Anamika Roy: `স্বপ্নপূরণ`, দীর্ঘ লড়াইয়ের পর হরিহর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগ দিলেন অনামিকা
`আগামীকাল থেকে আমি ছাত্র ছাত্রীদের পড়াতে পারব। এটা মনে হচ্ছে একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটা পূরণ হল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সহ আমার আইনজীবী, সবাইকে ধন্যবাদ।`
নারায়ণ সিংহ রায়: অবশেষে নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে চাকরিতে যোগ দিলেন শিলিগুড়ির অনামিকা রায়। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও চারমাস অপেক্ষা করতে হয়েছে অনামিকাকে। জানা গিয়েছিল পুলিশ ভেরিফিকেশন পর্ব সম্পন্ন না হওয়াতেই তার নিয়োগ আটকে ছিল। যা নিয়ে পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি পুলিশের কাছ থেকে জবাবদিহিও তলব করেন। বিচারপতির ভর্ৎসনার দু-ঘন্টার মাথায় অনামিকাকে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেয় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্যদ। এরপরই বুধবার কলকাতায় পর্যদের কার্যালয় ডিরোজিও ভবন থেকে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করেন অনামিকা রায়। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে যথেষ্ঠই খুশি অনামিকা। তিনি জানিয়েছেন বিচারব্যবস্থার উপরে তাঁর আস্থা আছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেও তাঁর গভীর কৃতজ্ঞতার কথা জানান তিনি।
উল্লেখ্য এই চাকরি নিয়ে ২০১৮ সাল থেক টানাপোড়েন চলছে। প্রথমে এই চাকরি পান রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারির মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন বলে নিশ্চিত হয় আদালত। তারপরই আদালতের নির্দেশে অঙ্কিতার চাকরি বাতিল করে শিলিগুড়িরই ববিতা সরকারকে সেই চাকরি দেওয়া হয়। কিন্তু পরে জানা যায় ববিতাও অ্যাকাডেমিক স্কোরে ভুল থাকার জন্য চাকরি পেয়েছেন। কয়েক মাস চাকরির পর আদালতের নির্দেশে ববিতাকেও সেই চাকরি হারাতে হয়। এবার দাবিদার হিসেবে সামনে আসেন শিলিগুড়ির অনামিকা রায়। তাঁকে এই চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এমনকি অঙ্কিতা অধিকারীর ফেরত দেওয়া মাইনেও ববিতা সরকারের থেকে নিয়ে অনামিকাকে দেওয়া হয়। তবে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সরকারি দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এতদিন ঝুলেই ছিল অনামিকার চাকরির বিষয়টি। পরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ফের কড়া অবস্থান নিতেই দ্রুত অনামিকাকে নিয়োগপত্র তুলে দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
শিলিগুড়ির কাছে আমবাড়ির হরিহর উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার চাকরিতে যোগ দেন অনামিকা রায়। নিয়োগ নিয়ে খানিকটা দুঃশ্চিতার কথা জানান তিনি। অনামিকা বলেন, "খানিকটা চিন্তায় ছিলাম। হাতে নিয়োগপত্র পেলেও শিক্ষা দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট স্কুলকে যতক্ষণ পর্যন্ত না নির্দেশ দিচ্ছে, ততক্ষণ স্কুল আমাকে নিয়োগ করবে না। কাজেই পুলিস ভেরিফিকেশনের ঘটনা মাথায় রেখে খানিকটা চিন্তায় ছিলাম। তবে গতকাল রাতে ফোন করে নিয়োগের কথা বলা হয়। স্কুলকেও নির্দেশ দিয়েছে। আজ বিভিন্ন কাগজপত্রের কাজ সম্পন্ন হল। আগামীকাল থেকে আমি ছাত্র ছাত্রীদের পড়াতে পারব। এটা মনে হচ্ছে একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটা পূরণ হল। এই আনন্দে আমার পরিবারও শরিক। পাশাপাশি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সহ আমার আইনজীবী, সবাইকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি যাঁরা আজও লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছেন, তাঁদের পাশে রয়েছি।"
Purba Bardhaman: মায়ের নামে ঋণ ছেলের, অবিলম্বে শোধ করতে চাপ বেসরকারি সংস্থার, আত্মঘাতী বাবা-মা!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)