নিজস্ব প্রতিবেদন: পঞ্চমবারের জন্য় ও সর্বোচ্চবার যুব বিশ্বকাপ (ICC U19 World Cup) জিতেছে (Yash Dhull) টিম ইন্ডিয়া। ভারতের যে ক্রীড়া অনুরাগীরা আইসিসি-র এই শো-পিস ইভেন্টে এবং ফাইনালে চোখ রেখেছেন, তাঁদের মনের মণিকোঠায় তিনটি নাম স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। তাঁরা হলেন- ক্যাপ্টেন যশ ধুল (Yash Dhull), রবি কুমার (Ravi Kumar) ও রাজ অঙ্গদ বাওয়া (Raj Angad Bawa)। আজ যশ-রাজ-রবির বাবারা বিশ্বজয়ী সন্তানদের কৃতিত্বে গর্বিত। ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে বিজয় ধুল, সুখবিন্দর বাওয়া ও রাজেন্দ্র সিংরা জানালেন তাঁদের অনুভূতি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রথমেই বলতে হবে রবি কুমারের কথা। রবি-রাজের যুগলবন্দিতেই ভারত অ্যান্টিগায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ভারতের দুই পেসার রবি কুমার এবং রাজ বাওয়ার বিধ্বংসী বোলিংয়েই ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ১৮৯ রানে। ফাইনালে রাজের সংগ্রহে এসেছে পাঁচ উইকেট, রবির ঝুলিতে চার। বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারতকে শেষ চারে তোলার নেপথ্যে ছিলেন এই রবি কুমার।  ৭ ওভার বল করে ১৪ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছিলেন রবি। ১৮ বছরের বাংলার এই বাঁহাতি পেসার ছিলেন আগুনে ফর্মে। 


আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar: সুরসম্রাজ্ঞীর শ্রদ্ধায় রোহিতদের হাতে কালো ব্যান্ড, মিনিটের নীরবতা মাঠে


রবির বাবা রাজেন্দ্র সিং ওড়িশার রায়গড়া জেলার মুলিগেড়া সিআরপিএফ পোস্টে কর্ত্যবরত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর (এএসআই) পদে। ছেলের সাফল্য উচ্ছ্বসিত রাজেন্দ্র বলছেন, "আমি অত্যন্ত গর্বিত। এতটাই খুশি হয়েছি যে ভাষায় ঠিক ব্যাখ্যা করতে পারব না। "বাবা-মা চেয়েছিল রবি ক্রিকেট ছেড়ে মন দিয়ে পড়াশোনা করুক। আজ রবি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের তারকা। এই প্রসঙ্গে তাঁর বাব বলছেন, "ঠিকই  এক সময় এমনটা ভেবেছিলাম, রবি ক্রিকেট ছেড়ে পড়াশোনা করুক। সব বাবা-মা চায় তার ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা মন দিয়ে করুক। কিন্তু আমরা দেখলাম ওর আগ্রহ ক্রিকেটেই। তখন ভাবলাম ঠিক আছে ক্রিকেটই খেলুক।" রাজেন্দ্র জানিয়েছেন যে, ছুটি নিয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন তিনি। প্রথমে বিমানবন্দরে ছেলেকে স্বাগত জানাবেন। তারপর বাড়িতে দু"দিন উৎসব। এরপর বাংলা দলের হয়ে রঞ্জি ট্রফি অভিযানে নেমে পড়বেন রবি।  


আরও পড়ুন: ICC U19 World Cup: বিশ্বজয়ী যশ ধুলরা কত টাকা করে পাবেন? জানিয়ে দিলেন সৌরভ


অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতিহাস লিখেছেন রাজ বাওয়া। তবে শুধু বল নয় ব্যাট হাতেও দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে ১০ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন রাজ। প্রথমবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথম কোনও বোলার হিসাবে পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির গড়েন রাজ। ৫৪ বলে ৩৫ রানের দারুণ ইনিংসও খেলেন রাজ। তাঁর পরিবার খেলাধুলোর সঙ্গে জড়িত। ঠাকুরদা ত্রিলোচন বাওয়া ভারতীয় হকি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। ১৯৪৮ সালের অলিম্পিকে ভারতের সোনাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ৪-০ গোলে জিতেছিল ভারত। দুটি গোল করেছিলেন প্রয়াত ত্রিলোচন।


রাজের বাবা সুখবিন্দর বাওয়াও ক্রিকেট খেলতেন। স্লিপডিস্কের সমস্যার জন্য বাধ্য হন ক্রিকেট ছেড়ে দিতে। হয়ে যান কোচ।  সুখবিন্দর ফোনে বলছেন, "পরিবারের জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। যখন টিভি-তে বাবার নামটা বলছিল, তখন মায়ের চোখে জল চলে এসেছিল। বাবার হকিতে আন্তর্জাতিক সফর শেষ হেয়েছিল দুরন্ত পারফরম্যান্সে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। ওদিকে আমার ছেলে সফর শুরু হলো ইংল্যান্ডকে হারিয়ে।" সুখবিন্দর বলছেন ছেলের জন্য বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। একদিনের জন্য় ছেলে আসবে, তারপর রঞ্জি খেলতে চলে যাবে সে।


আরও পড়ুন: Lata Mageshkar: ধোনি যেন অবসর না নেন! অনুরোধ করেছিলেন লতা, সাক্ষী টুইটার


অ্যান্টিগায় গিয়ে কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন ক্যাপ্টেন যশ ধুল। নামতে পারেননি মাঠে। কিন্তু যখন সুযোগ এসেছে তখন ব্যাট হাতে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় অধিনায়কদের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়ে নিয়েছেন যশ। বিরাট কোহলি ও পৃথ্বী শ-দের সঙ্গে এক আসনেই তিনি। ধুলের বাবা বিজয় ধুল ফোনে বলছেন, "দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোয় গর্বিত গোটা পরিবার। রাত থেকেই উৎসবের পরিবেশ। মিডিয়া আসছে বাড়িতে।" তবে ধুলের বাবা বলছেন যে, কোভিডের সময় ছেলের সঙ্গে দিন-রান কথা হয়েছে, ধুল কখনই কোনও চাপ নেননি। নিজের বেসিক ক্রিকেটই খেলে গিয়েছেন। আপাতত ছেলের দেশে ফেরার প্রতীক্ষায় বাবা।


Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App