Ganga Water| Malda: গঙ্গার জল বাড়ছে ভূতনীতে, খেলতে গিয়ে তলিয়ে গেল সপ্তম শ্রেণির কিশোর
Ganga Water| Malda: ভূতনির কেশরপুর কালুটোন টোলায় ভাঙা বাঁধের অংশ দিয়ে সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করছে গঙ্গা নদীর জল। মানিকচকের গঙ্গা নদীর জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। প্রশাসনিক অবহেলা এবং সেচ দপ্তরের গাফিলতির কারণে ১৯৯৮ সালের মত বন্যা পরিস্থিতির মুখে এই এলাকা দাবি স্থানীয় ভুতনী বাসিন্দাদের
রণজয় সিংহ: জলস্তর বাড়ল গঙ্গার। গতকাল থেকেই জল বাড়তে শুরু করেছে যার ফলে মালদার মানিকচকের ভূতনীর অসংরক্ষিত এলাকায় জল ঢুকে প্লাবিত করেছে বেশ কিছু এলাকা। আজ আরো জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর জলের স্রোতে মালদার মানিকচক ভুতনীর রিং বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকা। এমন অবস্থায় রবিবার দুপুরে বাড়ির পাশে গঙ্গা নদীর জল পেয়ে বন্ধুদের সাথে জলকেলি করতে গিয়ে প্রাণ হারাল এক ১২ বছরের নাবালক এন্তাজুল আলী। সেই সময় হঠাৎ করেই জলের স্রোতে তলিয়ে যায় সে। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে দীর্ঘক্ষন ধরে তল্লাশির পর উদ্ধার হয় এন্তাজুলের মৃতদেহ । মৃত নাবালক সামসি আদর্শ মিশনের সপ্তম শ্রেণীতে ছাত্র। নাবালক ছেলে মৃত্যুর ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃতের পরিবার সহ প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুন- আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ব্ল্যাকলিস্টেড হয়ে যাবে এইসব সিম কার্ড, চালু হচ্ছে ট্রাইয়ের নতুন নিয়ম
ভূতনির কেশরপুর কালুটোন টোলায় ভাঙা বাঁধের অংশ দিয়ে সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করছে গঙ্গা নদীর জল। মানিকচকের গঙ্গা নদীর জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। প্রশাসনিক অবহেলা এবং সেচ দপ্তরের গাফিলতির কারণে ১৯৯৮ সালের মত বন্যা পরিস্থিতির মুখে এই এলাকা দাবি স্থানীয় ভুতনী বাসিন্দাদের। যদিও ইচ্ছাকৃতভাবে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপির। মানিকচকের উত্তর চন্ডিপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কেশরপুর কালুটোন টোলা এলাকার তিনটি জায়গা দীর্ঘ এক বছর ধরে বাঁধহীন অবস্থায় রয়েছে। বারংবার প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন এমনকি বিক্ষোভও দেখিয়েছেন বাসিন্দারা। তাদের দাবি ছিল ভাঙা বাঁধের অংশগুলি দ্রুত সংস্কার করার। তাদের আশঙ্কা ছিল গঙ্গা নদীর জল বাড়লেই বন্যা পরিস্থিতি হবে।কিন্তু তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি প্রশাসন।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শনিবার দুপুর থেকে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙা বাঁধের অংশে বালির বস্তার মাধ্যমে কাজ করেছিল সেচ দপ্তর। কিন্তু প্রতিনিয়ত বৃষ্টি এবং লাগাতার জলস্তর বাড়ার কারণে এদিন বালির বস্তা ভেঙে জল প্রবেশ করে। যার ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ভূতনিজুড়ে। ইতিমধ্যে গঙ্গা নদীর জলে বন্দী দশা কেশরপুর কালুটোন টোলা চামা ও পশ্চিম রতনপুর গ্রাম। রবিবার সকাল থেকেই ভাঙা বাঁধের জায়গা দেখতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় স্থানীয়দের। তবে দেখা যায়নি প্রশাসনিক কোন আধিকারিককে যাকে ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। প্রভাত কুমার মন্ডল বলেন ইচ্ছা করলেই এই পরিস্থিতি আটকাতে পারত বহু সময় ছিল। কিন্তু প্রশাসন এখানে কাজ করেনি।ভূতনিকে অবহেলা করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলেও এখনো দেখা নেই কোন আধিকারিকের। এদিন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ইচ্ছাকৃতভাবে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করার অভিযোগ তুলেছেন মালদহ দক্ষিণ জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌড় চন্দ্র মন্ডল। তিনি বলেন রাতের অন্ধকারে দুস্কৃতিরা বালির বস্তা সরিয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী করেছে।যাতে পরবর্তীতে ভাঙনের বড় কাজ বরাদ্দ হয় এবং তাতে দুর্নীতি করা যায়।আমরা দলমত নির্বিশেষে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই এলাকার ভাঙন রোধের জন্য আবেদন জানাবো। যদিও মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন ভাঙন রোধে প্রশাসন তৎপরতার সাথে কাজ করেছে।সারাদেশে জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি চলছে।এখানে রাজনীতি করার জায়গা নেই। যদিও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে ভূতনির জলমগ্ন পরিবার গুলিকে উচু জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে পৌঁছেছে এন.ডি.আর.এফের দল। এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)