Ravichandran Ashwin: `বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন!` ফের `কলিগদের` বিরুদ্ধে বোমা ফাটালেন ব্রাত্য অশ্বিন
অশ্বিনের বদলি হিসেবে যাঁকে খেলানো হয়েছে সেই উমেশ যাদব, তিনি ওভালে চরম ব্যর্থ। প্রথম ইনিংসে একটি উইকেটও পান নি। ২৩ ওভারে অকাতরে ৭৭ রান বিলিয়েছিলেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও তেমন দাপট দেখাতে পারেননি উমেশ। ৫৪ রানে ২ উইকেট নিলেও, দাপট দেখাতে ব্যর্থ হন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অতীত ফিরিয়ে আনার কোনও উপায় নেই। কিন্তু তাই বলে তো আর বিতর্ক থামে না। মহাবিতর্ক থামতেও চাইছে না। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে (ICC World Test Championship Final 2023) তাঁর বাদ পড়া নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে। সেই সময়ে তাঁর মানসিক পরিস্থিতি কেমন ছিল, সেটা নিয়ে এবার মুখ খুললেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অভিজ্ঞ অফ স্পিনারের দাবি, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দলে না দেখে তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন! এর আগে অবশ্য ক্ষুব্ধ অশ্বিনের দাবি ছিল, একসময়ে ক্রিকেটে সবাই বন্ধু ছিল, আর এখন সকলেই হয়ে গিয়েছে সহকর্মী!
অশ্বিনের কেরিয়ারের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে তাঁর পরিবারের উপরেও। সর্ব ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে একান্ত সাক্ষতকারে তিনি বলেন, "আমার খেলা নিয়ে ট্রমায় ভোগে আমার পরিবার। বিশেষ করে আমার বাবা। কোনও ম্যাচে খেললাম না, বা খেলার মাঠে কিছু ভুল করলেই বাবা ফোন করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত আমার বাবা খুবই ট্রমায় ভোগেন। আমার দ্বিগুণ ভয় রয়েছে তাঁর মনে।"
ফাইনালের শুরুতেই মারাত্মক ভুল করেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। টসের সময় অশ্বিনকে বাদ দিতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল ক্রিকেট দুনিয়া। সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar) থেকে সচিন তেনডুলকর (Sachin Tendulkar)। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) থেকে রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri)। এমনকি রিকি পন্টিং (Ricky Ponting) থেকে স্টিভ ওয়া (Steve Waugh), ম্যাথু হেডেন (Matthew Hayden) পর্যন্ত ভারতের অধিনায়ক ও কোচের অদ্ভুত সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। বিশ্বের এক নম্বর বোলারকে ওভালের পিচে ছেঁটে ফেলা যে ঐতিহাসিক ভুল, সেটা নতুন ভাবে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এবার মেগা ফাইনাল থেকে বাদ যাওয়া অশ্বিন মুখ খুললেন। লেখা ভালো তিনি বোমা ফাটালেন। মেগা ফাইনালে বাদ যাওয়া নিয়ে তাঁর মনের মধ্যে তীব্র জ্বালা রয়েছে, সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেল। যদিও কয়েক দিন আগে অশ্বিন কিন্তু টুইটারে টিম ম্যানেজমেন্টকে জনসমক্ষে কচুকাটা করতে চাননি।
