নিজস্ব প্রতিবেদন: বেলুড় মঠে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা নিয়ে জোরালো সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা নিয়ে ইতিমধ্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, বেলুড় মঠের মতো জায়গায় কীভাবে রাজনৈতিক মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে মঠ কর্তৃপক্ষ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বেলুড় মঠের জেনারেল সেক্রেটারি সুবিরানন্দ মহারাজ বলেন, “আমরা জাগতিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।”


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে সাংবাদিক বৈঠকে সুবিরানন্দ মহারাজ। তিনি জানান, গতকাল রাত ৯টায় বেলুড় মঠে আসেন প্রধানমন্ত্রী। ঘরের ছেলে বলে নিজেকে নিজেই সম্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান এখানে এলে শক্তি পান। এরপর ৩০ মিনিট ধ্যান করেন তিনি। সিএএ প্রসঙ্গ নিয়ে সুবিরানন্দজির মন্তব্য, আমরা জাগতিক বিষয়ে নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য কার্যত এড়িয়ে গিয়ে বলেন, তাঁকে ঘরের ছেলে হিসাবে দেখি আমরা।


বেলুড় মঠ একটি ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান। রাজনীতি থেকে শতকোটি দূরে। বিবেকানন্দের জন্মদিন অনুষ্ঠানে বেলুড় মঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধীতা নিয়ে জোর সওয়াল করলেন। প্রয়োজনে বিরোধীদের একহাত নিতেই ভুললেন না। এরপরই বিরোধীরাও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছেন। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী বিবেকানন্দকে ব্যবহার করছেন রাজনৈতিক স্বার্থে। মিশন মঞ্চে তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য লজ্জাজনক।


আরও পড়ুন- লস্কর জঙ্গিদের গাড়ি থেকে গ্রেফতার রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত পুলিস আধিকারিক


কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর তোপ, বেলুড় মঠকে রাজনৈতিক আখড়া বানাবেন না প্রধানমন্ত্রী। এমন মন্তব্য করে এই প্রতিষ্ঠানকে অপবিত্র করেছেন তিনি। অন্য দিকে তৃণমূলের তরফেও সমালোচনা করা হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, নিজেকে লজ্জিত মনে করছি। মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। বাংলায় এনআরসি, সিএএ, এনপিআর হতে দেওয়া হবে না।


রবিবার বেলুড় মঠে বিবেকানন্দের জন্মদিন অনুষ্ঠানে বিরোধীদের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন সিএএ নিয়ে। বেলুড় মঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যে জোর বিতর্ক তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, সিএএ নিয়ে যুব সম্প্রদায়কে ভুল বোঝানো হচ্ছে। বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থেই ভুল বোঝানো হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেন। তাঁর মন্তব্য, ছোটো ছোটো বিদ্যার্থীরা বুঝে গিয়েছে, আর রাজনৈতিক কারবারীরা বোঝার চেষ্টা করছেন না। আসলে, তারা না বোঝার চেষ্টা করছে বলে বিরোধীদের তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী।


এ দিন ফের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আইন কারোর নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নিচ্ছে না। নাগরিকত্ব প্রদান করছে। ৩ প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের দুর্দশার কথা ভেবেই এই আইন নিয়ে আসা হয়েছে। মোদী বলেন, সরকার রাতারাতি নাগরিকত্ব আইন আনেনি। অসমের বিক্ষোভ নিয়ে তাঁর মন্তব্য, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যের জনজাতির ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাপনে কোনও আঘাত আনতে দেবে না এ সরকার। বিরোধীদের ‘প্রচেষ্টা’ ব্যর্থ করার কার্যত অঙ্গিকার নিলেন প্রধানমন্ত্রী, তাও আবার বেলুড় মঠের মতো অরাজনৈতিক মঞ্চে।