Bhatar: শৌচকর্মের সময় অন্তর্বাসে থাকা টাকার বান্ডিল সোজা সেপটিক ট্যাঙ্কে! উদ্ধারে নেমে মৃত ২ ভাই
অন্তর্বাসের পকেটে পলিথিন প্যাকেটে মোড়ানো ছিল ১৪,৮০০ টাকা। সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলতেই নজরে পড়ে পলিথিন মোড়ানো বান্ডিলটি ভাসছে।
অরূপ লাহা: শৌচকর্মের সময় অসাবধানতাবশত পরিযায়ী শ্রমিকের পকেট থেকে পড়ে গিয়েছিল টাকার বান্ডিল। জলের তোড়ে সেই টাকা চলে যায় সেপটিক ট্যাঙ্কে। বিষয়টি বুঝতে পেরে দুই ভাইকে জানাতেই সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলে ওই টাকার বান্ডিল উদ্ধারে নামেন তাঁরা। শেষে ওই সেপটিক ট্যাঙ্কে তলিয়ে একসঙ্গে মৃত্যু হয় দুই ভাইয়ের। পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) ভাতার (Bhatar) থানার এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাইয়ের এমনই মর্মান্তিক পরিণতি হল কেরলে (Kerala)। ঘটনার জেরে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দুই ভাইয়ের নাম আলকাস শেখ (৩২) ও আসরাফুল শেখ(২৯) ওরফে বচ্চন। এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দা আলকাসরা চার ভাই। চার ভাই-ই বিবাহিত। বড় দাদা রূপচাঁদ শেখ বাড়িতে থাকেন। বাকি তিন ভাই সঞ্জীব শেখ, আলকাস ও আসরাফুল তিনজনে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। বছর দু'য়েক আগেই ওই তিন ভাই কেরলে কাজে গিয়েছিলেন। মাঝে ফিরেও আসেন। এখন আবার চারমাস আগে গিয়েছিলেন। কেরলের মালাপূরম জেলার ত্রিশূল এলাকায় অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গেই তাঁরা একটি ডেরায় থাকছিলেন।
সঞ্জীব জানান, সোমবার কাজ সেরে ডেরায় ফিরে আসার পর তিনি শৌচকর্ম সারতে যান। তখন আলকাস ও আসরাফুল রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর অন্তর্বাসের পকেটে ছিল ১৪,৮০০ টাকা। একটি পলিথিন প্যাকেটে মোড়ানো ছিল টাকার গোছাটি। শৌচকর্মের পর দেখেন টাকার বাণ্ডিল পড়ে গিয়েছে। জলের তোড়ে তা সরাসরি সেপটিক ট্যাঙ্কে চলে গিয়েছে। এরপরই ভাই আলকাস ও আসরাফুলকে বিষয়টি জানান। তারপর তিনজন মিলে একটি শাবল এনে ওই সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খোলেন। তখন তাঁদের নজরে পড়ে পলিথিন মোড়ানো বান্ডিলটি ভাসছে।
এরপর একটি মই এনে আলকাস প্রথমে টাকা উদ্ধার করতে নীচে নামেন। কিন্তু টাকার গোছা নিয়ে মই বেয়ে ওঠার সময়েই তিনি হঠাৎ পড়ে তলিয়ে যান। তা দেখে আসরাফুল তৎক্ষণাৎ নীচে নেমে দাদাকে উদ্ধার করতে যান। তিনিও একইভাবে তলিয়ে যান। দুই ভাইকে ওভাবে পড়ে যেতে দেখে সঞ্জীবও নামতে যান। কিন্তু তাঁকে অন্যান্য কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক ধরে আটকে দেন। এই ঘটনার পরেই খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। পুলিস ও দমকল এসে আলকাস ও আসরাফুলকে উদ্ধার করে। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসেই দুজন জ্ঞান হারিয়ে তলিয়ে যান। আর তারপর তাঁদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন, Student Death: ওভারটেক করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, বেপরোয়া গতিই কেড়ে নিল কলেজ পড়ুয়ার প্রাণ