নিন্দুকদের চুপ করিয়ে তিনিও যে অনিল কুম্বলে (Anil Kumble)-হরভজন সিংয়ের (Harbhajan Singh) বিদেশে পারফর্ম করেছেন, সেটাও বুঝিয়ে দিলেন অশ্বিন। তিনি ফের বলেন, "ফাইনালের দল থেকে কেন বাদ গিয়েছিলাম, সেই উত্তর দেওয়া আমার কাছে খুবই কঠিন। খেলতে পারলে তো নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগত। কারণ আমি ফাইনালে পৌঁছাতে দলকে সাহায্য করেছিলাম। এমনকী ২০২১ সালের ফাইনালেও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চার উইকেট পেয়েছিলাম।"
বিদেশের মাটিতে দুই স্পিনার খেলানোর মতো পরিস্থিতি নেই। সেই অজুহাতে অশ্বিনকে ছেঁটে শুধু রবীন্দ্র জাদেজার (Ravindra Jadeja) ম্যানেজমেন্ট। অশ্বিন অবশ্য এই অজুহাত মানতে নারাজ। সোজা বলে দিচ্ছেন, বিদেশের মাটিতেও সাম্প্রতিক অতীতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তিনি। তিনি ফের যোগ করলেন, "সেই ২০১৮-১৯ মরসুম থেকেই বিদেশের মাটিতে আমার পারফরম্যান্স ভালো। আমার মনে হয় আমি দেশকে বহু ম্যাচ জেতাতেও পেরেছি। তবে কেউ যদি সেটা স্বীকার করতে না চায় তাহলে আমার কিছু করার নেই।"
অশ্বিনের বদলি হিসেবে যাঁকে খেলানো হয়েছে সেই উমেশ যাদব, তিনি ওভালে চরম ব্যর্থ। প্রথম ইনিংসে একটি উইকেটও পান নি। ২৩ ওভারে অকাতরে ৭৭ রান বিলিয়েছিলেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও তেমন দাপট দেখাতে পারেননি উমেশ। ৫৪ রানে ২ উইকেট নিলেও, দাপট দেখাতে ব্যর্থ হন। অশ্বিন মাঠে থাকলে বোলিং-এর পাশাপাশি ব্যাটিং-এ তাঁর কাছ থেকে কিছু মূল্যবান রানও পেতে পারত দল। ওভালের পিচ যে কেবল পেস সহায়ক নয়, বরং স্পিনাররা যে সেখানে সফল হতে পারেন, সে কথা ম্যাচ শুরুর আগেই জানিয়েছিলেন বহু বিশেষজ্ঞ। এমনকি চতুর্থ, পঞ্চম দিনে স্পিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেও জানিয়েছিলেন অনেকে। সেটা কর্ণপাত করেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। ফলে সাজঘরেই জায়গা হয়েছে অশ্বিনের। অস্ট্রেলিয়ার নাথান লিয়ঁ যেভাবে টার্ন আদায় করে নিয়ে রবীন্দ্র জাদেজাকে আউট করলেন সেটা দেখে ধারাভাষ্যের মাইক হাতে সৌরভকে বলতে শোনা গিয়েছিল অশ্বিনকে বসিয়ে ভুল করেছিল ভারতীয় দল। একই কথা শোনা গিয়েছিল বাকিদের মুখেও।
মাত্র ৯২টি টেস্টে ৪৭৪টি উইকেট। বাঁহাতি ব্যাটারদের বিরুদ্ধে অশ্বিনের রেকর্ড দারুণ। সেটা কীভাবে ভুলে গেল ভারতীয় দল? তবে অশ্বিনকে ছাঁটাই করার পর্ব কিন্তু নতুন নয়। এর আগে সেটা হল ২০১১ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের প্রথম একাদশে অশ্বিন জায়গা পাননি। ২ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেই ফাইনালে খেলেছিলেন হরভজন সিং। এরপর বিরাট কোহলির জমানায় বিদেশে একাধিক টেস্টে অশ্বিন সাজঘরে বসেছিলেন। এবারও তাঁকে রোহিত ও রাহুল দ্রাবিড়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হল। বিশ্বের এক নম্বর বোলারকে সাইডলাইনের বাইরে থেকেই মেগা ফাইনাল দেখতে হল। আর তাই ২০৯ রানে হেরে সেই সিদ্ধান্তের মাসুল দিলেন রোহিত-রাহুল জুটি। আর তাই হয়তো এবার অশ্বিন মুখ খুলতে বাধ্য হলেন।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)