PAK vs NZ, ICC T20 World Cup 2022: ফের ৯২ বিশ্বকাপের রিমেক! সেমিতে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান
Pakistan beat New Zealand by 7 wickets: একেবারে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিল দলটা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে যাওয়া। এবং কাকতালীয়ভাবে প্রতিপক্ষ সেই নিউজিল্যান্ড। ঠিক ১৯৯২ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের মতোই। শেষ চারের টিকিট কনফার্ম হওয়ার পর থেকেই টগবগ করে ফুটছে `গ্রিন ব্রিগেড`। সেই ধারাবাহিকতা কিউইদের বিরুদ্ধে দেখা গেল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৯৯২ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর। অকল্যান্ডের মাঠ থেকে সিডনির বাইশ গজ। সেবারের মতো এবারও প্রতিপক্ষ সেই এক। নিউজিল্যান্ড (New Zealand)। ৩০ বছর আগে সেটাও ছিল প্রথম সেমি ফাইনাল। সেই ম্যাচে ইমরান খানের (Imran Khan) পাকিস্তান ৪ উইকেটে জিতেছিল। আর এবার বাবর আজমের (Babar Azam) দল জিতল ৭ উইকেটে। সেবার ২৬৩ রান তাড়া করতে গিয়ে কিউইদের বোলিংকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ইনজামাম উল হক (Inzam Ul Haq) ও জাভেদ মিয়াঁদাদ (Javed Miandad)। আর এবার বাবর ও মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Rizwan) ১৫৩ রান চেজ করতে গিয়ে সেই সোনালি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন। ১৩ নভেম্বর চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (ICC T20 World Cup 2022) মেগা ফাইনাল। পাক দল তো আগেই চলে গেল। ফাইনালের মঞ্চ সেই মেলবোর্ন। যেখানে ৩০ বছর আগে কাপ হাতে হাতে তুলেছিলেন ইমরান। এবারও যে ফাইনালের ভেন্যু সেই এক। শুধু বদলে গিয়েছে ফরম্যাট। এখন দেখার মেগা ফাইনালে পাক দলের প্রতিপক্ষ কে হয়? ভারত (Team India) না ইংল্যান্ড (England)?
কিউইদের ১৫২ রানে আটকে রাখার পরেও ক্রিকেট পন্ডিতদের মনে ছিল সন্দেহ। বাবর ও রিজওয়ান শুরুটা ভালো করতে পারবেন তো। কারণ চলতি প্রতিযোগিতায় একেবারেই ছন্দে ছিলেন না দুই পাক ওপেনার। কিন্তু এদিন আসল লড়াইয়ে নিজেদের দারুণভাবে তুলে ধরলেন বাবর ও রিজওয়ান। দুজন প্রথম উইকেটে ১০৫ রান যোগ করতেই ম্যাচের ভাগ্য নিশ্চিত হয়ে যায়। বাবর ৪২ বলে ৫৩ রানে আউট হলেও, রিজওয়ান করলেন ৪২ বলে ৫৭ রান। বাকি কাজটা সারলেন মহম্মদ হ্যারিস ও শান মাসুদ। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। ভারতের কাছে হারতে হয়েছিল। তবে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টি-টিয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। এবার ফের একবার মেগা ফাইনালের টিকিট কেটে নিল 'গ্রিন ব্রিগেড'।
একেবারে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিল দলটা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে যাওয়া। এবং কাকতালীয়ভাবে প্রতিপক্ষ সেই নিউজিল্যান্ড। ঠিক ১৯৯২ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের মতোই। শেষ চারের টিকিট কনফার্ম হওয়ার পর থেকেই টগবগ করে ফুটছে 'গ্রিন ব্রিগেড'। সেই ধারাবাহিকতা কিউইদের বিরুদ্ধে দেখা গেল।
আরও পড়ুন: Rohit Sharma, IND vs ENG: চোটের অবস্থা কেমন? সেমিতে খেলবেন? জবাব দিলেন 'হিটম্যান'
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও বিপক্ষের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন পুরোপুরি চাপমুক্ত থাকতে পারলেন না। কারণ সিডনির বাইশ গজে পাক বোলারদের পারফরম্যান্স ছিল দেখার মতো। বিশেষ করে শাহিন শাহ আফ্রিদির কথা লিখতেই হবে। যেভাবে চোট সারিয়ে গত তিন ম্যাচে বাঁহাতি পেসার পারফর্ম করেছেন সেটা তারিফযোগ্য। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৪ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার তাঁর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। এরপর শাহিনের আগুনে পেসে পুড়ে যায় বাংলাদেশ। এবার তাঁর সামনে ছিল কিউয়িরা। এদিন নিলেন ২৪ রানে ২ উইকেট।
প্রথমার্ধে পাক বোলারদের সামনে মাথা তুলতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের কেউই। প্রথম ওভারেই নাটক। প্রথম বলেই শাহিনকে বাউন্ডারি মারেন ফিন অ্যালেন। দ্বিতীয় বলে তাঁকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। তবে ডিআরএস নেন ফিন। দেখা যায়, বল তাঁর ব্যাটে লেগে তারপর প্যাডে লেগেছে। পরের বলে ফের তাঁকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও এবার জীবনরক্ষা হয়নি ফিনের। ফেরেন ৪ রান করে। ১ ওভারের শেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৬/১। তারপর রান আউট হয়ে ফেরেন ডেভন কনওয়ে। দুরন্ত ছন্দে থাকা গ্লেন ফিলিপসও উইকেটে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ।
শাহিনের দাপটে ৪৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল এই মুহূর্তে আইসিসি ইভেন্ট খেলা সবচেয়ে ধারাবাহিক দল। যদিও এরপর ফিরে আসার লড়াই শুরু করেন ডারিল মিচেল ও কেন উইলিয়ামসন। দুজনের দাপটে একটা সময় মনে হচ্ছিল ১৮০-র কাছাকাছি রান পৌঁছে যাবে। চতুর্থ উইকেটে ৬৮ রান যোগ করেন দুজন। কিন্তু ১৭ ওভারে আবার ছন্দ পতন। ডেথ ওভারে বল হাতে নিয়েই কেন উইলিয়ামসনকে বোল্ড করে দিলেন শাহিন। ৪২ বলে ৪৬ রানের লড়াকু ইনিংস খেললেন উইলিয়ামসন। আর ৩৫ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন ডারিল মিচেল। ফলে ৪ উইকেটে ১৫২ রানে আটকে গেল নিউজিল্যান্ড।
বোলিংয়ের পর ব্যাটিং। দুই পাওয়ার প্লে-তেই দাপট দেখিয়েছিল বাবর আজমের দল। সেই সুবাদেই এল সহজ জয়। পাকিস্তান ফাইনালে উঠে যাওয়ায় ভারত-পাক স্বপ্নের ফাইনাল দেখার যে সম্ভাবনা গোটা ক্রিকেট বিশ্ব দেখছিল, সেই সম্ভাবনা আরও উজ্বল হল। যদিও সেই স্বপ্নের ম্যাচের জন্য বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিততে হবে টিম ইন্ডিয়াকে।