MIM-এর সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত : আব্বাস, রাজনীতির কল্কে এখানে পাবে না: ত্বহা
`সাম্প্রদায়িক দল কোটি কোটি টাকা খরচা করে কিছু মুসলিমকে সিজনের শিয়াল হিসেবে পাঠাবে। কিন্তু অল সিজনের বাঘ এখানে বসে আছি। তাই সিজনের শিয়ালের এখানে কোনও জায়গা হবে না। তাড়া করব, গর্তে ঢুকে যাবে।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : হুগলির ফুরফুরা শরীফে এসে এদিন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন MIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে হইচই। এদিন বৈঠকের পর MIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানান, "সিদ্দিকির পাশেই আছি।" অন্যদিকে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি বলেন, "ফুরফুরা শরীফ একটি ঐতিহাসিক জায়গা। এখানে আশীর্বাদ নিতে আসেন ওয়াইসি। তার সঙ্গেই আমার সঙ্গে দেখা করেন।" MIM-এর সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে আব্বাস বলেন, "ওয়াইসি বলেন যে আমি সব জানি, শুনেছি। বাংলায় আমি আসছি। লড়াই করব। আপনার পিছনে থেকে আমি লড়াই করতে ইচ্ছুক। আপনার পিছনে থেকে আমি লড়াই করব।"
যদিও MIM-এর সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে এদিন স্পষ্ট করে কিছু জানাননি পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। তিনি বলেন, "ফ্রন্ট তো আমরা করব। সেই জায়গায় উনি ওনার বক্তব্যটা দিয়েছেন। বলেছেন যে আপনার সাথে থেকে লড়তে চাই। এখন আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করা হবে। ১০টি দলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই জোট প্রসঙ্গে কথা হয়েছে। তৃণমূল, বাম, কংগ্রেসকেও বলেছি। আমরা দুর্নীতির সঙ্গে লড়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বিজেপি ছাড়া সবার সঙ্গে জোট করতে আমরা ইচ্ছুক।"
ওদিকে MIM সুপ্রিমোর ফুরফুরা শরীফে আগমন প্রসঙ্গে ত্বহা সিদ্দিকি বলেন, "এসেছেন। চলে যাবেন চা খেয়ে। ফুরফুরায় তো সবার আসার অধিকার আছে। এটা হচ্ছে সম্প্রীতির ধর্মস্থান। এখানে সবাই আসবে। কিন্তু এখানে কেউ রাজনীতির করার জন্য কল্কে পেতে আসলে, পাবে না।" তাঁর কথায়, "ফুরফুরা শরীফের পীরজাদাদের পরিচয় হচ্ছে ধর্মগুরু হিসেবে। রাজনীতিক হিসেবে নয়। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আমরা আছি, থাকব।"
ত্বহা সিদ্দিকা স্পষ্ট জানান, "আব্বাস দল গড়ে নির্বাচনে লড়লে, লড়বে। বাংলায় ৭০ শতাংশ হিন্দু। ৩০ শতাংশ মুসলিম। হিন্দুরা চাইলে ৫ বছরের আগেই বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে পারত। মুসলিম ভোটটা হচ্ছে একটা ফ্যাক্টর। মুসলিম ভোট যেদিকে যাবে, তারাই জয়ী হবে। সাম্প্রদায়িক দল চাইবে এই মুসলিম ভোটটাকে ভাঙার জন্য। আর তার জন্য তারা কোটি কোটি টাকা খরচা করে কিছু মুসলিমকে সিজনের শিয়াল হিসেবে পাঠাবে। কিন্তু অল সিজনের বাঘ এখানে বসে আছি। তাই সিজনের শিয়ালের এখানে কোনও জায়গা হবে না। তাড়া করব, গর্তে ঢুকে যাবে। বাংলায় একটা মন্দির, মসজিদেও আঘাত করা যাবে না। ২০২১ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কবরে ঢুকাব। আর সাম্প্রদায়িক শক্তিকে যারা সাহায্য করবে, তাঁদেরও কবরে ঢুকাব।"
উল্লেখ্য, এদিন ফুরফুরা শরীফে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে ওয়াইসির বৈঠক প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছেন, "TMC-র চিন্তার কারণ আছে"। যদিও মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ও আব্বাস সিদ্দিকীর মধ্যে বৈঠক প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছেন, "১৩ মে যদি কাউন্টিং হয়, তাহলে ১৪ মে এরা সবাই পাততাড়ি গুটিয়ে দিল্লি চলে যাবে।" অন্যদিকে জমিয়তে-উলেমা-এ-হিন্দ প্রধান সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তোপ দাগেন, "বাংলায় মিম-এর মুরোলি দরকার নেই। ওদের সাথে বিজেপির অন্তর্নিহিত একটা সম্পর্ক আছে। বাংলা একটা যৌথ পরিবার, হিন্দু-মুসলমান মিলেমিশে থাকবে। ওদের তেতো মুখ হিন্দু-মুসলমানের বিভাজন তৈরি করে দেবে। ওরা বাংলার জন্য আগুন নিয়ে খেলতে এসেছেন। বাংলায় কোনও অবদান মিম-এর নেই।"
আরও পড়ুন, সোমবার মিছিলের আগে আজ রাতে শোভনের বাড়িতে BJP কলকাতা কোর কমিটির বৈঠক