পার্থ প্রতিম চন্দ্র


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অলিম্পিকে চিন


২০০৮ অলিম্পিক-১১০টা পদক ৫১টা সোনা
২০১২ অলিম্পিক-৩৮টা সোনা ৮৮টা পদক
২০১৬ অলিম্পিক (১১ দিনের পর)-১৭ সোনা ৫০টা পদক


ওয়েব ডেস্ক: ভারত তো এখনও পদক পায়নি। সেটা তো যন্ত্রনার। কিন্তু চিনও হতাশ এবার রিও-র পারফরম্যান্সে। কারণ তাদের লক্ষ্য ছিল যে করেই হোক পদক তালিকায় শীর্ষে থাকা। কিন্তু রিও অলিম্পিকে চিন পদক তালিকায় তিনে নেমে গেছে।  গত তিনটে অলিম্পিকে চিনে প্রথম দুইয়ে শেষ করেছে । যারা ২০০৮ অলিম্পিকে ৫১টা সোনা জিতেছিল, তারাই এবার এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৫টা সোনা জিতেছে। অনেকের ধারণা চিন এবার ২০ থেকে ২২টা-র বেশি সোনা পাবে না। তাহলে ব্যাপরটা সত্যি হতাশার হবে চিনের কাছে।


কারণ ২০০৮ অলিম্পিক আয়োজনের আগে চিন নিয়েছিল ''হান্ড্রেড গোল্ড প্রজেক্ট''। বা ১০০ সোনা জেতার লক্ষ্য। দেশের মাটিতে প্রথম অলিম্পিকে রেকর্ড ৫১টা সোনা সহ ১০০টা পদক জয়ের পর আত্মবিশ্বাস বাড়ে চিনের। হান্ড্রেড গোল্ডের লক্ষ্য বেড়ে হয় ওয়ান ফিফটি গোল্ড প্রজেক্ট। লন্ডন অলিম্পিকে আসে ৩৮টা সোনা সহ ৮৮টা পদক।


আরও পড়ুন-অলিম্পিকে কবাডি কেন খেলা হয় না জানেন?


কিন্তু রিওতে ১৭টা খেলায় অংশ নিয়ে ৪১২ জন অ্যাথলিট পাঠিয়ে চিন আপাতত পেয়েছে ১৭টা সোনা, ১৫টা রুপো, ১৯টা ব্রোঞ্জ। মানে ৫১টা পদক। ভারতের কথা ভেবে যদি বলেন এতে হতাশার কী আছে! তাহলে ভুল ভাবছেন। চিনের কাছে ব্যাপরটা সত্যি হতাশার। বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকাকে চাপে রাখতে অলিম্পিকেও তাদের পদক তালিকায় টেক্কা দিয়ে বার্তা দিতে চায় চিন। এমন কথাটা আর গোপন নেই। কথায় বলে অলিম্পিকে সোনা জিততে চিন যে কোন নীতি নিতে প্রস্তুত। ভারতের মত চার বছর অন্তর মাথা ঘামানো নয়। একটা সোনার জন্য চিনে প্রতিটা ঘণ্টাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটা খেলার জন্য রয়েছে কমিটি। শোনা যায় পদক না এলে সেই কমিটিকে বড় শাস্তি পর্যন্ত পেতে হয়। চিনের সাফ নীতি সোনা চাই সোনা। তাতে যত খরচ হয় করতে রাজি। যত পরিকাঠামো লাগে দেবো। যত শ্রম লাগে, দেবো।



এখনও পর্যন্ত চিনের জেতা ১৭টা সোনার মধ্যে ৫টা করে এসেছে ভারত্তোলন, ডাইভিং থেকে। ৩টা টেবিল টেনিস। শ্যুটিং, সাঁতার, সাইকেলিং, অ্যাথলেটিক্সে একটা করে। মানে ৬টা খেলা থেকে সোনা জিতেছে চিন। সেখানে বেজিং অলিম্পিকে ১৬টা খেলায় সোনা এসেছিল। ২০০৮ বেজিং অলম্পিকে জিমন্যাস্টিকেই এসেছিল ১১টা সোনা। সেখানে এবার জিমন্যাস্টিকে একটা সোনা জেতেনি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটি।


কিন্তু কেন কমছে সোনা?আসলে এবার অলিম্পিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে গ্রেট ব্রিটেন। রাশিয়ার বেশিরভাগ পদকজয়ীর সাসপেন্ড হওয়ার সুযোগটা অনেকটা নিয়েছে গ্রেট ব্রিটেন। যাতে চিনকে পদক তালিকায় তিনে নেমে যেতে হয়েছে। আমেরিকাও দারুণ সফল। চিনাদের আধিপত্যের জিমন্যাস্টিকে মার্কিনদের প্রভাব দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিনীদের আধিপত্যের খেলায় থাবা বসানোর যে চেষ্টাটা চিন শুরু করেছে, সেটাও সফল হয়নি। সাঁতার, টেনিস, অ্যাথলেটিক্সে মার্কিনীদের পদক জয়ের অভ্যাস অব্যাহতই আছে। অনেক চেষ্টার পরেও এসব খেলায় চিন এখনও ছাপ ফেলতে পারছে না।


অনেকেই বলছেন, চিনে ক্রীড়া পরিকাঠামো, নীতি নিয়ে কোনও প্রশ্ন হবে না। তবে মার্কিনীদের টেক্কা দিতে হলে চিনকে আরও অনেকটা পথ যেতে হবে। সাঁতার, অ্যাথলেটিক্সে আরও জোর দিতে হবে চিনকে।


১৯৮৪ অলিম্পিকের আগে চিনের মোট পদক ছিল মাত্র ১। এরপর ক্রীড়ানীতিতে বিপ্লবের পর অলিম্পিকে পদক জয়ের বন্যা আসে চিনে। মাত্র ৮টা অলিম্পিকে চিন ২০০টা সোনা জিতে ফেলেছে। তাই রিওতে কিছুটা থমকে গেলেও ভুলে গেলে চলবে না চার বছর পর এশিয়াতে অলিম্পিকে। সেখানে আবার চিনা বিপ্লব হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।