Basirhat: তৃণমূলের দলীয় বিবাদে গুলিবিদ্ধ কনস্টেবল, গ্রেফতার ৪১, উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র
তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতাকে লক্ষ্য করে চালানো গুলি লাগে পুলিসকর্মীর কাঁধে। ঘটনায় অভিযান চালিয়ে একচল্লিশ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা দোষী নয় এমনটাই দাবি তৃণমূলের একাংশের।
অয়ন ঘোষাল: পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত বসিরহাট। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে থমথমে বসিরহাটের বসিরহাটের শাকচুড়া এলাকা। গুলিবিদ্ধ পুলিসকর্মী। রাতেই তাঁকে আনা হয় বারাসতের বেসরকারি হাসপাতালে। অভিযান চালিয়ে একচল্লিশ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। উদ্ধার করা হয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্রও। তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতাকে লক্ষ্য করে চালানো গুলি লাগে পুলিসকর্মীর কাঁধে। ঘটনায় ইতোমধ্যেই বসিরহাট থানার সামনে তৃণমূলের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা দোষী নয় এমনটাই দাবি তৃণমূলের একাংশের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিসের লাঠিচার্জ করেছে পুলিস।
আরও পড়ুন, Duare Sarkar: 'ঘেউ ঘেউ'-এ হল কাজ, কুত্তা থেকে দত্ত হলেন বাঁকুড়ার শ্রীকান্তি
প্রসঙ্গত, বসিরহাটে গুলিবিদ্ধ পুলিস কর্মীর নাম প্রভাত সর্দার। বাড়ি নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় বয়নালা গ্রামের। ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ পুলিসে যোগ দেয় প্রভাত। মা,ছোট একটি মেয়ে ও স্ত্রী কে নিয়ে সংসার তার। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ ডিউটির জন্য বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তারপরেই এই ঘটনা। মঙ্গলবার বারাসাতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার হবে বলে পরিবার সূত্রে খবর।
ঠিক কী হয়েছিল বসিরহাটে?
টাকি রোডে শাকচুড়া বাজারে মুখোমুখি দুটি ভবন। একটি খাতায় কলমে ক্লাব ঘর। আসলে এটি স্থানীয় ইটভাটা ব্যবসায়ী সিরাজুল বেশে-এর কার্যালয়। আর ঠিক উল্টোদিকে নিমদাঁড়িয়া কোদালিয়া অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিস। সিরাজুল এবং সাহানুর মন্ডল(জেলা পরিষদ সদস্য) এর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ। সূত্রের খবর, বিবাদ মূলত এলাকা দখল নিয়ে। সিরাজুল বেশে একসময় প্রদেশ কংগ্রেস জেলা পরিষদ সভাপতি ছিলেন। পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। দীর্ঘদিনের সক্রিয় কর্মী হওয়া সত্বেও সম্প্রতি সাহানুর গোষ্ঠীর দাপটে একেবারে ব্যাকফুটে চলে যান। সেই থেকে বিবাদের চোরাস্রোত আরও বাড়তে শুরু করে। এই পুরনো বিবাদের রেশ সোমবার রাতে চরমে ওঠে।
স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি নজরুলের দাবি, সিরাজুলের অফিসে প্রথমে কিছু যুবক হামলা চালায়। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক বাইক ভাঙচুর করা হয়। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। অন্যদিকে, সাহানুর অনুগামীদের দাবি, রাস্তা দিয়ে তাদের এক কর্মী যাওয়ার সময় প্রথমে গালিগালাজ এবং পরে হামলা হয়। সেই যুবক সাহানুরের অফিসে বিষয়টি জানালে সেখান থেকে কিছু দলীয় কর্মী ছুটে আসে। তখনই দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একসময় পরিস্থিতি চুড়ান্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে বসিরহাট থানার বিশাল পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছায়। পুলিসের সামনেই আরও প্রায় আধ ঘন্টা দু-পক্ষের সংঘর্ষ চলতে থাকে। এরইমধ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। মূলত ঘটনাস্থলে উপস্থিত, জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল জামান ওরফে বুলবুল (সাহানুর ঘনিষ্ঠ) কে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলে তার নিজের দাবি।
গুলি লাগে এলাকায় কর্তব্যরত কনস্টেবল প্রভাত সর্দারের বাঁ দিকের কাঁধে। প্রথমে বসিরহাট মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে আরজিকর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পথে শ্বাসকষ্ট বাড়ায় ঝুঁকি না নিয়ে তাকে মধ্যমগ্রামের একটু আগে যশোর রোডে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় প্রায় ৪১ জনকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে প্রাথমিক খবর, এরা প্রায় সকলেই সিরাজুল বেশে গোষ্ঠীর। তবে কে গুলি চালিয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেনি পুলিস।
আরও পড়ুন, Kamalgazi Gas Leak: কামালগাজিতে কারখানা থেকে গ্যাস লিক! অসুস্থ বেশ কয়েকজন