চিত্তরঞ্জন দাস: মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে শারীরিক অত্যাচারের ঘটনায় তোলপাড় দেশ। আর এরাজ্যের পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের দক্ষিণখন্ড গ্রামে এক আদিবাসী প্রৌঢ়াকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে করা হল অমানবিক অত্যাচার। ভারত জাকাত মাঝি পরগণা মহলের সহায়তায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই আদিবাসী প্রৌঢ়া সুবিচার চাইতে গেলেন দুর্গাপুরের ফরিদপুর থানায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- ঘোড়া কেনাবেচার আতঙ্ক! পঞ্চায়েতের ফল প্রকাশের পরই নয়া পদক্ষেপ বিজেপির


দুর্গাপুরের ফরিদপুর থানার ইছাপুর গ্রামের এক মহিলা সরস্বতী বাউরি জ্যোতিষ চর্চা করেন। তিনি নাকি অন্ডাল থানার দক্ষিণখন্ডের টামারবাঁধ গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দাকে নিদান দেন যে তাদের গ্রামে একজন ডাইনি রয়েছে। এরপরেই টামারবাঁধের বাসিন্দারা গ্রামে ফিরে এসে প্রায় ৭০ বছরের এক আদিবাসী প্রৌঢ়া ও তার মেয়েকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি তাদের ওপরে অমানবিক নির্যাতন চালায়। ওই প্রৌঢ়ার মাথার চুল ও চামড়া ধারালো ব্লেড দিয়ে কাটার পরে তাদেরকে শুইয়ে তাদের বুকের ওপরে বসে তাদের নাক টিপে ধরে মল,মুত্র খাওয়ানো হয়। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন ওই প্রৌঢ়া।


এখানেই অত্যাচারের শেষ নয়। বিষাক্ত কাঁটার ওপরে তাদেরকে প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় বসতে বাধ্য করে অত্যাচারীরা বলেও অভিযোগ। শারীরিক ও মানসিকভাবে অমানবিক অত্যাচারের পরে তাদের কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাদের গ্রামছাড়া করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে ভারত জাকাত পরগণা মহল নামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের সংগঠনের কর্তা ব্যাক্তিরা ওই প্রৌঢ়া ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ান। বৃহস্পতিবার ওই প্রৌঢ়াকে নিয়ে যান দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের আধিকারিকের কাছে। সেখান থেকে অন্ডাল থানায় যান সুবিচারের আশায়।


ওই প্রৌঢ়া নিজের ও মেয়ের ওপরে হওয়া ভয়াবহ অত্যাচারের নির্মম কাহিনি বলতে গিয়ে বলেন,"ডাইনি অপবাদ দিয়ে আমাকে ও মেয়েকে খুব মারধরের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মল মুত্র জোর করে খাওয়ালো। আমাকে এমন মারল আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। আমার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিল। আমি চাই ওদের চরম শাস্তি হোক।"


আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগণা-র অন্যতম নেতা লেবু হেমব্রম বলেন,""একশ্রেনীর গুনীন,তান্ত্রিকরা ডাইনি বলে গ্রামের মানুষদের উস্কে দিয়ে এই কুসংস্কারকে বাঁচিয়ে রাখছেন।অমানবিক অত্যাচার হয়েছে এই প্রৌঢ়া ও তার পরিবারের উপরে। তাদেরকে মল,মূত্র খাওয়ানো,বিষাক্ত কাঁটায় জোর করে বসতে বাধ্য করানো হয়েছে। তাদেরকে মারধরের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘরছাড়া,গ্রামছাড়া করা হয়েছে। আমরা তাই পুলিসের কাছে এসেছি সুবিচারের জন্য। যদি দোষীরা চরম শাস্তি না পায় আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে নামব। এই ডাইনি প্রথার মত কুসংস্কার বন্ধ হওয়া উচিত।" তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পালিয়েছে বলে জানা যায়।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)