Malbazar: নদীর জল বাড়ছে, স্রোতে আটকে জঙ্গলে ফিরতে পারছে না হাতি...
Heavy Rain in Malbazar: মাল ব্লকের তেশিমলার কাছে কুমলাই নদীতে আটকে থাকল একটি হাতি। একদিকে নদীর জল, অন্য দিকে মানুষের ভিড়। জঙ্গলে ফিরতে পারছে না হাতিটি।
অরূপ বসাক: মাল ব্লকের তেশিমলার কাছে কুমলাই নদীতে আটকে পড়ল বুনো হাতি। একদিকে নদীর জল, অন্য দিকে মানুষের ভিড়। জঙ্গলে ফিরতে পারছে না হাতিটি।
কী ঘটেছিল?
আজ, মঙ্গলবার মাল ব্লকের অন্তর্গত কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের নেপুচাপু চা-বাগানের ২২ নম্বর সেকশনে প্রথমে আটকে পড়ে এই বুনো দাঁতাল। এর পর মানুষের চিৎকারে হাতিটি কুমলাই নদীর ধারে চলে যায়। কিন্তু নদীতে জল বেশি থাকায় নদী পার করতে অসুবিধায় পড়ে হাতিটি। এদিকে লোকজন তখনও চিৎকার করে চলেছে। তাতে ভয় পেয়ে হাতিটি নদীর আরও গভীরে চলে যায়। কিন্তু যেতে পারে না। জল বেশি থাকায় আবার ফিরে আসে চরে।
দেখতে গেলে এক হিসেবে, সাধারণ মানুষের জন্যই জঙ্গলে ফিরতে পারছে না হাতিটি। জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে খাবারের সন্ধানে হাতিটি তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এসেছিল। সকালে আর জঙ্গলে ফিরতে না পেরে নদী-সংলগ্ন এলাকায় চলে যায়। বন দফতর হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে সামগ্রিক ভাবেই নর্থ বেঙ্গল জুড়ে বৃষ্টি-পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। আজ,, মঙ্গলবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে। বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিও শুরু হয়। তিস্তা-সহ বিভিন্ন নদীর জল বেড়েছে। চিন্তা বেড়েছে নদী-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের। তিস্তার মেখলিগঞ্জ ও এনএইচ৩১ জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সর্তকতা জারি হয়েছে সকালেই। তিস্তার দোমহনীতে হলুদ সর্তকতা। জলঢাকা নদীর সংরক্ষিত এলাকায় রয়েছে হলুদ সতর্কতা। জলপাইগুড়ি গজলডোবা ব্যারেজ থেকে আজ সকাল ছটায় জল ছাড়ার পরিমাণ ৩২৩৮.৩৪ কিউমেক।
এদিকে রাতের প্রবল বৃষ্টিতে মাল ব্লকের লীস নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু এলাকা-সহ আশেপাশের কৃষিজমি। কালিম্পং পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি হলে যে কোনও মুহূর্তে ডুয়ার্সের লিস, ঘিস, চেল নদী গতিপথ পাল্টে গ্রামমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। যেভাবে নির্বিচারে নদীগুলির বুকে ভারী মেশিনের সাহায্যে খনন করে বালি, পাথর তুলে নেওয়া হচ্ছে, তাতে বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদী যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসতে পারে বলে আশঙ্কা আগেই প্রকাশ করেছিল সেচ দফতর।
বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের চান্দা কোম্পানি এলাকায় রেল ও জাতীয় সড়কের সেতুর মাঝে লিস নদীর তীব্র জলস্রোত এক লহমায় বাঁধ উড়িয়ে দিয়ে বসতি এলাকার দিকে এগিয়ে চলেছে। ঘরবাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। চাষজমি আপাতত জলের তলায়। ক্ষিপ্ত এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছেন সেচ দফতরের মাল সাব ডিভিশনের কর্তারা। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার পাশাপাশি ভাঙা বাঁধ মেরামত করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক।
এদিকে সেবকে ধস। এই ধসের কারণে থমকে যায় গাড়ি চলাচল। গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রবল বৃষ্টি হয় পাহাড় এবং সমতলে। পাহাড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে ডুয়ার্সের নদীগুলি যেমন ফুলে-ফেঁপে উঠেছে তেমনি পাহাড়ে বিভিন্ন রাস্তায় ধস নামার খবর পাওয়া গিয়েছে। গতকাল গভীর রাতে সেবক সেতুর কাছে ভূমিধসে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল।
আরও পড়ুন: Nepal: বিপুল বর্ষণ, ভয়ংকর ভূমিধস! ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু গোটা পরিবারের...
রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে ভেঙে গেল মাল ব্লকের বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের লিস নদীর বাঁধ। জলমগ্ন হয়ে পড়ল চান্দা কোম্পানির বেশ কিছু এলাকা। কৃষিজমি-সহ বসতবাড়ি জলমগ্ন। প্রসঙ্গত, জানা গিয়েছে, সোমবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে ডুয়ার্স-সহ পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায়। তারই জেরে ডুয়ার্সের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলিতে ক্রমশ বেড়েছে জলস্ফীতি। এর জেরে প্রবল জলের স্রোতে ক্ষতির মুখে জাতীয় সড়কের একটি কালভার্টও।