Exclusive: বিদায়বেলায় প্রিয় ‘ভোম্বল দা’কে নিয়ে আবেগপ্রবণ Bhaichung Bhutia

দুবার জাতীয় লিগ জয় থেকে শুরু করে ঐতিহ্যের আশিয়ান কাপ। অনেকটা সময় একসঙ্গে লাল-হলুদ সংসারে ওঁরা কাটিয়েছেন। 

Updated By: Jan 22, 2022, 03:06 PM IST
Exclusive: বিদায়বেলায় প্রিয় ‘ভোম্বল দা’কে নিয়ে আবেগপ্রবণ Bhaichung Bhutia
লাল-হলুদের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে এক ফ্রেমে সুভাষ ভৌমিক ও বাইচুং ভুটিয়া। ফাইল চিত্র

সব্যসাচী বাগচী: ওঁদের সম্পর্ক শুধু গুরু-শিষ্য ছিল না। সুভাষ ভৌমিক (Subhash Bhowmick)-বাইচুং ভুটিয়ার (Bhaichung Bhutia) সম্পর্ক অনেকটা বন্ধুর মতো ছিল। এহেন প্রিয় ‘ভোম্বল দা’র প্রয়াণে একেবারে ভেঙে পড়েছেন ভারতীয় ফুটবলের আইকন। সেটা জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়ে দিলেন ‘পাহাড়ি বিছে’।

দুবার জাতীয় লিগ জয় থেকে শুরু করে ঐতিহ্যের আশিয়ান কাপ। অনেকটা সময় একসঙ্গে লাল-হলুদ সংসারে ওঁরা কাটিয়েছেন। স্বভাবতই সুভাষের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক।  

সুভাষের প্রয়াণে শোকাহত বাইচুং বলছেন, “আমার সুভাষদার সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল। তাঁর সঙ্গে অনেক সুন্দর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গলে আশিয়ান কাপ, আই লিগ এবং আরও অনেক টুর্নামেন্ট একসঙ্গে জিতেছি। সুভাষদা ভীষণ সোজাসাপটা একজন মানুষ ছিলেন। ফলে অনেক বিতর্কও হত। কিন্তু আমি ওই জন্যই মানুষটাতে এত বেশি ভালবাসতাম। তিনি সব সময় মনে যা আসত সেই কথাই বলতেন। তোমাকে অনেক মিস করব ভোম্বল দা। শান্তিতে থাকো।“

Asian Cup

লাল-হলুদে কোচ হিসেবে সাফল্য পেলেও মোহনবাগানের কোচ হিসেবে ময়দানে আত্মপ্রকাশ সুভাষের। বেশ কয়েক বার সবুজ-মেরুনের দায়িত্ব নিলেও সাফল্য পাননি। সাফল্য পেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলে এসে। ২০০৩ সালে ইস্টবেঙ্গলকে আশিয়ান কাপ চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। পর পর দুই বছর সুভাষের কোচিংয়েই জাতীয় লিগ জিতেছিল লাল-হলুদ।

ইস্টবেঙ্গলে তাঁর জামানাতেই এসেছিল ফিজিও এবং বিদেশি ট্রেনার। আশিয়ান কাপ খেলতে যাওয়ার আগে বাইচুং, ডগলাস, সুলে মুশাদের আরও ফিট করে তোলার জন্য জাকুজির ব্যবস্থা করা ছিল তাঁরই মস্তিস্কপ্রসুত। এমনকি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা খেলতে যাওয়ার আগে দলকে শহরের পাঁচ তারা হোটেলে রাখাও শুরু হয়েছিল তাঁর সময়কালে। সঙ্গে ছিল তুখোড় ম্যান ম্যানেজমেন্ট। তাই তো তাঁর জামানায় লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমে একাধিক তারকা থাকলেও কলহ বাঁধেনি।

আরও পড়ুন: Subhash Bhowmick Died: সুভাষ স্মরণে সংগ্রহশালা,মূর্তি তৈরি করছে লাল-হলুদ

আরও পড়ুন: Subhash Bhowmick Died: বিদায়বেলায় সুভাষ স্মরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সেই সব সোনালী অতীতকে মনে করে বাইচুং যোগ করলেন, “আমাদের কাছে পাপা’র মতো ছিলেন ভোম্বল দা। অ্যালিভিটো, মাইক ওকোরো, ডগলাস তো ড্যাডি বলে ডাকত। সেই সময় আমাদের ফুটবলার হিসেবে সাফল্যের নেপথ্যে ভৌমিক দা-র অনেক অবদান ছিল। দেশ ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য পেতে হলে যে ভাল ডায়েট, জিম, ফিটনেস দরকার সেটা অনেকেই জানত না। কিন্তু ভৌমিক দা ছিলেন আলাদা। খেলা ও অনুশীলনের বাইরে ফুটবল নিয়েই লেখাপড়া করতেন। বিদেশি বই পড়তেন। বিদেশি ফুটবলের একাধিক টেকনিক ওঁর ধারণা ছিল। সেই গুলো আমাদের উন্নতির জন্য কাজে লাগাতেন। ভারতীয় ফুটবলে আধুনিকতা ওঁর হাত দিয়েই এসেছিল।“

Asian Cup East bengal team

দুই পায়ে ছিল গোলার মত শট। তাই মালদহ থেকে আসা ‘ভোম্বলবাবু’ (পড়ুন, প্রয়াত প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই নামে ডাকতেন) সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ভারতীয় ফুটবলের সেরা স্ট্রাইকার হয়ে উঠেছিলেন। এহেন প্রিয় মানুষকে বলতে গিয়ে শেষে আবেগপ্রবণ হয়ে গেলেন বাইচুং। জুড়ে দিলেন, “আমাদের কোনও আর্কাইভ নেই, কোনও সিডি নেই। তাই ভারতীয় ফুটবলে ফুটবলার সুভাষ ভৌমিকের অবদান সম্পর্কে কেউ জানতে পারবে না। কী খেলা খেলে গিয়েছে, সেটা আজকের ফুটবলারদের মধ্যে অনেকেই দেখেননি। এটা বাংলা তথা ভারতবর্ষের ফুটবলের কাছে একটা অপূরণীয় ক্ষতি। ভারতীয় ফুটবলে আজ নক্ষত্র পতন হল। এই জায়গাটা আর কেউ ভরাট করবেন কি না, কিংবা কীভাবে ভরাট হবে, সেটাও আমি জানি না।'

প্রথমে ফুটবলার, এরপর সাফল্য ও ব্যর্থতায় ভরা কোচিং জীবন। সুভাষের কাছে কোচিংয়ের লাইসেন্স না থাকলেও, তিনি আমাদের দেশের ফুটবলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। কিন্তু পেয়েছেন কতটুকু! চিরঘুমে চলে যাওয়ার পর প্রশ্নটা তুলে দিলেন বরাবর স্বাধীনচেতা এবং ডাকাবুকো ছিলেন সুভাষ। 

Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App

.