওয়েলথ গেমসে দেশের সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে সোনা জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল মানু।
আরও পড়ুন- দেশে ফিরল দাবার 'খুদে বিস্ময়', রাজকীয় সংবর্ধনা
মানু ভাকের নামটা যেন পুরোটাই বিস্ময়ে ভরা। ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত হরিয়ানার মানু মণিপুরি মার্শাল আর্ট ট্রেনিং করেছে। পাশাপাশি বক্সিং, টেনিস ও স্কেটিংয়ের মতো খেলাগুলো চলত। অবাক করার মতো ব্যাপার, এই খেলাগুলোয় জাতীয় স্তরে পদকও জিতেছে মানু। তার পর শুটিংয়ে হাতেখড়ি।
আরও পড়ুন- তাবিজ পরে নেমেছিলেন মেসি
হরিয়ানার এই বিস্ময় মেয়েকে দেখে অবাক হচ্ছেন বাংলার শুটার জয়দীপ কর্মকার। গত দুবছরে ভারতীয় শুটিংয়ের মহাকাশে মানু নিজেকে 'নতুন তারা' হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। লন্ডন ওলিম্পিকে চতুর্থ স্থানাধিকারী জয়দীপ কর্মকার হরিয়ানার এই মেয়ের সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করলেন। জয়দীপ বলছিলেন, ''মানু, বাংলার মেহুলি ঘোষ, এরা সবাই অসম্ভব প্রতিভাবান। জার্মানিতে জুনিয়র বিশ্বকাপে থাকাকালীন মানুর সঙ্গে আমার কথা হত। ও বারবার আমাকে এসে বলত, ম্যাচের সময় নাকি ও প্রচণ্ড টেনশনে ভোগে। টেনশন কাটানোর কিছু টোটকা আমি ওকে দিয়েছিলাম। জুনিয়র স্তরে ওরা কোচ জসপাল রানার তত্ত্বাবধানে প্র্যাকটিস করে। ওর টেকনিক নিয়ে আমার নতুন করে কিছু বলার নেই। বয়সে বড় শুটাররাও মানুর সঙ্গে পেরে উঠছে না। আসলে মানুর মধ্যে দ্রুত কোনও কিছু শিখে ফেলার একটা প্রবণতা রয়েছে। আমার মনে হয়, মানু, মেহুলিদের এই ব্যাচটা ভারতীয় শুটিংয়ে নতুন দিগন্ত নিয়ে আসবে।''