নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রদীপ জ্বলেনি। ধান-দুব্বো-চন্দনেরও কোনও আয়োজন নেই। নেই শঙ্খধ্বনি। নিরানন্দ বিষণ্ণ আবহ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রত্যেক বছর মামারবাড়িতে এই ভাইফোঁটার উৎসব হত। কিন্তু এ বছর আর ঘটল না সেটা। হবে কী করে! দাদাই তো নেই! সারাদিন তাই মন খারাপ করে বসে আছেন শহিদ রাজেশ ওরাংয়ের বোন শকুন্তলা।


বাড়ির ছেলে শহিদ হয়েছেন। তা নিয়ে গর্ব আছে, তৃপ্তি আছে। কিন্তু শূন্যতাটাও সমান ভাবে রয়ে গিয়েছে। বাড়ির ছেলে আর কোনও দিনই বাড়িতে ফিরে আসবে না, এই চির-হারানোর বিষণ্ণতা সকলের চোখে-মুখে।


১৭ জুন লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে সেনাসংঘর্ষে মৃত্যু হয় শকুন্তলার দাদা রাজেশের। প্রত্যেক বছর পুজোয় বাড়ি আসতেন রাজেশ। এক মাস ছুটি কাটিয়ে ভাইফোঁটা নিয়ে আবার কাজে ফিরতেন তিনি। কিন্তু এ বার তো আর সেটা হওয়ার নয়। আর সেই বাস্তবটাই মেনে নিতে পারছেন না শকুন্তলা। অন্য দিনের কথা আলাদা। কিন্তু আজ, ভাইফোঁটার দিনটিতে দাদা না থাকার যন্ত্রণাটা খুবই তীব্র ভাবে ছুঁয়ে যাচ্ছে শকুন্তলাকে।


শকুন্তলা বলেন, 'প্রত্যেক বছর এই ভাইফোঁটার দিনটিতে আমি দাদা, আমরা সকলে মামার বাড়ি রাধাকৃষ্ণপুরে চলে আসি৷ এখানেই আমাদের ফোঁটা হত। কিন্তু, এ বছর দাদা নেই। তাই ভাইফোঁটার কোনও অনুষ্ঠানও হবে না। তবুও এসেছি। এ বাড়িতে দাদার স্মৃতিটা তো রয়ে গিয়েছে। সেটা অনুভব করার জন্যই এখানে চলে এসেছি। পুরনো দিনের কত কথা আজ মনে পড়ছে।' 


কী বলছেন রাজেশ-শকুন্তলার মামা? মামা মঙ্গল সর্দার বলেন, 'আজ এ বাড়িতে আমাদের ফোঁটার কোনও আয়োজনই নেই। বাড়ির ছেলে মারা গিয়েছে, কী ভাবে ফোঁটা হবে!' কথা বলতেই বলতেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি।


দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন রাজেশ। তিনি মহৎ। কিন্তু তবুও আজকের দিনটিতে দাদার ওই মহত্ত্বটুকুতে কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেন না শকুন্তলা। হতে পারে তাঁর দাদা দেশের মহান সৈনিক, কিন্তু তিনি তো তাঁর দাদাও! দাদাকে না পেয়ে ভাইফোঁটার দিনে তাই বেদনার অন্ধকারে চুপ করে বসে আছেন বোন শকুন্তলা। মন মানছে না তাঁর। 


আরও পড়ুন:  এলাকা দখলের লড়াই, দফায় দফায় সংঘর্ষে রক্তাক্ত কোচবিহারের নাটাবাড়ি