BSF: স্বরূপনগর সীমান্তে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন মহিলা, বিএসএফ ধরতেই বেরিয়ে এল আসল কাহিনি
বিএসএফকে ওই মহিলা জানিয়েছেন মুম্বই ওই নিষিদ্ধ পল্লিতে থাকতে থাকতেই সুযোগ খুঁজছিলাম। পরে সুযোগ পেতেই তিনি মুম্বই থেকে পালিয়ে সোজা চলে আসেন হাকিমপুরে। পথচলতি মানুষের সহায়তায় তিনি দেশে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। তখনই তিনি ধরা পড়ে যান
বিমল বসু: কাজ দেওয়ার নামে পাচার করে দেওয়া হয় সুদূর মুম্বইয়ে। সেখানে তাঁর ঠাঁই হয় নিষিদ্ধ পল্লিতে। সেই নরক থেকে পালিয়ে স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্তে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে গেলেন এক বাংলাদেশি মহিলা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল তাঁর করুণ কাহিনি। হাকিমপুর সীমান্তে ওই মহিলাকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন বিএসএফ জওয়ানরা। তখনই তাঁকে আটক করে জেরা করেন জওয়ানরা। জানা যায় ওই মহিলার বাড়ি বাংলাদেশের যশোরের শেখ পাড়ার খানপুর গ্রামে। ভারতে কাজ দেওয়ার নাম করে তাকে পশ্চিমবঙ্গে আনে রাজু নামে এক যুবক। তারপর তাকে পাচার করে দেওয়া হয় মুম্বইয়ে। এই ঘটনা ২ মাস আগের।
আরও পড়ুন-নির্বাসিত এআইএফএফ! কে কী বলছেন, দেখে নিন
এদিকে, বিএসএফকে ওই মহিলা জানিয়েছেন মুম্বই ওই নিষিদ্ধ পল্লিতে থাকতে থাকতেই সুযোগ খুঁজছিলাম। পরে সুযোগ পেতেই তিনি মুম্বই থেকে পালিয়ে সোজা চলে আসেন হাকিমপুরে। পথচলতি মানুষের সহায়তায় তিনি দেশে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। তখনই তিনি ধরা পড়ে যান। মহিলাকে আটক করার পরই বিএসএফ যোগাযোগ করে বাংলাদেশের স্বেচ্ছসেবী সংস্থা সংলাপ-এর সঙ্গে। ওই সংগঠনটি বহু দিন ধরেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মানব পাচার রোধে কাজ করে চলেছে। সংলাপ-এর কর্মী আরিফ বিল্লা ও বিএসএফ ইন্সপেক্টর আদিত্যা নারায়ণ এবং বিএসএফ কমান্ডার দামান সিং যাদব ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার পুরো ঘটনা জানতে পারেন।
ওই মহিলার কথা শুনে বিএসএফ বুঝতে পারেন ওই মাহিলা মানব পাচারের শিকার। এরপরই বিএসএফ যোগাযোগ করে বাংলাদেশের মহিলা আইনজীবী সংগঠন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর সঙ্গে। মঙ্গলবার ওই মহিলাকে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনার ভারত-বাংলাদেশে সীমান্ত হামশাই এদেশে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েন বাংলাদেশিরা। তাদের মধ্যে মহিলা ও শিশুকেও দেখা যায়। গত ১৫ মে ভারতে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েন ৮ বাংলাদেশি। ওইসব বাংলাদেশি যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে স্বরূপনগরের হাকিমপুরে ঢোকার চেষ্টা করে। সেইসময় বিএসএফ জওয়ানদের চোখে পড়ে যায় তারা। তাদের থামতে বললে তা না করে তারা ফের বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে পালাতে থাকে। সঙ্গে বাচ্চা থাকায় ওই ৮ জন পালাতে পারেনি। তখনই তাদের ধরে ফেলে বিএসএফ। এদিন ওইসব বাংলাদেশিদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। স্বরূপনগর থানার পুলিস তাদের গ্রেফতার করে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পাঠায়। সেখানে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, গত বছর ১৬ অক্টোবর চুঁচুড়ার একটি আবাসন থেকে ধরা পড়েন ৬ বাংলাদেশি। ব্যান্ডেলের গ্রিন পার্কের একটি আবাসন থেকে ওইসব বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ওই ৬ জন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। গ্রিন পার্কের যে ঘরটিতে তারা ছিল সেটি আকাশ দাস নামে এক ব্যক্তির। আকাশ উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের বাসিন্দা। গোয়েন্দাদের অনুমান কোনও চক্র চালায় আকাশ। বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতে এনে তাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের নথি তৈরি করে দেওয়া হয়। তারপর ওইসব নথি ব্যবহার করে তাদের পাঠিযে দেওয়া হয় উপসাগরীয় অঞ্চলের কোনও দেশে। ওইসব লোকজনের জন্মের শাংসাপত্রও তৈরি করে দিত আকাশ।