শ্রীকান্ত ঠাকুর: মা আসতে বেশি দিন বাকি নেই, আমাদের নিত্যদিনের রুটিন ছেড়ে বেরিয়ে উৎসবের জোয়ারে গা ভাসাই। নতুন নতুন জামাকাপড় পরে ঠাকুর দেখা হোক বা বিভিন্ন রকমের খাবার চেখে দেখা এসব না করলে পুজো ঠিক জমে না। নিজেদের পুজোর খরচা হাত খরচা তুলতে উদ্যোগী বালুরঘাটের একদল মহিলা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

পুজোর সময় মানেই প্রতিটা পরিবারের অল্পবিস্তর খরচ বাড়ে। সকলেরই কমবেশি হাত খরচ দরকার পড়ে। এই বাড়তি খরচার সামলানোর মুখে রাস্তা পেয়েছেন বালুরঘাটের অন্ততপক্ষে ২০০ জন মহিলা। তারা প্যান্ডেলের নানারকম নকশা তৈরির কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন বিগত প্রায় চার মাস ধরে। পূজার আগে মন্ডপ শয্যার এই কাজে থেকে মাসে কেউ পাঁচ হাজার কেউ সাত হাজার টাকা কেউবা ১০ হাজার টাকা ইনকাম করছেন। এতে সংসারে যেমন বাড়তি উপার্জন হচ্ছে তেমনি পুজোর আগে হাত খরচা ও জমে যাচ্ছে তাঁদের। তবে শুধু পুজোর মরশুমে নয় সারা বছরই কম-বেশি প্যান্ডেল সাজানোর কাজে সুযোগ পান বালুরঘাটের বেশকিছু গৃহবধূ থেকে শুরু করে স্কুল ছাত্রী। বাড়ির সমস্ত দরকারি কাজ, পড়াশোনা সেরে বাড়তি সময় নষ্ট না করে সেই সময়ে মন্ডপ সজ্জার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে উপার্জনের পথ পেয়েছেন বালুরঘাটের বেশ কিছু গৃহবধূ থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া। 


আরও পড়ুন:Bangladesh: ফের উত্তপ্ত বাংলাদেশ, ৮ দফা দাবিতে রাস্তায় নামল মশাল মিছিল...


বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ সেই তেরো পর্বের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। পুজার মরসুম  মানেই সংসারে একটু  বাড়তি অর্থের প্রয়োজন। সে তার নিজের  পোশাকের জন্যই হোক বা প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া কিংবা পুজোর রাত জেগে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা সব ক্ষেত্রেই টাকা দরকার।। আর এই বাড়তি অর্থ উপার্জনের জন্য পূজোর আগে বালুরঘাট শহরসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে মহিলাদের উপার্জনের অন্যতম রাস্তাই হচ্ছে বিভিন্ন দুর্গাপূজার মন্ডপ সজ্জার জন্য জিনিসপত্র তৈরির কাজে নিযুক্ত হওয়া।


 কিন্তু তাঁরা কিভাবে এই কাজে নিযুক্ত হচ্ছেন?


বড় পুজা মন্ডপ গুলির ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন বা বাইরের দেওয়ালে সজ্জার জন্য পুতি, ফলের বীজ, কাঁচের টুকরো, বিভিন্ন ধরনের শুকনো পাতা, মশলা এছাড়াও কখনো কখনো প্লাস্টিকের টুকরো, থারমকল  দিয়ে সাজানোর কাজ হয়। আর এই ধরনের কাজে  নিয়োগ করা হয় মহিলাদের। বড় ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা তাদের গোডাউনে প্যান্ডেলের চাহিদা মত এই কাজ শুরু করেন পূজার চার পাঁচ মাস আগে থেকেই। এবং সারা বছরই কমবেশি রক্ষণাবেক্ষণ করার কাজেও মহিলাদের ব্যবহার করা হয়। তবে পূজার সময় এই কাজ তাঁরা অন্ততপক্ষে পাঁচ মাস করতে পারেন। কখনো ঘন্টা ভিত্তিক চুক্তিতে কখনো বা হাজিরার চুক্তিতে টাকা দিয়ে থাকেন মন্ডপ ব্যবসায়ীরা। বালুরঘাট শহরের ব্রিজকালি, উত্তামশা, সাহেব কাছাড়ি, পাওয়ার হাউস সর্বত্রই বড় ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের ঘরে এবং গোডাউনে এখন তিল ধারণের জায়গা নেই। সর্বত্রই ব্যস্ততা তুঙ্গে। 


আরও পড়ুন:Toma Mirza: এরা মানুষ! বদলের বাংলাদেশে এবার বিচারের দাবিতে কাঁদছেন তমা...


ঘন্টাভিত্তিক কাজের ক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায়, আবার কখনো হাজিরা চুক্তিতে ৮ ঘন্টা কাজের জন্য আড়াইশো থেকে তিনশো টাকা করে দিয়ে থাকেন ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা। তাতে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিনশ টাকা উপার্জন করতে পারেন মহিলারা। মাসের শেষে সব মিলিয়ে উপার্জনটা কখনোই পাঁচ হাজারের নিচে নয়। 


কেউ কলেজের ক্লাস শেষ করে, কেউবা বাড়ির কাজ শেষ করে ছেলেমেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়তি সময়টা নষ্ট না করে এই ডেকোরেশনের কাজ শুরু করেন। এতে যা ইনকাম হয় তা দিয়ে পুজোর হাত খরচা অনায়াসে চলে যায়। কেউবা সাহায্য করেন তার পরিবারকে।


শিল্পীদের বক্তব্য  এই সমস্ত কাজ করে একদিকে বাড়তি উপার্জন এর পাশাপাশি নিজেদের তৈরি জিনিসগুলো দিয়ে পুজোর প্যান্ডেল তৈরি হয়। তাদের তৈরি করা জিনিস আর দশটা মানুষ যখন দেখে নিজেদের একটু অন্যরকম লাগে বলে তারা মনে করেন।


আরও পড়ুন:Bangladesh: নামাজের সময়ে জাতীয় মসজিদে হঠাত্‍-ই সংঘর্ষ, বদলের বাংলাদেশে তুলকালাম...


ডেকরেটর ব্যবসায়ী রাজনারায়ণ সাহা চৌধুরী জানান, ‘দুর্গা পুজো আসা মানেই উৎসবমুখর হয়ে পড়া। প্রতি বছর গড়ে সাত থেকে দশটি বড় মণ্ডপের কাজ করতে হয়। জেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলাতেও পুজো মন্ডপের কাজ হয়ে থাকে। মূলত এই সমস্ত পুজো মন্ডপ সাজানোর জিনিস তৈরি করতে বিশেষ করে মহিলাদেরকেই নিযুক্ত করা হয়ে থাকে । শুধুমাত্র পুজোর সময় নয় সারা বছরই এরা কাজ করে থাকে কম বেশি পুজোর সময় এই কাজের পরিমান বেড়ে যাবার জন্য বেশি লোক নিযুক্ত করা হয়ে থাকে। মহিলারা ঘরে বসে কাজ করেন এবং এই কাজ তাদের একটা বাড়তি উপার্জনের রাস্তাও করে দেয়।'


 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)