Anubrata Mondal: সাদা কাগজেই ১৪ দিনের বেড রেস্ট লিখতে নির্দেশ! অনুব্রতকাণ্ডে বোমা ফাটালেন চিকিৎসক
Anubrata Mondal: অনুব্রত মণ্ডলের অনুরোধ ফেলতে পারেননি! ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ ১০০ শতাংশ সত্যি বলে স্বীকার চিকিৎসকের। বীরভূমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH) হিমাদ্রি আরি জানালেন, `এইভাবে কারোও বাড়িতে কোনও টিম পাঠাতে হলে অবশ্যই অনুমতির প্রয়োজন হয়। তবে এমন কিছুই গতকাল হয়নি। বাকি সুপার বলতে পারবেন তিনি কার নির্দেশে পাঠিয়েছিলেন।`
প্রসেনজিৎ মালাকার: অনুব্রত মণ্ডলের সিবিআই হাজিরা নিয়ে টানাপোড়েন-দোলাচালের মধ্যেই এবার বিস্ফোরক চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। তাঁর স্পষ্ট কথা, সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখে দিতে বলেন সুপার। একইসঙ্গে তিনি জানান, তাঁকে বেড রেস্ট লিখে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন খোদ অনুব্রত মণ্ডলই। অনুব্রত মণ্ডলের কথাতেই তিনি ১৪ দিনের বেড রেস্টের পরামর্শ লিখে দেন। চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর কথায়, 'সাদা কাগজে লিখে দিন', নির্দেশ দিয়েছিলেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারের। ওদিকে '১৪ দিনের বেড রেস্ট লিখে দিন', অনুরোধ করেন অনুব্রত মণ্ডলের। এই চিকিৎসকই মঙ্গলবার বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যান তাঁকে দেখতে। আর তারপরই ভাইরাল হয়েছে তাঁর সঙ্গে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারের একটি অডিয়ো ক্লিপ। যা ঘিরেই চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। সামনে এসেছে সিবিআই হাজিরা এড়াতে 'কেষ্ট লীলা'!
আরও পড়ুন, Anubrata Mondal Goruchor: অনুব্রতকে দেখতেই 'গোরুচোর' চিৎকার, ন্যাড়া করে লাঠি দিয়ে মারার নিদান!
যে ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ ১০০ শতাংশ সত্যি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। এপ্রসঙ্গে চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, 'আমি একজন সরকারি কর্মচারী। আমার পরিচয় হচ্ছে, আমি একজন জেনারেল সার্জেন এবং আমি সরকারি হাসপাতালের কর্মচারী। তাই আমি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের আমার ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের অর্ডার মানতে বাধ্য। ফলে আমাকে সুপার যা বলেছেন, আমি সেই অনুযায়ী কাজ করেছি।' একইসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলকে বেড রেস্টের 'প্রেসক্রিপশন' লিখে দেওয়া নিয়েও বোমা ফাটিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তিনি স্পষ্ট জানান, 'আমি জিজ্ঞাসা করি যে, স্যার আমি প্রেসক্রিপশনটা কীসে লিখব। উনি বলেন, আপনি আগে গিয়ে তো দেখুন। তখন আমি আবার বললাম যে, একটা প্রেসক্রিপশন বা অ্যাডভাইস তো করতে হবে, সেটা করব কীসে? তাহলে হাসপাতাল থেকে একটা পেপার ইস্যু করে দিন। বললেন, না আপনি সাদা কাগজে লিখে দিন... ওটা প্রেসক্রিপশন নয়। কারণ আমি ড. বুদ্ধদেব মুর্মুকে বলেছিলাম ওনার নামে একটা কাগজ হাসপাতাল থেকে ইস্যু করে দিন। উনি বলেছিলেন, কাগজের কোনও দরকার নেই। আপনি একটা সাদা কাগজে লিখে দিন। আমার কাছে নিজের প্যাডও ছিল না। আমি ওনার কাছে গিয়ে বললাম, একটা A4 সাইজের সাদা কাগজ দিন। সেই সাদা কাগজ নিয়ে আমি দেখি যে, ফিসচুলায় সংক্রমণ আছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে অল্প। রক্তচাপটাও একটু বেশি। আর অসম্ভব টেনশন ও চাপের মধ্যে আছেন। ডিপ্রেশনেও আছেন। উনি আমাকে অনুরোধ করেন যে, আমাকে ১৪ দিনের বেড রেস্ট লিখে দিন।'
আরও পড়ুন, Anubrata Mandal: অনুব্রতর জন্য দুয়ারে চিকিত্সক; আমজনতার বাড়ি যাবেন তো সরকারি ডাক্তাররা! সরব অনুপম
চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর কথায়, 'এবার আমি আর একজন ব্রাদার গিয়েছি। এমন নয় যে হাসপাতালের মত অনেক ডাক্তার, নার্সের মধ্যে আছি। আমি ওনার বাড়িতে গিয়েছি। উনি একজন সভাপতি। উনি অনুরোধ করছেন। আমি সেটা ফেলতে পারিনি। এটা হাসপাতাল হলে হয়তো ক্ষেত্রটা অন্য হত। আমাকে সুপার যা বলেছেন, আমি সেটাই পালন করেছি মাত্র। আমি ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা বলেছিলাম। কিন্তু সুপার বলেন, ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই।' প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারের কথাতেই অনুব্রত মণ্ডলকে বাড়িতে দেখতে যান চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী।
যে প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বোলপুর হাসপাতালের সুপার ড. বুদ্ধদেব মুর্মু দাবি করেছিলেন, 'জেলা প্রশাসন আমাদের কাছে আবেদন করেছিল একটি চিকিত্সক দল পাঠানোর জন্য। অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। তবে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি নেই।' যদিও, এদিন বীরভূমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH) হিমাদ্রি আরি জানান, 'এইভাবে কারোও বাড়িতে কোনও টিম পাঠাতে হলে অবশ্যই অনুমতির প্রয়োজন হয়। তবে এমন কিছুই গতকাল হয়নি। বাকি সুপার বলতে পারবেন তিনি কার নির্দেশে পাঠিয়েছিলেন।'