সব্যসাচী বাগচী 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

১৫ সদস্যের এশিয়া কাপের (Asia Cup 2022) দল গঠন হয়ে গিয়েছে। কয়েক মাস পরেই অস্ট্রেলিয়ার (Australia) মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (WT20)। এশিয়া কাপের মতো অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আয়োজিত হতে চলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ও কেএল রাহুলের (KL Rahul) দলে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তবে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) এই দুই তারকার দলে ফেরা নিয়ে উঠে গিয়েছে একাধিক প্রশ্ন। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়নি জাতীয় নির্বাচক মণ্ডলী। কারণ দল গঠনের পর সাংবাদিক সম্মেলন করার রীতিই এখন উঠে গিয়েছে। তবে তাই বলে প্রশ্ন তো থেমে থাকবে না। এই মুহূর্তে ভারতীয় দলকে নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, সীমিত ওভারে বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিরাট ও কেএল রাহুলকে কি আদৌ হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) দলে চাইছেন? এই দুই তারকাকে ব্যাটিং অর্ডারে কীভাবে জায়গা দেবেন 'দ্য ওয়াল'? অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) কীভাবে প্রথম একাদশে বজায় রাখবেন ভারসাম্য?  


গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিরাটের নেতৃত্বে ভরাডুবির পর থেকে এই ফরম্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় দল। রোহিতের অধিনায়কত্বে ঘরের মাঠে একাধিক সিরিজ জয় ছাড়াও ব্যাটারদের স্ট্রাইক রেটে ঘটেছে উন্নতি। সবটাই হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে। কারণ ২০০৭ সালের উদ্বোধনী বিশ্বকাপে জয়ের পর এই মহার্ঘ্য ট্রফি অধরা। গত কয়েক মাসে পাওয়ার-প্লে'তে দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রেও বাড়তি তাগিদ দেখা গিয়েছে। নিজের উইকেট বাঁচানোর খেলার বদলে আগ্রাসী মেজাজে বিপক্ষের বোলিংকে বুঝে নিচ্ছেন ওপেনাররা। ফলে এই মুহূর্তে পাওয়ার-প্লে'তে গড় রান-রেট ৮.৮২।  


আরও পড়ুন: Mohammed Shami, Asia Cup 2022 : ফর্মে থাকা শামি কেন বাদ? প্রশ্ন তুললেন ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ওপেনার


আরও পড়ুন: Asia Cup 2022 : কেন পন্থ, কার্তিককে একসঙ্গে প্রথম একাদশে দেখতে চান এই প্রাক্তন? জেনে নিন



রোহিত গত কয়েক মাসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেই একটা কথা বারবার বলেছেন। তিনি হারতে রাজি। মেগা আইসিসি প্রতিযোগিতার আগে সব রকম পরীক্ষা করতে রাজি। সেটা করতে গিয়ে কয়েকটা ম্যাচ হারলেও তাঁর কিছু যায় আসে না। তবে 'প্রসেস' ছাড়তে তিনি রাজি নন। মূলত রাহুল ও রোহিতের মাথা থেকেই এমন আগ্রাসী ব্র্যান্ডের আমদানি ঘটেছে। চলতি বছর 'হিটম্যান'-এর ব্যাটিং দেখলে সেটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গত বছর রোহিতের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪৭.৮২। সেটা বেড়ে গত কয়েক মাসে দাঁড়িয়েছে ১৫৩.৬০। আর সেখানে বিরাটের ফর্ম ও স্ট্রাইক রেট একেবারেই 'কিং কোহলি'-র মতো নয়। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মাত্র চারটি ম্যাচ খেলেছেন। মোট রান মাত্র ৮১। স্ট্রাইক রেট ১২৮.৫৭। স্বভাবতই ছন্দহীন বিরাটের দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। 


অন্যদিকে চলতি বছর রাহুল এখনও পর্যন্ত একটাও টি-টোয়েন্টি খেলেননি। আইপিএল শেষ হওয়ার পর অত্যাধিক খেলার অজুহাতে বিশ্রাম নিয়েছেন। এরপর জার্মানিতে গিয়ে হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার করালেন। হার্নিয়া থেকে সেরে উঠতেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। তাঁর বিরতিকে দারুণ কাজে লাগিয়েছেন সূর্য কুমার যাদব (Surya Kumar Yadav)। ওপেনার হিসেবে নিজের দাবি পেশ করেছেন এই মুম্বইকর। পিছিয়ে নেই দীপক হুডাও (Deepak Hooda)। মিডল অর্ডারে যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন, পারফর্ম করেছেন এই অলরাউন্ডার। তবুও দীপকের প্রথম একাদশে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ অতীত পারফরম্যান্সের কারণে বিরাট ও কেএল রাহুল যে 'অটোমেটিক চয়েস'।  



চলতি বছর সব ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। ২৪ বছরের তরুণ উইকেটকিপার টিম ম্যানেজমেন্টের প্রথম পছন্দ। এমনকি দীনেশ কার্তিক (Dinesh Karthik) খেললেও পন্থকে ব্যাটিং অর্ডারে অনেকটা উপরে খেলবেন। সেটা গত কয়েক সিরিজেই বোঝা গিয়েছে। এ দিকে 'ডিকে' আবার গত আইপিএল (IPL 2022) থেকে 'ফিনিশার'-এর ভূমিকা পালন করছেন। ১৬ ম্যাচে করেছেন ৩৩০ রান। গড় ৫৫.০০। স্ট্রাইক রেট ১৮৩.৩৩। এরপর ভারতীয় দলের হয়েও সাত নম্বরে নেমে একই ভাবে পারফর্ম করে গিয়েছেন ৩৭ বছরের অভিজ্ঞ। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েও তিনি সফল। রান তাড়া করতে গিয়ে গত ১৩ ইনিংসে করেছেন ১৯২ রান। এখানে স্ট্রাইক রেট ১৩৩.৩৩। কিন্তু প্রশ্ন হল হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya), রবীন্দ্র জাদেজার (Ravindra Jadeja) মতো মারকুটে ব্যাটার রয়েছেন। রয়েছেন পন্থ। সেখানে কার্তিক কতটা সুযোগ পাবেন? সেটাই দেখার। তবে কার্তিক যদি এশিয়া কাপেও তাঁর ফর্ম বজায় রাখতে পারেন তাহলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকা নিয়ে তাঁর দাবি আরও জোরাল হবে। 


সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে পন্থ ও কার্তিককে একসঙ্গে খেলিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন একাধিক ক্রিকেট পণ্ডিত। সেক্ষেত্রে চার স্পেশালিস্ট বোলারের সঙ্গে পঞ্চম বোলার হিসেবে সেরা 'অপশন' হার্দিক। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দল ষষ্ঠ বোলারের অভাব অনুভব করেছিল। সেটা মাথায় রেখে দীপক হুডার মতো অলরাউন্ডার সেই কাজটা করতে পারেন। এই কম্বিনেশনে দল সাজালে বিরাট ও কেএল রাহুলকে একসঙ্গে খেলিয়ে দেওয়া বেশ কঠিন। ছন্দহীন বিরাট কিংবা অনেক দিন পর ফিরে আসা কেএল রাহুলের মধ্যে কোচ ও অধিনায়ক কাকে বসাবেন? বিরাটকে বাইরে রাখার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত কি রোহিত ও রাহুল নিতে পারবেন? সেটাই এখন দেখার। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)