সব্যসাচী বাগচী: ‘কিশোর কুমারের কালজয়ী গানের মতই, ইস্টবেঙ্গলে সুভাষ ভৌমিকের অবদান অমর হয়ে থাকবে।‘বিদায়বেলায় প্রিয় কোচের সঙ্গেই ছিলেন ষষ্ঠী দুলে। নিমতলা ঘাট থেকেই টেলিফোনে সুভাষ স্মৃতি উজাড় করে দিলেন এই প্রাক্তন ফুটবলার। স্বভাবতই উঠে এল সেই ঐতিহাসিক আশিয়ান কাপ জয়ের অধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০০৩ সালের আশিয়ান কাপ জয় শুধু লাল-হলুদ তাঁবুতে শুধুমাত্র একটা পালক যোগ করেনি। সুভাষ ও সেই দলের সবাইকে দিয়েছিল আলাদা পরিচিতি। হুগলীর হরিপাল গ্রাম থেকে উঠে আসা ষষ্ঠীর জন্য সেই আশিয়ান জয় আলাদা মাত্রা যোগ করে। তাই তো আলোচনায় বারবার উঠে আসছিল সেই বিখ্যাত উক্তির কথা।



‘আপনি আমাকে ভাত এনে দিন। আমি চাইম্যানকে রুখে দেব!‘ ফাইনালের আগে কেন সেই কথাটা ‘ভৌমিক স্যার’কে বলেছিলেন ষষ্ঠী? প্রাক্তন ফুটবলার যোগ করলেন, “আসলে ভৌমিক স্যার সব ফুটবলারদের মনের অবস্থা খুব ভাল বুঝতে পারতেন। আমাদের বকাবকি করতেন। কলার টেনে ধরে কয়েকটা গালাগালও দিতেন। আবার সেই লোকটাই আদর করে কাছে টেনে নিতেন। সেটা আমি জানতাম বলেই ফাইনালের আগে ভাত খাওয়ানোর আবদার করেছিলাম।“


আরও পড়ুন: Exclusive: বিদায়বেলায় প্রিয় ‘ভোম্বল দা’কে নিয়ে আবেগপ্রবণ Bhaichung Bhutia


আরও পড়ুন: Subhash Bhowmick Died: সুভাষ স্মরণে সংগ্রহশালা,মূর্তি তৈরি করছে লাল-হলুদ


স্মৃতির ঝাঁপি উপড়ে দিয়ে ষষ্ঠী বলা শুরু করলেন, “আশিয়ান কাপ ফাইনালের আগে সুভাষ স্যার বলছিলেন, এশিয়ার সেরা প্লেয়ার চাইম্যান। ওকে কে আটকাবে?” সেই সময় আবার চাইম্যান জিনেদিন জিদানের সঙ্গেও খেলেছিল। তবে আমি তো এই সব আগে কিছুই জানতাম না। কোচ চাগিয়ে তোলার পরেই বলে দিয়েছিলাম, “আমি আটকে দেব। তবে আমাকে ভাত জোগাড় করে দিতে হবে!” ষষ্ঠী আরও যোগ করলেন, “দেখুন আমি গ্রামের ছেলে। দিনের মধ্যে চার বার ভাত খাওয়ার অভ্যাস। আমাকে পাস্তা দিলে হবে না। আর চাইম্যানকে তো আমি চিনি না। ওর জার্সির নম্বরটা আমাকে বলে দেবেন। বাকি কথা ম্যাচের পরে হবে।“ অনেক বছর আগের কথাগুলো এখনও গড়গড়িয়ে বলে গেলেন এই প্রাক্তন ফুটবলার।



সেই ফাইনালের আগে ভাত পেয়েই যেন বদলে গিয়েছিলেন ষষ্ঠী। আটকে দিয়েছিলেন তৎকালীন এশিয়ার সেরা চাইম্যানকে। মাঠে বিপক্ষের সেরা ফুটবলারকে রুখে দিয়েই বলেছিলেন, “‘ইউ চাইম্যান, আই অ্যাম ষষ্ঠী দুলে।“ ফলে বেক তেরো সাসানাকে হারিয়ে আশিয়ান কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। বাকিটা তো ইতিহাস।


 



সদ্য প্রয়াত সুভাষকে ‘বস’ বলতেন ব্রাজিলিয়ান ডগলাস। প্রিয় কোচের চির বিদায়ের খবর পেয়েই এ দিন সকালেও লিখেছেন ‘দ্য বস হ্যাজ গন।’ সেই ডগলাস ব্রাজিল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে বলছেন, “ইস্টবেঙ্গলে আমার প্রথম দিনটার কথা বেশ মনে পড়ছে। বস আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কী খেতে চাও তুমি?”


প্রিয় কোচের সঙ্গে শেষ কথাটাও ছিল প্রায় একই। দুই মরশুম আগে আই লিগের ট্রাও এফসি-র কোচ হয়ে ভারতে ফিরে এসেছিলেন ডগলাস। তবে করোনা হানার জন্য আটকে গিয়েছিলেন। সেই সময় সুভাষ তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে। কিন্তু লকডাউন থাকার জন্য গুরু-শিষ্যের আর সাক্ষাত হয়নি। হয়নি একসঙ্গে লাঞ্চ করা। সেটা নিয়ে এখনও আক্ষেপ করেন এই ডিফেন্ডার।


Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App