নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রেম করে বিয়ের পর ৮ বছরের সুখের দাম্পত্য। কিন্তু সেই দাম্পত্যে হঠাত্ই ঘুণপোকা বাসা বাঁধে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন স্বামী। স্ত্রী প্রতিবাদ করতেই তাঁর উপর শুরু হয় অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ইতিমধ্যেই দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হয়ে পড়েন স্ত্রী। মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে ৮ মাস ধরে শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন গৃহবধূ। কিন্তু, এবার ওই গৃহবধূর সঙ্গে তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি যে আচরণ করল, তা অমানবিকতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেল। অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটে লাথি, ঘুষি মারার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০১০ সালে কোলাঘাটের খন্নাডিহি মনসাতলার বাসিন্দা প্রহ্লাদ কয়ালের সঙ্গে বিয়ে হয় পারমিতা কয়ালের। একই পাড়ার বাসিন্দা প্রহ্লাদের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল পারমিতার। পারমিতার বাড়ি যদিও সেই সম্পর্ককে মানেনি। কিন্তু, বাড়ির অমতেই প্রহ্লাদকে বিয়ে করেছিলেন পারমিতা। নিজের প্রিয় মানুষটিকে বিয়ে করে খুব খুশিও ছিলেন পারমিতা। শখে-আহ্লাদে ভরে উঠেছিল পারমিতার দাম্পত্য জীবন। বছর ঘুরতে ঘুরতেই পারমিতার কোল আলো করে আসে সন্তান। কন্যাসন্তানের জন্ম দেন পারমিতা। স্বামী, সন্তান নিয়ে সুখে দিন কাটতে থাকে পারমিতার। দেখতে দেখতে মেয়েরও ৭ বছর বয়স হয়ে যায়।


আরও পড়ুন, অজানা নম্বর থেকে আসা 'ব্যাঙ্ক ম্যানেজার'-এর ফোন রিসিভ করে মাথায় হাত পুরকর্মীর


কিন্তু সুখের সংসারে হঠাত্ই একদিন অসুখ বাসা বাঁধে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রহ্লাদ। স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারেন পারমিতা। প্রতিবাদ করেন স্বামীর এহেন সম্পর্কের। আর তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় পারমিতার দুঃসহ যন্ত্রণার সময়। একদিন যে মানুষটিকে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন, স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই মানুষটিকেই চোখের সামনে একটু একটু করে বদলে যেতে দেখেন। পারমিতার উপর অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে প্রহ্লাদ ও তাঁর বাড়ির লোকজন।


প্রসঙ্গত, বাড়ির অমতে পালিয়ে বিয়ে করায় সেভাবে কোনও আড়ম্বর হয়নি প্রহ্লাদ-পারমিতার বিয়েতে। পাশাপাশি, পারমিতার বাড়ি থেকে বিয়েতে কোনও উপহার, যৌতুকও দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, পণের দাবিতেই পারমিতার উপর অত্যাচার শুরু করে প্রহ্লাদ ও তাঁর পরিবার। পারমিতাকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু তারপরেও মুখ বুজে শ্বশুরবাড়িতে পড়েছিলেন পারমিতা। দিনে দিনে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। তবুও বাপের বাড়়িতে কোনও কথা-ই জানাননি পারমিতা। ইতিমধ্যে দ্বিতীয়বারের জন্য গর্ভবতী হয়ে পড়েন পারমিতা।  


আরও পড়ুন, বিয়ের পরও ফোনে যোগাযোগ প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকার, দেখা করতে ডেকে খুনের চেষ্টা যুবকের


অভিযোগ, কয়েকদিন ধরেই অন্তঃসত্ত্বা পারমিতার উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে। তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্য শুরু হয় মারধর। ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পারমিতা আর সহ্য করতে না পেরে, এবার শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে বাপেরবাড়ি আসার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতেও পারমিতার পিছু ছাড়েননি প্রহ্লাদ। অভিযোগ, পারমিতার পিছু ধাওয়া করে আসেন প্রহ্লাদ। তারপরই শুরু হয় পারমিতাকে রাস্তায় ফেলে মারধর। পারমিতার পেটে লাথি কষান, ঘুষিও মারেন তাঁর স্বামী। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পারমিতার মা। অভিযোগ, তাঁকেও মারধর করা হয়।


এদিকে মারের চোটে অসুস্থ হয়ে পড়েন পারমিতা। বর্তমানে পারমিতা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। এই ঘটনায় কোলাঘাট বিট হাউজ থানায় অভিযোগ জানাতে যান পারমিতার বাপের বাড়ির লোকজন। কিন্তু থানায় কোনও অভিযোগ না নিয়েই তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন পারমিতার বাপের বাড়ির লোকজন।