নিজস্ব প্রতিবেদন : জমজমাট ব্যবসা । ঝাঁ-চকচকে অফিস । অফিসে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা । রীতিমতো সাজিয়ে গুছিয়ে চলছিল প্রতারণার ব্যবসা । নিজেকে সিআইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে বর্ধমান থানার নান্দুরে ঘরভাড়া নিয়েছিল প্রতারক চক্রের পান্ডা রাজেন হাজরা। পুলিসে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার ব্যবসা চালাত সে এবং তার সঙ্গীরা । নান্দুরে অফিস খোলা হয়েছিল। চাকরি প্রার্থীদের অফিসে নিয়ে এসে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হত।  এমনকি ব্যারাকপুরে পুলিস ট্রেনিং ইনস্টিটিউটেও চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে যাওয়া হত। তবে, চাকরি প্রার্থীদের ইনস্টিটিউটের বাইরে থেকে ঘুরিয়ে আনা হত। কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা । প্রতারণা ধরা পড়ে গেল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কনস্টেবল ও হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার নাম করে রায়না থানার ভগবতীপুরের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য পোড়েলের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। তাঁকে একটি ইন্টারভিউ লেটারও দেওয়া হয়। সেটি জাল জানতে পেরে বাপ্পাদিত্য রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। রায়না থানার ওসি পুলক মণ্ডল তদন্তে নেমে রাজেন, সত্যজিৎ, নাজেম ও জানারুলকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের কাছ থেকে কনস্টেবল ও হোমগার্ডের কয়েকটি নিয়োগপত্র উদ্ধার হয়। এছাড়াও হোমগার্ডের চাকরির আবেদন ও পুলিসের স্ট্যাম্প বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। তদন্তে নেমে পুলিস আরও জেনেছে, বেকার ছেলেদের কাছ থেকে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ৫-৬ লক্ষ টাকা করে নেয় রাজেন হাজরা এবং তার দলবল। এ পর্যন্ত ১৩ জন প্রতারিতের হদিশ পেয়েছে পুলিস। তাদের কাছ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা ।


তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে এই চক্রের সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগণার কয়েকজন জড়িত । চক্রের জাল বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত বলে পুলিসের অনুমান। রাজেনকে সঙ্গে নিয়ে বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটে রহড়ার কল্যাণনগরে হানা দিয়ে চক্রের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতের নাম আকাশ কুমার সাউ। সে চাকরি প্রার্থীদের বারাকপুর ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে নিয়ে যেত বলে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে পুলিস । এরপর রাজেনকে সঙ্গে নিয়ে নান্দুরের ভাড়াবাড়িতে হানা দেয় পুলিস । সেখান থেকে পুলিসের কয়েকটি পোশাক উদ্ধার করা হয় । ঘর থেকে খাঁকি পোশাক ছাড়াও পুলিসের বেল্ট, টুপি, জুতো, রাজ্য পুলিসের লোগো, আই কার্ড ও লাল বাজারের নকল গেট পাস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস । পুলিস জানতে পেরেছে ট্রেনিং শেষে চাকরি প্রার্থীদের পোশাক দেওয়া হত।


৩ দিনের পুলিসি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শুক্রবার রাজেনকে ফের আদালতে পেশ করা হয়। তার সঙ্গেই পেশ করা হয় আকাশ, সত্যজিৎ বিট্টার, নাজেম মল্লিক, ও শেখ জানারুলকে। চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে এবং হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য রাজেনকে ফের ১১ দিন হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় পুলিস। একই সঙ্গে আকাশকেও ১১ দিন হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হয় পুলিসের তরফে। তাদের ৭ দিন পুলিসি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা । বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ১৪ জুলাই ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন বিচারক।


আরও পড়ুন, খুড়তুতো দেওরের সঙ্গে বৌদির পরকীয়া, ৪ মাসে আগে নিখোঁজ যুগলের খোঁজ মিলতেই হতভম্ব সবাই!